মিডিয়া মালিকদের খেলাপি ঋণের হিসাব নেয়া হবে

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিঙ্গেল ডিজিট সুদের ব্যাপারে কঠোর হবে সরকার

প্রকাশ | ১৫ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন -ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কোন মালিক কোন ব্যাংকের কত টাকা ঋণ নিয়ে কত টাকা শোধ দেননি বা খেলাপি হয়েছেন, সেটি বের করলে এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া লাগবে না। বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে খেলাপি ঋণের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, পত্রিকা বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মালিকেরা কত ঋণ নিয়েছেন, সেটির একটি হিসাব নেয়া হবে এবং তাদের টাকাটা শোধ দিয়ে তাদের পত্রিকায় লেখেন, এটি তার অনুরোধ থাকবে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকায় শুক্রবার বিকাল ৩টায় ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতে তিনি বাজেটের বিভিন্ন দিক এবং সরকারের পরিকল্পনার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। পরে বাজেট নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'যারা এখানে পত্রিকায় কাজ করেন, তাদের একটি কথা জিজ্ঞেস করব, আপনারা কি একটি খবর নেবেন যে আপনাদের পত্রিকার মালিকেরা কে কোন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন এবং শোধ দিয়েছেন কিনা? আপনারা দয়া করে সব ব্যাংক থেকে এই তথ্যটি বের করেন, যত মিডিয়া এখানে আছেন, যত পত্রিকা...প্রত্যেকেই বলবেন (মালিকদের) যে এটা আমি অনুরোধ করেছি।' তিনি বলেন, 'যেহেতু আমাদের সুদের হার অনেক বেশি। যেহেতু চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ হয়। আরেকটি বিষয় রয়ে গেছে, যখন হিসাব দেয়া হয় তখন চক্রবৃদ্ধি হারে সেটি ধরে হিসাব দেয়া হয়। যার ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বড় দেখায়।' বাজেট নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে এক সাংবাদিক দৃষ্টি আকর্ষণ করলে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমাদের দেশে কিছু লোক থাকে, যাদের একটি মানসিক অসুস্থতা থাকে, তাদের কিছুই ভালো লাগে না। আপনি যত ভালো কাজই করেন, তারা কোনো কিছু ভালো খুঁজে পায় না।' তিনি আরও বলেন, 'যখন দেশে একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি থাকে, যখন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়, সাধারণ মানুষের উন্নতি হয়, তখন তারা কোনো কিছুই ভালো দেখে না। সবকিছুতেই কিন্তু খোঁজে। তারপরও তাদের একটা কিছু বলতে হবে। তো সেটা ভালো। এত সমালোচনা করেও আবার বলবে, আমরা কথা বলতে পারি না। এ রোগটাও আছে। এটা অনেকটা অসুস্থতার মতো।' বাজেটের সমালোচনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমার কথা হচ্ছে, আমার সাধারণ জনগণ খুশি কিনা। সাধারণ মানুষ খুশি কিনা। সাধারণ মানুষের ভালো করতে পারছি কিনা। এটা হচ্ছে বড় কথা। সাধারণ মানুষ এই বাজেটে খুশি কিনা, বাজেটে তাদের উপকার হচ্ছে কিনা সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'এখন বাইরে গেলে আগে যারা মনে করত আমরা ভিক্ষুকের জাত হিসেবে যাচ্ছি, এখন আর কেউ তা মনে করে না। এটাই হচ্ছে আমাদের সব থেকে বড় অর্জন। তিনি বলেন, যারা সমালোচনা করার তারা করে যাক, ভালো কথা বললে আমরা গ্রহণ করব, মন্দ কথা বললে আমরা ধর্তব্যে নেব না। পরিষ্কার কথা।' ব্যাংকের ঋণের সুদের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, 'ব্যাংকের যে সমস্যাটি, আপনারা জানেন যে আমরা সব সময় চেয়েছি, চেষ্টা করেছি যেন সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে। সিঙ্গেল ডিজিটে রাখার জন্য আমরা কিছু সুযোগ করে দিয়েছি। কিন্তু অনেক বেসরকারি ব্যাংক সেটা মানেনি। এবার বাজেটে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাদের এই নিয়মটা মেনে চলতে হবে যেন ঋণটা সিঙ্গেল ডিজিটে হয়। তাহলে বিনিয়োগ বাড়বে। কারণ এত বেশি চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বাড়তে থাকলে মানুষ ব্যবসা করতে পারে না। সেদিকটা আমরা বিশেষভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা অনেক আইন সংশোধন করব। অনেকগুলো আইন সংশোধন করতে হবে, সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। আমরা চাপে নেই। এটা নিয়ে আমরা মিটিং করি। সরকারি ব্যাংক নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।' কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্যের বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ধানের গুদাম নির্মাণ হচ্ছে। ধান ক্রয় করার লক্ষ্য আমরা নিয়েছি। প্রায় চার লাখ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করার সিদ্ধান্ত দিয়েছি। কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হয়। কৃষকদের নিজেদের অল্প অর্থই ব্যয় হয়। বলতে গেলে সরকারই সবচেয়ে বেশি অর্থ দিয়ে থাকে। কৃষকের সব রকমের সুযোগ-সুবিধা আমরা দিয়ে থাকি। আর করেছি বলেই এত ধান উৎপাদন হয়েছে, না হলে এত ধান উৎপাদন হতো না। অতীতেও উৎপাদন হয়নি, এখনো হতো না। কৃষকদের যেটা ভালোমন্দ, সেটা দেখা আমাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ। বেশি ধান উৎপাদন করতে পারলে কৃষক বেশি ধান বেচতে পারবে, সরকার তো ধান ক্রয় করছেই।' তিন কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, 'কর্মসংস্থান তৈরির কথা আমরা বলেছি, চাকরি দেয়ার কথা বলিনি। ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রেখেছি, শিক্ষার কথা বলেছি, প্রযুক্তি শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা। আমরা চাই যে প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষিত হয়ে নিজের কাজ নিজে করা শুরু করুক। মূলত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আছে, আর আছে বলেই ধান কাটার লোক পাওয়া যায় না। ধান কাটার জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না কেন? কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে বলেই ধান কাটার লোকের অভাব হচ্ছে। আমরা কর্মসংস্থানের কথা বললেই অনেকে চাকরির কথা বলেন। ১৬ কোটি মানুষকে কি চাকরি দেয়া যায়? কোনো দেশ কি দেয়? মানুষ যেন কাজ করে খেতে পারে, সেই সুযোগটি তৈরি করা।' কালোটাকা সাদা করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'যেখানেই অর্থপাচার হচ্ছে, সেটা ধরা হচ্ছে এবং ধরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মাঝে মাঝে যেটা হয়, কিছু অপ্রদর্শিত টাকা থাকে, হয়তো কোনো কারণে টাকা হাতে এসে যায় যেটা কাজে লাগাতে পারে না। তখন সেই টাকাটা নানাভাবে পাচার করতে চায় বা অন্যভাবে ব্যবহার হয়, সেটি যেন করতে না পারে সেটি বন্ধ করার জন্য, এটি বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। শুধু আমরা না, এর আগেও সব সরকারই দিয়েছে। আমরাও সেই সুযোগ দিয়েছি। টাকাগুলো যেন কাজে লাগে, সে জন্য আমরা সুযোগ দিচ্ছি।' সোনালি যুদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তোলার যুদ্ধকে সোনালি যুদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্য যে যুদ্ধ, সেটাই সোনালি যুদ্ধ।' প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, 'দেশের কল্যাণ ও মঙ্গলের জন্য যে যুদ্ধ, সেটিই সোনালি যুদ্ধ। এই যুদ্ধ কোনো অকল্যাণের যুদ্ধ নয়।' অনলাইন নিউজপোর্টাল নিবন্ধনের তাগিদ যত্রতত্র অনলাইন নিউজপোর্টাল গজিয়ে উঠছে উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিউজপোর্টালগুলো নিবন্ধনের ওপর তাগিদ দিয়েছেন। শুক্রবার বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ তাগিদ দেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অসুস্থ থাকায় এবার প্রথমবারের মতো কোনো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন করছেন শেখ হাসিনা। এর আগে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রীর হয়ে বাজেটের বক্তৃতার একাংশ পড়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। একটি অনলাইন নিউজপোর্টালের এক সাংবাদিক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীকে লিখিত প্রশ্ন করলে সরকারপ্রধান জানতে চান, এই নিউজপোর্টাল নিবন্ধিত কি না। এ সময় তিনি বলেন, রেজিস্ট্রেশন ছাড়া অনলাইন পত্রিকা চলতে পারে না। যত্রতত্র গজিয়ে উঠছে। এগুলো রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। আগে রেজিস্ট্রেশন করেন, পরে উত্তর দেবো। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে বুলেট ট্রেনের সমীক্ষা ঢাকা-কক্সবাজার রুটে দ্রম্নতগামী বুলেট ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি না, এ বিষয়ে একটা সমীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাজেটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকার রেলওয়েকে একটি সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব যোগাযোগমাধ্যম হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এ খাতের উন্নয়নকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে। রেলওয়ের সার্বিক উন্নয়নে সরকার ৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬-৪৫ পর্যন্ত ৩০ বছরব্যাপী মহাপরিকল্পনা নিয়েছে। এই সময়ে ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। 'প্রস্তাবিত বাজেটে ১১২০টি নতুন যাত্রীবাহী রেলকোচ এবং ১১১০ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল রেল ট্র্যাক নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ৫২ কিলোমিটার নতুন রেল ট্র্যাক নির্মাণের পাশাপাশি ১০০টি রেল ইঞ্জিন কেনা হবে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটে দ্রম্নতগামী বুলেট ট্রেন পরিচালনা করা যায় কি না, এ বিষয়ে একটা সমীক্ষা করা হবে।' প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রেলপথে ৩টি মেজর ব্রিজ নির্মাণ, তিনটি রেলওয়ে ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হবে। রেলের সিগন্যালিং ব্যবস্থার আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ই-টিকিটিং চালুর ফলে যাত্রীদের রেলভ্রমণ যেমন সহজ হয়েছে, তেমনি মোবাইল অ্যাপস প্রবর্তনের ফলে বর্তমানে অতি সহজেই যাত্রীরা রেলের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারেন।' আমার গ্রাম আমার শহর বাস্তবায়নের উদ্যোগ আওয়ামী লীগের বিগত নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী 'আমার গ্রাম আমার শহর' কর্মসূচি বাস্তবায়নে পলিস্ন এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি জানিয়েছেন, এ লক্ষ্যে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৬৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রাম যেন উন্নত হয়, সেখানকার মানুষ যেন শহরের মানুষের সুবিধা পায়, সে জন্য আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার 'আমার গ্রাম আমার শহর' কর্মসূচির আলোকে পলিস্ন এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে দেশজুড়ে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার নতুন সড়ক এবং ৩০ হাজার ৫০০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। সে জন্য এ খাতে আগামী অর্থবছরে ৬৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশের বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারের লক্ষ্যমাত্রার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। কৃষিখাতে সরকারের ভর্তুকি-প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও প্রণোদনা থাকবে। কৃষি ভর্র্তুকি, ঋণ ও কৃষিপণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রণোদনাও থাকবে। তিনি জানান, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে এবারের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। 'শব্দ বিভ্রাটে' বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে 'শব্দ বিভ্রাটে' বিরক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংবাদ সম্মেলন চলাকালে এই শব্দ বিভ্রাটের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্ন শুনতে পাচ্ছিলেন না। বারবার ইকো (শব্দের পুনরাবৃত্তি) হচ্ছিল। একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করতে গেলে প্রধানমন্ত্রী তাকে উদ্দেশ করে বলেন, 'আপনি একটু সামনের দিকে এসে বললে ভালো হয়। ইকো হচ্ছে, ভালো শোনা যাচ্ছে না।' ওই সাংবাদিকের প্রশ্ন শেষ হওয়ার পর তিনি বলেন, 'আমি খুব দুঃখিত, আমি একটা শব্দও বুঝতে পারিনি। এখানে একটু ইকো হচ্ছে। মনে হয় সাউন্ডটা একটু কমানো উচিত।' মঞ্চ থেকে ওই সাংবাদিককে সামনে এসে প্রশ্ন করতে বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এভাবে শোনা যাবে না। আমি জানি না, কীভাবে ব্যবস্থা করা যাবে। ভীষণ ইকো হচ্ছে। মঞ্চে কোনো কথা বোঝাই যাচ্ছে না।' তিনি আরও বলেন, 'মঞ্চ থেকে কোনো কথাই শোনা যাচ্ছে না। সাউন্ডটা কারা কন্ট্রোল করে? একটু কমান। আমি জানি না কী ধরনের সাউন্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে।' এ সময় ওখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাউন্ড কন্ট্রোলারদের ডাকতে গেলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ওদের আসা লাগবে না, সাউন্ডটা একটু কমালেই হবে।'