মাগুরায় শিশু ধর্ষণ

১৮০ দিনে বিচার শেষ করার নির্দেশ হাইকোর্টের

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

যাযদি ডেস্ক
মাগুরার বোনের বাড়িতে শিশুকে ধর্ষণের ঘটনার বিচার ১৮০ দিনের মধ্যে শেষ করতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেন। শিশুটিকে দেখভালের জন্য সমাজসেবা অফিসার নিয়োগসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহসিব হোসাইন; সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট হামিদুল মিসবাহ ও অ্যাডভোকেট মিথুন রায় চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান। সৈয়দ মাহসিব হোসাইন বলেন, ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে নিয়ে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন তিনি। পরে আদালতের নির্দেশে হামিদুল মিসবাহ ও তিনি এ বিষয়ে রিট মামলা করেন। এ ঘটনায় গত শনিবার শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন- শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব হোসেন (১৮) ও বোনের শ্বশুর হিটু মিয়া (৪২), সজিব শেখের ভাই রাতুল শেখ (১৭) এবং তাদের মা জাবেদা বেগম (৪০)। তাদের চারজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার নথিতে বলা হয়েছে, সজীবের সহায়তায় তার বাবা হিটু মিয়া শিশুটিকে 'ধর্ষণ' করেন। বিষয়টি রাতুল ও জাবেদাও জানতেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটিকে হত্যার চেষ্টা চালান তারা। ছবি-ভিডিও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে নির্দেশ এদিকে, মাগুরার ভুক্তভোগী শিশুটির ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম ও অনলাইন পস্ন্যাটফর্ম থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিটিআরসি, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৪ ধারায় সংবাদমাধ্যমে নির্যাতনের শিকার নারী ও শিশুর পরিচয় প্রকাশের ব্যাপারে বাধানিষেধ সম্পর্কে বলা আছে। ১৪ ধারা ভঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তিন কার্যদিবসের মধ্যে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ধারাটির বিষয়ে দেশজুড়ে সবাইকে জানাতে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ভুক্তভোগী শিশুটি ও তার ১৪ বছর বয়সি বড় বোনের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ জন্য ঢাকা ও মাগুরা জেলা সমাজকল্যাণ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিতেও বলা হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে বিবাদীদের ১৭ মার্চ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হামিদুল মিজবাহ ও সৈয়দ মাহসিব হোসেন রিটটি করেন। তারা রিটের পক্ষে শুনানি করেন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান শুনানিতে অংশ নেন। গত বুধবার দিবাগত রাতে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে মামলায় উলেস্নখ করা হয়। মায়ের করা মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য গতকাল শনিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানো হয়।