পিকআপচাপায় শ্রমিকের মৃতু্য

সাত ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়েন বিক্ষুব্ধরা ভোগান্তি

প্রকাশ | ১১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ী ইউটার্নে সোমবার এক নারী পোশাক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় সহকর্মীরা বিমানবন্দর সড়ক অবরোধ করেন। পরে ৭ ঘণ্টা পর সড়ক ছাড়েন তারা -স্টার মেইল
বনানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত হওয়ার প্রতিবাদে পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা সোমবার সকাল ৭টার দিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। অবরোধের কারণে বনানীসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কেও। যানজটে আটকা পড়ে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন। এদিকে, সড়ক অবরোধের প্রায় ৭ ঘণ্টা পর শ্রমিকেরা সড়ক ছাড়েন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। বেলা দুইটার পর সড়ক থেকে শ্রমিকেরা সরে যাওয়ার পর যান চলাচল শুরু হয়। বনানী থানার পুলিশ বলছে, সোমবার সকাল ৬টা ৪১ মিনিটের দিকে বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় কলাবাহী একটি পিকআপের চাপায় মিনা আক্তার নামের এক নারী পোশাকশ্রমিক নিহত হন। এর প্রতিবাদে বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা সড়কে নেমে আসেন। শ্রমিকেরা বনানীর কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ থেকে মহাখালীর আমতলী পর্যন্ত সড়কে অবস্থান নেন। এতে দুই পাশের সড়কে শত শত গাড়ি আটকে পড়ে এবং তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সরোয়ার বলেন, 'পিকআপটি ইতোমধ্যে পুলিশ জব্দ করেছে। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তেজগাঁও বাসস্ট্যান্ড থেকে গাড়িটিকে জব্দ করা হয়। তবে চালক পালিয়ে গেছেন। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।' সড়ক অবরোধ চলাকালে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই জায়গায় যানবাহন আটকে আছে। এ কারণে যাত্রীরা গন্তব্যে যেতে বিপাকে পড়েন। তাদের অনেকে উপায় না দেখে হেঁটেই যাত্রা শুরু করেন। হেঁটে গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীদের একজন আলমগীর হোসেন। তিনি গ্রিন রোড এলাকায় অবস্থিত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। আলমগীর জানান, তিনি বিমানবন্দর থেকে দু-আড়াই ঘণ্টা হেঁটে মহাখালী পর্যন্ত এসেছেন। কুমিলস্নার বাসিন্দা কামরুল হাসান সৌদি আরব যাবেন। তার ফ্লাইট বেলা ২টা ২৫ মিনিটে। যানবাহন না পেয়ে তিনি হেঁটে বিমানবন্দরে যাচ্ছিলেন। কামরুল জানান, কুমিলস্না থেকে গাড়িতে তেজগাঁও পর্যন্ত এসেছেন। রাস্তা বন্ধ শুনে হেঁটে রওনা দিয়েছেন তিনি। এনা পরিবহনের বাসচালক হাফিজুর রহমান জানান, সিলেট থেকে সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে বনানীতে পৌঁছান তিনি। এরপর বাসটি আটকে দেন শ্রমিকেরা। তখন থেকে একই জায়গায় আটকে ছিলেন তিনি। এ কারণে বাস থেকে সব যাত্রী নেমে গেছেন। স্কুলবাসের চালক শহিদুল ইসলাম দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জানান, গুলশান থেকে তিনি উত্তরা যাচ্ছিলেন। সকাল ৭টা ২২ মিনিটের দিকে গাড়িসহ আটকে পড়েন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. তারেক মাহমুদ বলেন, 'শ্রমিকেরা তিনটি দাবি জানিয়েছিলেন। এর মধ্যে আছে পিকআপ ও চালককে আটক, ক্ষতিপূরণ প্রদান ও নিরাপদে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করা। পিকআপটি ইতিমধ্যে জব্দ হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে। আর ক্ষতিপূরণ ও নিরাপদে রাস্তা পারাপার নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা আলোচনা করবেন। দাবি পূরণের আশ্বাসে শ্রমিকেরা সড়ক ছেড়ে দেন; তখন যান চলাচল শুরু হয়।'