সিদ্ধান্তহীন বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক

প্রকাশ | ১৬ জুন ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ১৬ জুন ২০১৯, ০০:১৩

যাযাদি রিপোর্ট
দেড় মাস পর লন্ডনে অবস্থানরত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্কাইপে রেখে ক্ষুব্ধ স্থায়ী কমিটির নেতারা বৈঠক করেছেন। শনিবার গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই বৈঠক হয়। বিকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে দুই ঘণ্টা এই বৈঠক চলার পর কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই তা মুলতবি করা হয়। সংসদে যোগ না দেয়ার বিষয়ে দল ও জোটের সিদ্ধান্ত থাকার পরও একক সিদ্ধান্তে শপথ নেয়ার যুক্তিসঙ্গত ছিল বলে বৈঠকে মত দিয়েছেন তারেক রহমান। বৈঠকে জাতীয় সংসদে যোগদানের সিদ্ধান্ত ছাড়াও সাংগঠনিক কার্যক্রম, ছাত্রদলের অসন্তোষসহ অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে কোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আগামী শনিবার পর্যন্ত বৈঠক মুলতবি রাখা হয়েছে। বৈঠকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন নেতারা। সেখানে দলীয় প্রধানের মামলা পরিচালনায় কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোবেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের বিজয়ীরা গত ২৯ এপ্রিল তারেক রহমানের সিদ্ধান্তে শপথ নেন। কিন্তু দলের স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত ছিল শপথ না নেয়ার। এ ঘটনায় প্রকাশ্যে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থায়ী কমিটির কয়েক নেতা। তাদের ক্ষুব্ধতা এতটাই ছিল যে, ৪ মে বৈঠক ডাকলেও স্থায়ী কমিটির কয়েক নেতা তা বর্জন করার ঘোষণা দিলে কয়েক ঘণ্টার মাথায় তা বাতিল করা হয়। এরপর স্থায়ী কমিটির আর কোনো বৈঠক হয়নি। সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়েছিল ২৮ এপ্রিল রাতে। ওই বৈঠকেই তারেক রহমান স্থায়ী কমিটির নেতাদের কাছ থেকে শপথ নেয়ার বিষয়ে একক সিদ্ধান্ত চেয়ে নিয়েছিলেন। তবে, নির্বাচিত এমপিরা শপথ নিলেও দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল শপথ নেননি। এ নিয়ে দলের মধ্যে বিভ্রান্তিও দেখা দেয়। গতকাল স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে দুই নেতার সঙ্গে কথা হলেও তারা স্পষ্ট করে কোনো কথা বলেননি। উভয় নেতাই বলেন, শপথ নেয়ার যুক্তি সঙ্গত কারণ ছিল বলে মত দিয়েছেন তারেক রহমান। এ ছাড়া সার্বিক বিষয়ে নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এই মুহূর্তে কী করা যায়- বিশেষ করে, কারাবন্দি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলা ও জামিন এবং তার মুক্তির দাবিতে কী ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায়, দল পুনর্গঠন, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কর্মকান্ড নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত ৩ জুন ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠনে এসএসসি ২০০০ সাল থেকে তার নিচের দিকের শিক্ষার্থীদের দিয়ে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত দেয়। এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে বয়সসীমা তুলে দেয়ার দাবিতে সম্প্রতি দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অসুস্থ রুহুল কবির রিজভীকে ভেতরে রেখে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা দিয়ে বিদু্যৎ ও গ্যাস লাইন বন্ধ করে দিনভর বিক্ষোভ করে। এ ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ হন তারেক রহমান। স্থায়ী কমিটির নেতাদের তিনি বলে দিয়েছেন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা ছাত্রদল নিয়ে কাজ করছেন। তারাই সমাধান করবেন। ছাত্রদলের আজ ফের অবস্থান কর্মসূচি : বয়সসীমা না রেখে ধারাবাহিক কমিটির দাবিতে আজ রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ফের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদলের সদ্য সাবেক নেতারা। বেলা ১১টা থেকে তারা শান্তিপূর্ণভাবে এই কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ইখতিয়ার রহমান কবির বলেন, সার্চ কমিটিসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা তাদের ওপর আস্থা রাখার কথা বলেছিলেন। যে কারণে কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু শনিবার পর্যন্ত এ বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানানো হয়নি। তাই রোববার নয়াপল্টন কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।