পায়রা তাপবিদু্যৎ কেন্দ্রে ভাঙচুর ও হত্যার অভিযোগে মামলা

প্রকাশ | ২২ জুন ২০১৯, ০০:০০

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন পায়রা তাপবিদু্যৎ কেন্দ্রে দেশি ও বিদেশি শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও হত্যার অভিযোগে কলাপাড়া থানায় বৃহস্পতিবার রাতে পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পায়রা তাপবিদু্যৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিচালক ওয়াং লিবিং বাদী হয়ে অজ্ঞাত এক হাজার জনকে আসামী করে এ দুইটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ১৬ আসামিকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। ইতোমধ্যে তাপবিদু্যৎ কেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য আট শতাধিক পুলিশসহ বিজিবি,র্ যাব ও আর্মড পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কলাপাড়া থানার উপপরিদর্শক মো. শাখাওয়াত জানান, পুলিশ কলাপাড়া থেকে সুজন তালুকদার, মামুন তালুকদার, সজিব, জলিল ফকিরকে এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে নাসির, সুজন, আবদুল লতিফ, আতিকুর রহমান, ইমাম হাসান, মেহেদী হাসান, রাসেল আলী, শামিম মিয়া, মামুন, আইয়ুব, ফারুক ও বেলস্নালকে আটক করেছে। তবে চীনা শ্রমিক জাং ইয়ান ফেং হত্যার তদন্ত শুরু হয়েছে। আটককৃতদের বাড়ি দেশের বিভিন্ন জেলায় বলে উলেস্নখ করেন তিনি। \হকলাপাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম জানান, পুলিশ ইতোমধ্যে পায়রা তাপবিদু্যৎ কেন্দ্রসংলগ্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে লুট হওয়া ল্যাপটপ, সিপিইউ, মনিটর ও লাগেজসহ চার জন এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া নিহত বাংলাদেশি শ্রমিক সাবিন্দ্র দাসের মৃহদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সাবিন্দ্রের দুর্ঘটনাজনিত মৃতু্যর ঘটনায় ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি, পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি এবং পায়রা তাপবিদু্যৎ কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, যারা আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। উলেস্নখ্য, মঙ্গলবার বিকালে বিদু্যৎকেন্দ্রের ব্রয়লার থেকে পড়ে নিহত বাঙালি শ্রমিক সাবিন্দ্র দাসের (৩৩) লাশ গুম করার গুজবে মঙ্গলবার বিকাল থেকে মধ্যরাত অবধি বাঙালি ও চায়না শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে চায়না শ্রমিক জাং ইয়ান ফেং (২৬) নিহত হয়। এ সময় চায়না শ্রমিক, পুলিশসহ অন্তত ৩০-৩৫ জন আহত হয়েছে। বিদু্যৎকেন্দ্রের সহিংসতার ঘটনায় বিসিপিসিএলের কর্মকর্তা শাহমনি জিকো জড়িত থাকার অভিযোগ করেন বাঙালি শ্রমিকরা। এরপর মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে পুলিশ,র্ যাব ও আর্মড পুলিশ যৌথভাবে বিদু্যৎকেন্দ্রের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। বুধবার সকালে বিদু্যৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সচিব, এমডি, বরিশাল ডিআইজিসহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পায়রা বিদু্যৎকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনসহ বিদু্যৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক শেষে বিদু্যৎকেন্দ্রের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন তারা।