বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে: জরিপ

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর মাত্র অর্ধেক নিজেদের দেশকে গণতান্ত্রিক বলে মনে করেন এবং পশ্চিম ইউরোপের বাসিন্দারা ব্যাংক ও সোশ্যাল মিডিয়াকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি মনে করেন। ৫৭টি দেশের দেড় লাখেরও বেশি মানুষের ওপর জার্মান জরিপকারী প্রতিষ্ঠান ডালিয়া রিসার্চ অ্যান্ড অ্যালায়েন্স অব ডেমোক্রেসিস ফাউন্ডেশনের ওই জরিপের ফল মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এ জরিপে দেখা গেছে, গণতান্ত্রিক হিসেবে খ্যাত দেশগুলোর ৩৮ শতাংশ নাগরিকই তাদের শাসনব্যবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট। 'এ মুহূর্তে গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হচ্ছে জনগণ আর এ পদ্ধতিকে গণতান্ত্রিক হিসেবে দেখছে না,' এক বিবৃতিতে বলেছেন ডালিয়া রিসার্চের প্রধান নির্বাহী নিকো ইয়াসপার্স। নিজেদের দেশ গণতান্ত্রিক কী না, এ প্রশ্নে মার্কিন নাগরিকরা দ্বিধাবিভক্ত বলেও জরিপে উঠে এসেছে। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হওয়া দেশটির ৪৬ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রকে 'গণতান্ত্রিক' বলে মনে করেন; অন্যদিকে ৪০ শতাংশ বলছেন, তাদের দেশে পর্যাপ্ত গণতন্ত্র নেই। জরিপে অংশ নেওয়া অর্ধেক মার্কিনি বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্রের বিকাশে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখার কথা জানিয়েছেন; উল্টোদিকে কানাডাসহ ইউরোপের অন্যান্য দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন। ২৮ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সংখ্যাগরিষ্ঠ ইউরোপীয়দের জন্য কাজ করছে না, জরিপে মহাদেশটির ৫২ শতাংশ মানুষের এমন ভাবনার কথাও উঠে এসেছে। ইইউর সমালোচনা সবচেয়ে বেশি এসেছে ইতালি, ফ্রান্স ও গ্রিস থেকে। জোটের শীর্ষ কর্মকর্তা বাছাই করতে ইইউর ২৮টি দেশের নেতাদের একত্রিত হওয়ার কয়েকদিন আগেই ডালিয়া রিসার্চের এ জরিপ প্রকাশিত হলো। কর্মকর্তা বাছাইয়ের এ প্রক্রিয়াকে অনেকেই 'যথেষ্ট গণতান্ত্রিক নয়' বলেও মনে করেন, বলছে রয়টার্স। জরিপে অংশ নেয়া ইতালির ৬৯ শতাংশ নাগরিকের মতে, ইইউয়ের সিদ্ধান্ত মহাদেশের জনগণের স্বার্থকে প্রতিনিধিত্ব করে না। গত বছরের নির্বাচনের জয়ী ইইউবিরোধী দলগুলোই এখন দেশটির ক্ষমতায়। গণতন্ত্রের ওপর ফেসবুক, ?টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর নেতিবাচক প্রভাব আছে- বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রিয়ার ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ এমন ধারণা করছে বলেও জরিপে উঠে এসেছে। ডালিয়া রিসার্চের এ জরিপে বেশিরভাগ ইউরোপীয় নাগরিক তাদের দেশের গণতন্ত্রের ওপর ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতিবাচক প্রভাব আছে বলে মনে করার কথা জানিয়েছেন। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সবচেয়ে বেশি সন্দেহ দেখা গেছে গ্রিসের নাগরিকদের। এক দশক আগের ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট দেশটির অসংখ্য মানুষকে দরিদ্র করেছিল।