টেকনাফে মানব পাচারের ৩ আসামি বন্দুকযুদ্ধে নিহত

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
কক্সবাজার প্রতিনিধি, টেকনাফ সংবাদদাতা কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মানব পাচারের ঘটনায় করা মামলার পলাতক তিনজন আসামি নিহত হয়েছেন। সোমবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে টেকনাফ উপজেলার মহেশখালীপাড়া নৌকাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাস এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহত তিনজন হলেন সাবরাং নয়াপাড়ার গোলাপাড়ার আবদুল শুক্কুরের ছেলে কুরবান আলী (৩০), টেকনাফ পৌরসভার কে কে পাড়ার আলী হোসেনের ছেলে আবদুল কাদের (২৫) ও একই এলাকার সুলতান আহমদের ছেলে আবদুর রহমান (৩০)। তাঁরা তিনজনই মানব পাচারের ঘটনায় করা মামলার পলাতক আসামি। পুলিশের তথ্যমতে, ঘটনাস্থল থেকে তিনটি দেশীয় অস্ত্র (এলজি), শটগানের ১৫টি তাজা গুলি ও গুলির ২০টি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কাজী সায়েফ, কনস্টেবল মং চিন সু ও কনস্টেবল মো. শুক্কুর আহত হয়েছেন। ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, পলাতক আসামি গ্রেপ্তার করতে রাতে পুলিশের একটি দল উপজেলার টেকনাফ মহেশখালীপাড়ার নৌকাঘাট এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে পুলিশকে লক্ষ্য করে মানব পাচারকারী দলের সদস্যরা গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়লে কয়েকজন পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ তিন পলাতক আসামিকে উদ্ধার করা হয়। আসামিদের উদ্ধার করে দ্রম্নত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনজন মারা যান। লাশ তিনটি ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। নিহত তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মানব পাচার ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা রয়েছে। টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শোভন দাস বলেন, মঙ্গলবার ভোররাত চারটার দিকে পুলিশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজন ও আহত তিন পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে আনে। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। গুলিবিদ্ধ তিনজনের শরীরে তিনটি করে গুলির চিহ্ন দেখা গেছে। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওসি প্রদীপ কুমার দাস বলেন, নিহত ব্যক্তিরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোক পাচার মামলার পলাতক আসামি। তারা অনেক দিন ধরে বিভিন্ন রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গা লোকজন সুকৌশলে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করে আসছিলেন। গত বছরের ৪ মে থেকে দেশব্যাপী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হয়। এ নিয়ের্ যাব-পুলিশ-বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ, এলাকায় মাদকের প্রভাব বিস্তারসহ বিভিন্ন ধরনের ঘটনায় কক্সবাজার জেলায় ১২১ জন নিহত হয়েছেন। গত ১৪ মে থেকে এখন পর্যন্ত টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে মানব পাচারকারীদের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন রোহিঙ্গা নাগরিক ও চারজন বাংলাদেশি।