ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি ঢাকা ও না'গঞ্জে নিহত ৩

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ছেলেধরা আতঙ্কে গণপিটুনিতে নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। শনিবারও ঢাকায় দুই ও নারায়ণগঞ্জে একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে গত ৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে ও ১৮ জুলাই নেত্রকোনায় দুজনের মৃতু্য হয়। এর মধ্যে নেত্রকোনায় গণপিটুনির শিকার ওই ব্যক্তির ব্যাগ থেকে একটি শিশুর মাথাও উদ্ধার করা হয় বলে দাবি পুলিশ ও এলাকাবাসীর। এছাড়া ১৭ জুলাই চট্টগ্রামের হাটহাজারিতে গণপিটুনির শিকার হন তিনজন। শনিবার রাজধানী ঢাকার উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে অজ্ঞাত পরিচয়ের (৪০) এক নারী নিহত হয়েছেন। সকাল পৌনে নয়টার দিকে কাঁচাবাজার সড়কে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উত্তর বাড্ডায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি মাদ্রাসা পাশাপাশি অবস্থিত। সকাল সাড়ে আটটার দিকে তিনজন বোরকা পরিহিত নারী ওই এলাকায় যান। তারা স্কুলের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। বাধার মুখে দুজন পালিয়ে গেলেও আরেকজন গণপিটুনির শিকার হন। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এছাড়া কেরানীগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবককে গণপিটুনি দিয়েছে এলাকাবাসী। এতে এতজন নিহত হয়েছেন, অন্যজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স মালঞ্চ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন হযরতপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা জানান, সকালে ওই দুই যুবক গ্রামে ঘোরাঘুরি করতে থাকে এবং শিশুদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। এতে তাদের ওপর সন্দেহ হলে এলাকাবাসী ধরে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স মালঞ্চ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এক যুবককে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে অজ্ঞাত (১৮) এক যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার সকাল নয়টায় মিজিমিজি পূর্বপাড়া পাগলাবাড়ি রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের পাগলাবাড়ী রোড এলাকায় সকাল নয়টার দিকে ৫/৬ বছরের এক মেয়ে শিশুর হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছিল ওই যুবক। এ সময় শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে স্থানীয় দুই যুবকের সন্দেহ হয়। তারা ওই যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে যুবকটি কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেয়া হয়। খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ হাসপাতাল নিয়ে যায়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতুর জন্য শিশুর মাথা লাগবে বলে একটা গুজব ছড়িয়ে পড়েছে পুরো দেশে। এরপর থেকেই আসতে শুরু করেছে গণপিটুনির খবর। অনেক জায়গা থেকে ইত্তেফাক কার্যালয়ে ফোন করেও এই গুজবের সত্যতা জানার চেষ্টা চলছে।