এক গুজবেই স্বপ্ন শেষ তাসলিমার

প্রকাশ | ২২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
তাসলিমা বেগম
দুই সন্তান মাহিন ও তুবাকে ঘিরেই যত স্বপ্ন ছিল তাসলিমা বেগমের (৩৫)। ছেলে-মেয়েকে ভালো স্কুলে পড়াবেন, সন্তানেরা বড় হবে- এমন অনেক স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু একটি গুজবেই শেষ হয়ে গেল তাসলিমার সব স্বপ্ন। ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির শিকার হয়ে প্রাণটাই দিতে হয়েছে তাকে। রাজধানীর উত্তর-পূর্ব বাড্ডা প্রাথমিক স্কুলে শনিবার মেয়েকে ভর্তি করার জন্য খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন তাসলিমা। কথাবার্তা সন্দেহজনক- কেবল এই অজুহাতে স্কুলের বাইরে এনে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লক্ষ্ণীপুরের রায়পুর উপজেলার সোনাপুরে গ্রামের বাড়িতে রোববার বিকালে তাসলিমার লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। গুজবের কারণে তাসলিমার এমন মৃতু্য মেনে নিতে পারছেন না তাসলিমার পরিবারের সদস্য ও গ্রামবাসী। তাসলিমার বোন সেলিনা আক্তার বলেন, তাসলিমা ছোটবেলা থেকেই বাবার সঙ্গে ঢাকায় বসবাস করতেন। উত্তর বাড্ডা এলাকার তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাহসিন আল মাহিন ও তুবা তাহসিন নামে তাদের দুই সন্তান আছে। বছর দু-এক আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তাসলিমার। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত তাসলিমা এরপর থেকে বেশির ভাগ সময়ই চুপচাপ থাকতেন। সন্তানদের নিয়ে মহাখালী ওয়্যারলেস এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তাসলিমা। তুবাকে স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে খোঁজ নিতেই সেদিন উত্তর-পূর্ব বাড্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন তাসলিমা, এমনটা জানান তিনি। নিহত তাসলিমার চাচাতো ভাই হারুনুর রশিদ বলেন, তাসলিমা শিক্ষিত নারী ছিলেন। লেখাপড়া শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছেন। পরে একটি স্কুলে শিক্ষকতাও করেছেন কিছুদিন। গুজব ছড়িয়ে যারা তাসলিমাকে হত্যা করেছে তাদের শাস্তি দাবি করেছেন তিনি। এদিকে এ ঘটনায় শনিবার রাতে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন তাসলিমার ভাগনে নাসির উদ্দিন। অজ্ঞাত প্রায় ৫০০ জনকে আসামি করে এ মামলা করা হয়।