নার্সের বাড়ি ও ক্লিনিক থেকে বিপুল সরকারি ওষুধ উদ্ধার

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
দিনাজপুরের বীরগঞ্জে মোছা. ফাইমা খাতুন নামে এক সরকারি হাসপাতালের নার্সের বাড়ি এবং তার স্বামী মো. নুর আলম নুরের মালিকানাধীন ক্লিনিক থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন ধরনের ওষুধসহ বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ উদ্ধার করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মোছা. ফাইমা খাতুন বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স। অভিযানের পর উদ্ধারকৃত ওষুধসহ স্বামী-স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে ঘটনার দিন রোববার রাতেই তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত করলে আদালতের বিজ্ঞ বিচারক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন মো. নুর আলম নুরকে ১ বছরের কারাদন্ড এবং নার্স ফাইমাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এলাকাবাসী জানান, নার্স ফাইমা দীর্ঘদিন ধরে তার স্বামী মো. নুর আলমের নামে বীরগঞ্জ পৌর শহরের নুর ল্যাব অ্যান্ড সিটি (ক্লিনিক) নার্সিং হোম নামে একটি ক্লিনিক পরিচালনা করে আসছে। ক্লিনিকটি স্বামীর নামে থাকলে এটি পরিচালনা করে নার্স ফাইমা। ক্লিনিকে সিজারের নামে কয়েকজন নারী ও নবজাতক হত্যার অভিযোগ উঠলেও তার ক্ষমতার দাপটের কাছে হার মানতে হয়েছে সবাইকে। মামলা করলেও অলৌলিক ক্ষমতায় সে মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ। সরকারি ওষুধসহ ধরা পড়লেও দ্রম্নত সময়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানার বিষয়টিতে সাধারণ মানুষ হতবাক হয়েছে। তাদের প্রশ্ন এত পরিমাণ সরকারি ওষুধ কোথা থেকে তাদের কাছে এলো বিষয়টি অধরায় থেকে গেল। গত ১১ আগস্ট রোববার ভোরে পৌর শহরের মাকড়াই গ্রামের রাজা মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগমের প্রসব ব্যথা উঠলে নুর ল্যাব অ্যান্ড সিটি (ক্লিনিক) নার্সিং হোমে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করে। এ সময় সেখানে কর্মরত নার্স মোছা. শাহানাজ পারভীন একাই শিশু প্রসবের চেষ্টা করলে শিশুর মৃতু্য ঘটে। এ সংবাদ ছড়িয়ে পরলে বীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ শাকিলা পারভিন এবং ওসি তদন্ত বিশ্বনাথ দাস গুপ্ত ক্লিনিকে উপস্থিত হলে ক্লিনিকে মেয়াদোত্তীর্ণ এবং সরকারি হাসপাতালের ওষুধ ব্যবহারের বিষয়টি তাদের নজরে আসে। পরে বীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে ক্লিনিক থেকে বেশ কিছু সরকারি হাসপাতালের ওষুধ উদ্ধার করে। তারই সূত্র ধরে ক্লিনিক মালিকের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ সরকারি ওষুধ উদ্ধার করে। পরে ক্লিনিক মালিক মো. নুর আলম ও তার স্ত্রী সরকারি হাসপাতালের নার্স মোছা. ফাহিমা খাতুনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। বীরগঞ্জ থানার ওসি সাকিলা পারভিন জানান, দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌর শহরের নুর ল্যাব অ্যান্ড সিটি (ক্লিনিক) নার্সিং হোমে ডাক্তারবিহীন আয়া দিয়ে বাচ্চা প্রসবকালে শিশুর মৃতু্য হয়। ওই ঘটনা তদন্তকালে ক্লিনিক মালিক ও সরকারি হাসপাতালের নার্সের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সরকারি ওষুধ পাওয়ার অপরাধে হাসপাতালের নার্স ও ক্লিনিক মালিক আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইয়ামিন হোসেন জানায়, অবৈধভাবে সরকারি ওষুধ রাখার অপরাধে ও ক্লিনিকে শিশু মৃতু্যর ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতে জেল-জরিমানা প্রদান করা হয়েছে। পৃথক মামলা করা হবে। পাশাপাশি তাৎক্ষণি ক্লিনিকটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন মো. আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে দ্রম্নত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হবে।