প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তিন জেলায় বাল্যবিবাহ বন্ধ

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

স্বদেশ ডেস্ক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বরগুনা এবং সুনামগঞ্জে ধর্মপাশায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহ বন্ধ কারা হয়েছে। এসব ঘটনায় অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকাসহ জরিমানা আদায় করা হয়। প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর: ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে তানজিনা আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরী। শুক্রবার বিকালে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পঙ্কজ বড়ুয়া বিয়ে বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন। ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার সুলতানপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামের জহির মিয়ার মেয়ে তানজিনা আক্তারের সাথে জেলার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন গ্রামের এক যুবকের শুক্রবার বিকালে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। গোপন সূত্রে জানতে পেরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পঙ্কজ বড়ুয়া বিয়ে বাড়িতে বর পৌঁছার আগেই গিয়ে উপস্থিত হয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দেন। পরে মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না মর্মে তানজিনার অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, গত দুই বছর আগে তানজিনা আক্তার পঞ্চম শ্রেণি পাস করেছে। বর্তমানে তার পড়াশোনা বন্ধ। তিনি বলেন, বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে। বেতাগী (বরগুনা) : বরগুনার বেতাগীতে স্কুলছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন ইউএনও। এ ঘটনায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে মেয়ের বাবাকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়েনের কেওরাবুরিয়া গ্রামের দুলাল হাওলাদারের মেয়ে দশম শ্রেণির ছাত্রী ফাতিমা বেগমের (১৫) বিয়ের কথা ছিল। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাজীব আহসান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন। এ সময় ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে মেয়ের বাবা দুলালকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ফাতিমার বিয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিয়ে না দেয়ার জন্য দুলাল মুচলেকা দেন। এ সময় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহিনুর বেগম উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাজীব আহসান বলেন, বাল্যবিয়েমুক্ত সমাজ গড়তে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। ধর্মপাশা (সুনামগঞ্জ) : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বংশিকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের কলারচড়া গ্রামের সুমাইয়া আক্তার (১৪) নামের এক কিশোরী ইউএনও মো. ওবায়দুর রহমানের হস্তক্ষেপে শুক্রবার দুপুরে বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে। সে মহেষখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ওবায়দুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পাই যে শুক্রবার দুপুরের দিকে উপজেলার বংশিকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নের কলারচড়া গ্রামের বাসিন্দা শহীদ মিয়ার মেয়ে ও মহেষখলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই ছাত্রীর (১৪) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী নেত্রকোনার জেলার কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি গ্রামের এক যুবকের (৩০) সাথে বিয়ের আয়োজন চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি মধ্যনগর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন ঘটনাস্থলে যাওয়ার জন্য। সাথে সাথেই পুলিশ কনের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের আয়োজনের সত্যতা পায়। এ সময় ওই ছাত্রীটির বাবাকে বাল্যবিবাহের কুফল ও রাষ্ট্রীয় আইনে এর কোনো স্বীকৃতি নেই এমনটি বুঝিয়ে বলার পর কনের বাবা ও তার স্বজনরা এই বিয়ে বন্ধ করতে সম্মত হন এবং ১৮ বছরের আগে মেয়েকে বিয়ে দেবেন না বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন এবং একটি মুচলেকাও আনা হয়েছে।