সিটি করপোরেশন নিবার্চন

গাজীপুরে আজ জনতার রায়

সব জল্পনা-শঙ্কার মধ্যে আজ গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোট। নৌকার জাহাঙ্গীর আলম নাকি ধানের শীষের হাসান উদ্দিন সরকার, কার মুখে ফুটবে বিজয়ের হাসি, জানা যাবে আজ রাতেই। নিবার্চন উপলক্ষে পুরো নগরীতে সাজ সাজ রব বিরাজ করলেও আতঙ্কও আছে

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮, ১২:৩৪

ফয়সাল খান ও আবুল হোসেন, গাজীপুর থেকে
হাসান উদ্দিন সরকার জাহাঙ্গীর আলম

সব জল্পনা-শঙ্কার মধ্যে আজ গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ভোট। নৌকার জাহাঙ্গীর আলম নাকি ধানের শীষের হাসান উদ্দিন সরকার, কার মুখে ফুটবে বিজয়ের হাসি, জানা যাবে আজ রাতেই। নিবার্চন উপলক্ষে পুরো নগরীতে সাজ সাজ রব বিরাজ করলেও আতঙ্কেরও কমতি নেই। সাধারণ ভোটার ও ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর শঙ্কা দূর করে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট উপহার দেয়াই ইসির মূল চ্যালেঞ্জ। আর গাজীপুরে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নিবার্চন দিয়ে সব মহলের আস্থা অজর্ন করতে চায় ইসি। খেঁাজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে বতর্মান কমিশনের অধীনে কুমিল্লা, রংপুর ও সবের্শষ খুলনা সিটি করপোরেশনের নিবার্চনসহ স্থানীয় পযাের্য় বেশকিছু নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবের্শষ গত ১৫ মে অনুষ্ঠিত খুলনা সিটি করপোরেশন নিবার্চনে বেশকিছু অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলো। গাজীপুর সিটি নিবার্চনেও বিরোধীদলগুলোর চাওয়া যাতে খুলনার পুনরাবৃত্তি না হয়। বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে নিবার্চন কমিশনও। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সহকারী রিটানির্ং কমর্কতার্ কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ যায়যায়দিনকে বলেন, এই নিবার্চনকে তারা চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছেন। খুলনার নিবার্চনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে একটি সুষ্ঠু নিবার্চন উপহার দিতে চান। প্রধান নিবার্চন কমিশনারও এ ব্যাপারে তাদের নিদের্শনা দিয়েছেন। আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পযর্ন্ত নগরীর ৫৭টি ওয়াডের্র ৪২৫টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। যেখানে মোট ২৭৬১টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে সোমবার বেলা ১১টা থেকে ভোট গ্রহণের সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রগুলোর মধ্যে ৬টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট নেয়া হবে। এতে নিবার্চন কমিশন থেকে ৪৮ জনের একটি প্রশিক্ষিত টিম নিয়োজিত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে ২৯ প্লাটুন বিজিবি, ৭ শতাধিক র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৩ হাজারের বেশি সদস্য নিয়োজিত থাকবে। তাছাড়া ৬৩ জন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট, ১৯ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিবার্চনী এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ সাবির্ক পরিস্থিতি ঠিক রাখতে দায়িত্ব পালন করবেন। সোমবার নগরীর বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামের দোতলায় নিজের কাযার্লয়ে ভোট নিয়ে নিবার্চন কমিশনের সবের্শষ প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নিবার্চনের রিটানির্ং কমর্কতার্ রকিব উদ্দিন মন্ডল। এ সময় তিনি বলেন, প্রাথীর্, সমথর্ক কিংবা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেদিক থেকেই অনিয়ম হোক না কেন, তা কঠোরভাবে দমন করা হবে। যদি কেউ নিবার্চনে অন্যায়-অনিয়ম করে তাদের বিরুদ্ধে কড়া মেসেজ দেয়া হয়েছে। ভালো নিবার্চন উপহার দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কতৃর্পক্ষের কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছি। নিবার্চন কমিশন থেকেও জানানো হয়েছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূণর্ ভোট হবে। এবং সাড়ে ১১ লাখ ভোটার যাতে ভোট দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে সেটাও নিশ্চিত করা হবে। মোট ভোটারের অধের্ক মহিলা ভোটার। তারা যেন ভোটগ্রহণের দিন বাড়িতে বসে না থাকেন, সেজন্য আমরা ব্যবস্থা করেছি। আমি মনে করি, এই নিবার্চনের মাধ্যমে পরবতীর্কালে একটি সুন্দর মেসেজ যাবে, সংসদ নিবার্চন যাতে ভালো হয় সে ব্যাপারে।’ এক প্রশ্নের জবাবে রকিব উদ্দিন মন্ডল বলেন, ‘প্রাথীের্দর সঙ্গে মিটিংয়ে বলেছি, কোনো ধরনের গুজব-অনিয়ম করা যাবে না। ভোটারদের বারবার বলেছি এবং লিফলেট, হ্যান্ড বিল এবং মাইকিং করে বিভিন্ন তথ্য ও ভোট দেয়ার প্রক্রিয়াগুলো জানানো হয়েছে। নিবার্চন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। ভোটাররা যাতে নিবিের্ঘœ ভোট দিতে পারে, সেজন্য সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সভায়ও কড়া বাতার্ দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে রকিব মন্ডল বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট বলে দিয়েছি, প্রশাসন বা কোনো কতৃর্পক্ষ যদি নিবার্চনে বাধার সৃষ্টি করে, প্রত্যক্ষভাবে হোক বা পরোক্ষভাবে হোক, আমরা কাউকে ছাড় দেব না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। সব অথরিটি আমাদের আশ্বস্ত করেছে, তারা সাবির্কভাবে সহায়তা করবে। কোনো রকম অন্যায়-অনিয়ম কোনোভাবে বরদাশত করবে না, এ বিষয়ে আমাদের সাথে একমত পোষণ করেছে।’ পুলিশ নিবির্চারে বিএনপি কমীের্দর গ্রেপ্তার এবং ভয়ভীতি দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছেন বিএনপির প্রাথীর্ হাসান উদ্দিন সরকার। এ বিষয়ে নিবার্চন কমিশনে অনেক বার অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয় না বলে অভিযোগ তার। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকষর্ণ করা হলে রিটানির্ং কমর্কতার্ বলেন, ‘তারা অভিযোগ করলে আমরা সাথে সাথে আমলে নিচ্ছি। সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষকে লিখিতভাবে এবং মৌখিকভাবে অবহিত করছি। তদপুরি কমিশনে আমরা চিঠি দিচ্ছি। কমিশন থেকেও সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের সাথে যোগাযোগ করছে। গতকাল পুলিশ সুপারকে লেখা একটি চিঠি আমরা পেয়েছি, যাতে বলা আছে, ফেরারি ছাড়া কাউকে বিনা কারণে হয়রানি করা যাবে না। এবং নিবার্চনের পরিবেশ বিনষ্ট করা যাবে না। সে বিষয়টি আমরা প্রাথীর্ হাসান সরকারকেও জানিয়েছি, অন্যান্য প্রাথীের্কও জানিয়েছি। পুলিশ সুপারকেও জানিয়েছি, যাতে সবাই সচেতন থাকে।’ জেলা প্রশাসক দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নিবার্চনকে ঘিরে স্মরণকালের সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো কোনো সিটি করপোরেশন নিবার্চনে প্রতিটি ওয়াডের্ একজন নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীন একটি করে ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকছে। আর তিনটি ওয়াডর্ মিলে থাকছেন একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, আনসার ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যের সাথে থাকবে পুলিশের টহল দল ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দা। সব মিলিয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার সদস্য। এছাড়া ভোট কেন্দ্রে গোলযোগ সৃষ্টিসহ মিথ্যা ভোটার সেজে ভোট প্রদানের চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সবোর্চ্চ ২ বছরের সাজা দেয়ার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে বলে জানান গাজীপুরের জেলা প্রশাসক। অন্যদিকে র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে.ক. সারওয়ার-বিন-কাশেম এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ৫৭টি ওয়াডের্র প্রতিটি ওয়াডের্ ১টি করে মোট ৫৮টি টহল টিম মোতায়েন করা হয়েছে র‌্যাবের পক্ষ থেকে। প্রতি টহল টিমে ৮ জন করেসহ মোট ৭ শতাধিক জনবল থাকবে। এছাড়া চারটি ডগ স্কোয়াড ও বোম ডিসপোজাল ইউনিটও থাকবে বলে জানান। সরেজমিনে দেখা গেছে, গতকাল সকাল থেকে ভোটের সরঞ্জাম বিতরণে ব্যস্ততা ছিল নগরীর জয়দেবপুর এলাকার বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে। নিবার্চন কমিশন থেকে ব্যালট বক্স, ব্যালট পেপার, সিল, অমোচনীয় কালিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম তুলে দেয়া হয় ভোটিং কমর্কতাের্দর হাতে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় এসব সরঞ্জাম কেন্দ্রে কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। বিএনপি নেতাকমীের্দর গণগ্রেপ্তারের অভিযোগ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নিবার্চনের এক দিন আগেও সিটি এলাকা থেকে ১৮ জন নেতা-কমীের্ক আটকের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিবার্চনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রধান এজেন্ট ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. সোহরাব উদ্দিন সোমবার দুপুরে নিবার্চনের রিটানির্ং অফিসারের কাছে এ সংক্রান্ত দুটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। তিনি জানান, পুলিশের অভিযানের মুখে ২০ দলীয় জোটের নেতাকমীর্সহ সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। রোববার রাতে বিএনপির নিবার্চন পরিচালনার সঙ্গে জড়িত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব। গ্রেপ্তারদের কারোর বিরুদ্ধেই কোনো মামলা নেই। গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকমীের্দর পরিবারের উদ্ধৃতি দিয়ে ধানের শীষের মিডিয়া সেল জানায়, পুলিশ নেতাকমীের্দর বাড়িতে ঢুকে গ্রেপ্তার করছে। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নেই। তাদের মধ্যে কেউ কেউ রাজনৈতিক মিথ্যা মামলার আসামি হলেও বতর্মানে জামিনে আছেন। পুলিশের গ্রেপ্ততার অভিযান এখনো অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে ইতোপূবের্ কোনো মামলা ছিল না তাদের ধরে ভিন্ন জেলা পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। আটকের দুই-তিন দিন পর কাউকে টাঙ্গাইল, কাউকে নারায়ণগঞ্জ আবার কাউকে ঢাকার জেলখানায় পাওয়া যাচ্ছে। তাদের প্রত্যেককে অন্য জেলার একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে দেয়া হচ্ছে। ধানের শীষ প্রতীকের নিবার্চন সংশ্লিষ্ট ২০ দলীয় জোটের নেতা-কমীের্দর এই গ্রেপ্তার অভিযানে গাজীপুর ডিবি পুলিশের সঙ্গে জেলার সকল থানা ও পাশ্বর্বতীর্ জেলাসমূহের পুলিশ নামোনো হয়েছে। রোববার রাতেও ডিবি পুলিশ ধানের শীষ প্রতীকের নিবার্চন পরিচালনা কমিটির ১৮ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তারদের অবস্থান এখনো জানানো হচ্ছে না। ধানের শীষের মিডিয়া সেল কতৃর্ক দেয়া তথ্যমতে গ্রেপ্তাররা হলেন, কোনাবাড়ি ১১ নম্বর ওয়াডর্ যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সবুজ, ৩১ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটি আহŸায়ক (বিডি আর অব.) মো. মজিবুর রহমান, ৩২ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটি সদস্য ও নিবার্চনী এজেন্ট অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন, ৩২ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটি সদস্য অ্যাডভোকেট ইউসুফ, ৩২ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটি সদস্য কবির হোসেন, আব্দুল মান্নান, কাউলতিয়া ২৪ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটি সদস্য জৈনুদ্দিন মোড়ল, পূবর্ ধীরাশ্রম ২৯ নম্বর ওয়াডর্ বিএনপি কমীর্ হেলেন বাদশা, পশ্চিম ধীরাশ্রম বিএনপিকমীর্ আলমগীর, ২৯ নম্বর ওয়াডর্ কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি আহŸায়ক মোশারফ হেসেন বাদশা, ২৯ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটির সদস্য মজিবর রহমান, টঙ্গীর মুদাফা ৫২ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটি সদস্য মো. ইউনুস মিয়া, গাছা কলমেশ্বর আদশর্ বিদ্যালয় কেন্দ্র নিবার্চন পরিচালনা কমিটির সদস্য লিটন মোল্লা গিয়াস উদ্দিন, কাউলতিয়া পোড়াবাড়ির ২৩ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটির সদস্য হারিস, বাউরাইদের সাবেক কাউলতিয়া ইউপি ছাত্রদল সভাপতি ও নিবার্চন পরিচালনা কমিটির সদস্য বাকির হোসেন, কানাইয়া গ্রামের ৩০ নম্বর ওয়াডর্ নিবার্চন পরিচালনা কমিটির সদস্য শোভা ও আব্দুর রহমান। ইভিএমে মক ভোটিংয়ে আগ্রহ কম এ নিবার্চনে ৬টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। এজন্য মঙ্গলবার হতে ইভিএম ভোটিং প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ শুরু করা হয়েছে। নিবার্চন কমিশনের ৪৮ জনের একটি প্রশিক্ষিত টিম এ কাজ শুরু করেন। নিবার্চনের আগের দিন ২৫ জুন সকাল ১০টা হতে সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রসমূহের ভোটারদের সম্পৃক্ত করে ভোটগ্রহণ কমর্কতার্ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কারিগরি টিমের সমন্বয়ে মক ভোট শুরু হয়েছে। চলে বিকাল ৩টা পযর্ন্ত। কিন্তু সরেজমিনে দেখা গেছে, ওইসব কেন্দ্রে মঙ্গলবার দুপুর পযর্ন্ত ভোটারদের উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি। জেলা শহরের রানী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে দুপুর সাড়ে ১২টা পযর্ন্ত ৬ জন ভোটার ভোট দিয়েছেন। স্থানীয় ভোটার মমতাজ বেগম জানান, আমাদের কাছে এ পদ্ধতিটি ঝামেলাযুক্ত মনে হয়। নিবার্চনের সহকারী রিটানির্ং কমর্কতার্ ও গাজীপুর জেলা নিবার্চন কমর্কতার্ মো. তারিফুজ্জামান জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নিবার্চনে এলাকার পরিবেশ, কেন্দ্রগুলোর অবকাঠামো ও যাতায়াত ব্যবস্থা এবং এলাকাবাসীর শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ নানা বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ৬টি ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করে ভোট গ্রহণের জন্য নিবার্চন কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়। ওই প্রস্তাব অনুমোদিত হওয়ায় ইভিএম ভোটিং প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ শুরু করা হয়। ১৯ জুন (মঙ্গলবার) থেকে ২৪ জুন পযর্ন্ত ওই ৬টি কেন্দ্রের আওতায় ১২টি জনসমাগম স্থানে জনসচেতনতা ও ভোটিং শিক্ষা প্রদান এবং প্রদশর্নীর কাযর্ক্রম অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ২৪ জুন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পযর্ন্ত ৬টি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কমর্কতার্, সহকারী প্রিজাইডিং কমর্কতার্ এবং পোলিং কমর্কতাের্দর ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। সবের্শষ ২৫ জুন (অথার্ৎ ভোট গ্রহণের আগের দিন) সকাল ১০টা হতে বিকাল ৩টা পযর্ন্ত সংশ্লিষ্ট ভোট কেন্দ্রসমূহের ভোটারদের সম্পৃক্ত করে ভোটগ্রহণ কমর্কতার্ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কারিগরি টিমের সমন্বয়ে মক ভোটিং অনুষ্ঠিত হয়। নিবার্চনের রিটানির্ং কমর্কতার্ রকিব উদ্দিন মন্ডল জানান, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নিবার্চনে চাপুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ভোটার-২৪৮০), চাপুলিয়া মফিজউদ্দিন খান উচ্চবিদ্যালয় (ভোটার-২৫৫২), পশ্চিম জয়দেবপুরের মারিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (ভোটার-২৫৬২), মারিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-২ (ভোটার-২৮২৭), রানী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (ভোটার-১৯২৭) ও রানী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র-২ (ভোটার-২০৭৭) এ ছয়টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করার জন্য নিবার্চন কমিশনে প্রস্তাব পাঠানো হয়। কেন্দ্রগুলোর অবকাঠামো ও যাতায়াত ব্যবস্থা, এলাকার পরিবেশ এবং এলাকাবাসীর শিক্ষাগত যোগ্যতাসহ নানা বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এ কেন্দ্রগুলো নিবার্চন করা হয়। নিবার্চন কমিশন থেকে ৪৮ জনের একটি প্রশিক্ষিত টিম ইভিএম ভোটিং শিক্ষা প্রদানের কাজ শুরু করেছে। প্রসঙ্গত, গাজীপুর সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার হলেন ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং নারী ভোটার হলেন ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। আজ সিটি মেয়র ও কাউন্সিলর পদে জনপ্রতিনিধি নিবার্চনে ভোট দেবে গাজীপুরবাসী। সাতজন মেয়রপ্রাথীর্র পাশাপাশি ২৫৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রাথীর্ এই নিবার্চনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।