চট্টগ্রাম টেস্ট

বাংলাদেশকে হারিয়ে আফগান ইতিহাস

বৃষ্টিও বাঁচাতে পারল না বাংলাদেশকে। টেস্ট খেলার ১৯ বছরের মাথায় এসে বাংলাদেশকে বড় এক লজ্জাই দিয়ে গেল আফগানিস্তান

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চট্টগ্রাম টেস্টের শেষ দিন বাংলাদেশের বাকি সবার মতো অধিনায়ক সাকিবের আউটও ছিল হতাশাজনক -যাযাদি
৩৯৮ রানের টার্গেট। অতীতে কখনো এত রান তাড়া করে জেতেনি বাংলাদেশ। ফলে হারের শঙ্কা ছিলই। সেখানে ব্যাট করতে নেমে ১২৫ রানেই ৬ উইকেট খুইয়ে সে শঙ্কায় জ্বালানি জোগান টাইগাররা। তবে আশীর্বাদ হয়ে এসেছিল বৃষ্টি। যে কারণে চতুর্থ দিনের শেষবেলা খেলা হয়নি। পঞ্চম দিনের দুপুর গড়িয়েও গড়ায়নি। স্বভাবতই চাওয়া পূরণ করেছিল বৃষ্টি! বাকি একটু কাজ করতে হতো ব্যাটসম্যানদের। নির্বিঘ্নে কাটাতে হতো প্রায় ১৯ ওভার। তবে আবারও সেই পুরনো দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি। স্নায়ুচাপের মধ্যে হাঁটু কাঁপাকাঁপি, বারবার পরাস্ত, সঙ্গে নড়বড়ে ব্যাটিং। সাকিবরা এলেন আর গেলেন। ফলাফল যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। টেস্ট ক্রিকেটের কনিষ্ঠতম দল আফগানিস্তানের কাছে লজ্জাবরণ করলেন স্বাগতিকরা। দুই দলের মুখোমুখি প্রথম টেস্টে ২২৪ রানে হারলেন তারা। মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়লেন সৌম্য-নাঈম। চট্টগ্রাম টেস্টে ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে আফগানিস্তান। এ নিয়ে ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণে তিন ম্যাচের দুটিতেই জয় পেলেন আফগানরা। লংগার ভার্সনে এ কীর্তি আছে কেবল অস্ট্রেলিয়ার। অভিষেক টেস্টে ভারতের কাছে পরাজিত হয় নবীন দলটি। তবে পরের ম্যাচেই ঘুরে দাঁড়ায় তারা। দ্বিতীয় টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে হারান কাবুলিওয়ালারা। সোমবারও বন্দরনগরীর আকাশ \হভেঙে থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শুরু হয়নি। গোটা সকাল চলে যায় বৃষ্টির পেটে। অবশেষে দুপুর ১টায় গড়ায় খেলা। তবে ১৩ বল হতেই আবার হানা দেয় বৃষ্টি। এতে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। পরে দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে ৪টা ২০ মিনিটে ফের খেলা শুরু হয়। তবে মাঠে নেমেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। প্রথম বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান। জহির খানের বল পিচ করে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। অযাচিতভাবে তাতে খোঁচা দিতে গিয়ে আউট হন তিনি। ফেরার আগে করেন ৪ চারে লড়াকু ৪৪ রান। সেই রেশ না কাটতেই ফেরেন মেহেদী মিরাজ। ফের ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন রশিদ খান। তাকে এলবিডবিস্নউর ফাঁদে ফেলেন তিনি। এতেই ক্ষ্যান্ত হননি আফগান অধিনায়ক। খানিক পর তাইজুল ইসলামকে একইভাবে শিকার করেন তিনি। বাংলাদেশ শিবিরে শেষ পেরেকটিও ঠুকেন রশিদ। সৌম্য সরকারকে ইব্রাহিম জাদরানের ক্যাচ বানিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন তিনি। ১৭৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এ নিয়ে প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও ৫ উইকেট দখলে নেন রশিদ। এতে অনন্য রেকর্ড গড়েছেন তিনি। প্রথম অধিনায়ক হিসেবে এক টেস্টে হাফসেঞ্চুরি ও ১০ উইকেট শিকারের বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন স্পিন জাদুকর। বৃষ্টির কারণেই রোববার নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয় চতুর্থ দিনের খেলা। ফলে শেষদিন প্রায় আধা ঘণ্টা আগে খেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল। ৬ উইকেটে ১৩৬ রান নিয়ে দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসান ৩৯ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে ছিলেন। সঙ্গে থাকা সৌম্য সরকার রানের খাতাই খুলতে পারেননি। তবে তারা নতুন দিনের শুরুতে খেলার গোড়াপত্তন করতে পারেননি। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬০ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। দলের হয়ে ৮৭ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন ইব্রাহিম জাদরান। ফলে ৩৯৭ রানের লিড পান সফরকারীরা। এতে একমাত্র টেস্টের নাটাই হাতে নেন তারা। নিজেদের প্রথম ইনিংসে স্বপ্নের মতো ব্যাটিং করে আফগানিস্তান। রহমত শাহর ইতিহাস গড়া সেঞ্চুরিতে তোলে দলীয় সর্বোচ্চ ৩৪২ রান। জবাবে প্রথম ইনিংসে হতশ্রী পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে বাংলাদেশ। ২০৫ রানে গুটিয়ে যান তারা।