মৈত্রী চলবে সপ্তাহে ৬ দিন বন্ধন এক্সপ্রেস ৪ দিন

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশ-ভারত রুটে চলাচলকারী ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে ৬ দিন ও খুলনা-কলকাতা রুটের বন্ধন এক্সপ্রেস সপ্তাহে ৪ দিন চলাচল করবে। বর্তমানে মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে ৪ দিন ও বন্ধন ২ দিন চলাচল করছে। চলমান রেলব্যবস্থা ঠিক রেখেই যাত্রীদের চাহিদা মেটাতে ও রেলের আয় বাড়াতে এই ট্রিপ বাড়ানো হচ্ছে বলে রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। জানা গেছে, গত ৩ থেকে ৮ আগস্ট বাংলাদেশের রেলপথ মন্ত্রী ভারত সফর করেন। এ সময় ভারতীয় রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলাচলকারী ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস সপ্তাহে ৬ দিন ও খুলনা-কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস ৪ দিন করা প্রস্তাব দেন। পরে গত ২৬ থেকে ২৯ আগস্ট ভারতীয় রেল মন্ত্রণায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে ট্রেন চলাচলের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশে বৈঠক হয়। এ সময় বৈঠকে বাংলাদেশের-ভারতের মধ্যে চলমান যাত্রীবাহী ট্রেন দুটি দ্রম্নত ট্রিপ বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়। জানা গেছে, এর আগে ২০ আগস্ট রেলপথ মন্ত্রীর সভাপতিত্বে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সভাপতি এইচ এম ইব্রাহিমের সঙ্গে ভারত সফরে যাওয়া কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিনটি রাউন্ড দেবে। একইভাবে ভারতের পক্ষ থেকে তিনটি রাউন্ড ট্রিপ দেয়ার ব্যাপারে ভারতে আলোচনা হয়েছে বলে জানানো হয়। ভারতের ট্রেন যে দিন আসবে পরেরদিন সকালে ফিরে যাবে। বাংলাদেশের ট্রেন যে দিন ভারতে যাবে পরেরদিন ফিরে আসবে। উভয় দেশের ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সপ্তাহে একদিন বন্ধ রাখা হবে। একইভাবে খুলনা থেকে কলকাতা বন্ধন এক্সপ্রেস বাংলাদেশের ট্রেন যেদিন কলকাতা যাবে পরের দিন আসবে। ভারতের ট্রেন যে দিন খুলনা আসবে পরের দিন কলকাতায় ফিরে যাবে। কিন্তু বন্ধনের ট্রিপ বাড়িয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুদিন আসবে দুদিন ফিরে আসবে। একইভাবে ভারতের ট্রেন দুদিন আসা ও দুদিন যাওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। মন্ত্রী উভয় দেশের মধ্যে চলমান যাত্রীবাহী ট্রেন দুটির ট্রিপ বাড়াতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে দ্রম্নত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গেছে, উভয় দিক থেকে মৈত্রী ট্রেনের ট্রিপ বাড়ালে চলমান অভ্যন্তরীণ ট্রেন চলাচলের সময়ের সফঙ্গ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তাই মৈত্রী ট্রেন রাতে চালানো যায় কিনা সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অনুমতির জন্য চিঠি পাঠাতে বলা হয়েছে। এছাড়া বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের খুলনার যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট কোচ ঠিক করে একই ভাড়ায় বেনাপোল স্টেশন থেকে সরাসরি কলকাতার যাত্রী উঠার ব্যবস্থা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বেনাপোলের যাত্রীরা বেনাপোল থেকে এবং খুলনার যাত্রীরা খুলনা স্টেশন থেকে কাস্টম ইমিগ্রেশন চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে বন্ধন এক্সপ্রেসের যাত্রী বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রেলের আয় আরো বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। জানা গেছে, উভয় দেশের মধ্যে চলমান মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন সপ্তাহে যে কয়দিন চলাচল করে বাকি সময় ট্রেন দুটি অলস পড়ে থাকে। আন্তর্জাতিক ট্রেন হওয়ায় এ ট্রেনের কোচ অন্যকোনো রুটে ব্যবহার করা যায় না। নতুন করে রেল রুট না হওয়া পর্যন্ত বিদ্যমান রেললাইনের উপরে নতুন নতুন ট্রেন চালুর ব্যাপারে রেলপথমন্ত্রী জোর দিচ্ছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রেলওয়ে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মো. মিয়াজাহান যায়যায়দিনকে বলেন, ভ্রমণ ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে ভারতে অনেক যাত্রী চিকিৎসার জন্য যান। কিন্তু যাত্রীর চেয়ে ট্রেন সংখ্যা কম হওয়ায় ১৫ থেকে ২০ দিন আগে টিকিট কেটেও সিট পাওয়া যায় না। তাই মৈত্রী টিকিটের জন্য অনেক সময় মন্ত্রীর কাছে পর্যন্ত অনুরোধ আসে। কিন্তু বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলমান ট্রেনের সিট রিজার্ভ রাখার সিস্টেম নেই। তাই জরুরি রোগীরাও সিট পান না। তিনি বলেন, বিষয়টি বর্তমান মন্ত্রী যোগদানের কয়েকদিন মধ্যে নজরে আসে এবং কিভাবে মৈত্রী ও বন্ধনের ট্রিপ বাড়ানো যায় এ বিষয় মতামত চান। তাই মন্ত্রীর ভারত সফরের সময় উভয় দেশের মধ্যে চলমান ট্রেনের ট্রিপ বাড়ানোর বিষয় সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয় বলে তিনি জানান।