নবম ওয়েজ বোর্ডের গেজেট প্রকাশ

অবশেষে সাংবাদিক ও সংবাদপত্র কর্মীদের বেতন-ভাতা সর্বোচ্চ ৮৫ শতাংশ বাড়িয়ে নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডের গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার। নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী গ্রেড-১, ২ ও ৩-এ ৮০ শতাংশ এবং গ্রেড-৪, ৫ ও ৬-এ ৮৫ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছে। নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড রোয়েদাদ, ২০১৯ শীর্ষক গেজেটটি শনিবার প্রকাশ করা হয়। মজুরি বোর্ডের রোয়েদাদ গেজেট নোটিফিকেশনের দিন থেকে তা কার্যকর হবে। তবে নতুন এই ওয়েজ বোর্ডের গেজেটে মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বছরপ্রতি প্রাপ্য আগের ২টি গ্র্যাচুইটি (আনুতোষিক) কমিয়ে একটি করা হয়েছে। সাংবাদিক-শ্রমিক-কর্মচারীদের আয়কর দেয়ার বিধান আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মালিকদের ওপর নির্ধারণ করা থাকলেও মন্ত্রিসভা কমিটি তা বদলে সংশ্লিষ্টদের ওপর নির্ধারণ করেছে। নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড সুপারিশে নতুন সংযোজিত উলেস্নখযোগ্য দিক হলো দৈনিক সংবাদপত্রে জনবল কাঠামো এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা ভিত্তি হিসেবে নির্ধারণ করে দেয়া। এছাড়া এতে বিনোদন সম্পাদক পদটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থার বিন্যাস অষ্টম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডের মতো পাঁচটি শ্রেণিতেই রয়েছে। এই বিন্যাসে প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক গ্রস আয় ও প্রচার সংখ্যার ভিত্তি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। সংবাদপত্র ও বার্তা সংস্থার কর্মীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি নবম মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়। ১৩ সদস্যের এই বোর্ডে চেয়ারম্যান ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হক। এছাড়া সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষ, সাংবাদিক, সংবাদপত্র কর্মচারী এবং শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনের সমসংখ্যক প্রতিনিধিও ছিলেন এই মজুরি বোর্ডে। সরকারের কাছে সুপারিশ দিতে এই বোর্ডকে ছয় মাস সময় দেয়া হয়েছিল। পরে নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ডের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়ানো হয়। ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নবম বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করার আগে সংবাদপত্র ও সংবাদ সংস্থায় কর্মরত সাংবাদিক, কর্মচারী ও প্রেস শ্রমিকদের প্রতি মাসের মূল বেতনের ওপর ৪৫ শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করে সরকার। এ মহার্ঘ ভাতা ২০১৮ সালের ১ মার্চ থেকে কার্যকর ধরা হয়। এ মহার্ঘ ভাতা বোর্ডের নির্ধারিত সামগ্রিক বেতন কাঠামোর সঙ্গে সমন্বয় হবে। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর তখনকার তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর কাছে নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড রোয়েদাদ ২০১৮ সুপারিশমালা জমা দিয়েছিলেন বোর্ডের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. নিজামুল হক। পরে একই বছরের ৩ ডিসেম্বর এই সুপারিশ মন্ত্রিসভা বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। ওই দিনই নতুন এই বেতন কাঠামো পরীক্ষা করে বাস্তবায়নের সুপারিশ দিতে তখনকার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করা হয়। এরপর নতুন সরকার গঠিত হলে চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা বৈঠকে নবম সংবাদপত্র মজুরি বোর্ড রোয়েদাদ, ২০১৮ পরীক্ষায় ইতোপূর্বে গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটি পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত এই সাত সদস্যের মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছিল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে।