বিশ্বনাথে সড়কের বেহাল দশা

প্রকাশ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
সিলেটের বিশ্বনাথে বেহাল সড়কে যাত্রীদের দুর্ভোগ -যাযাদি
বিশ্বনাথ (সিলেট) সংবাদদাতা সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়কগুলোর বেহাল দশা। দেখলে মনে হয় সাগরে জাহাজের বদলে বাস-ট্রাক চলাচল করছে। প্রতিদিন জনসাধারণসহ যানচলাচলে দুর্ভোগের সীমা নেই, বাড়ছে জীবনের নানা ঝুঁকি। দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ না করায় সড়কে মাঝে-মধ্যে ছোট ছোট দুর্ঘটনাও ঘটছে। সব মিলিয়ে প্রায় সড়কে যানচলাচল বন্ধ হওয়ার উপক্রম। বৃষ্টির মৌসুমে সড়কে চলাচলে দুর্ভোগ আরও সীমাহীন। সড়কে ছোট-বড় গর্তে পানি জমে সাগরে রূপ নিয়েছে। ছোট-বড় যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়। তাছাড়া সড়কের পাশে খালের উপর অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কগুলোর পাশাপাশি গ্রামীণ সড়কগুলোসহ সংস্কারের অপেক্ষায় থাকা প্রায় ৯০ ভাগ সড়কের অবস্থা আরও করুণ। এছাড়াও অনেক এলাকায় নদীগর্ভে চলে গেছে সড়ক। প্রত্যেক এলাকার জনসাধারণের দুর্ভোগের অন্ত নেই। এতে বেদাকায়দায় পড়ছেন এলাকার জনসাধারণসহ স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা। অনেক সময় যানচলাচল বন্ধ থাকার কারণে যাত্রীরা পায়ে হেঁটে তাদের গন্তব্যে পৌঁছান। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাসহ অন্যান্য রোগীদের বহনে মোকাবেলা করতে হচ্ছে চরম ঝুঁকি আর সীমাহীন দুর্ভোগ। সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্বনাথ-মিয়ারবাজার-জগন্নাথপুর, বিশ্বনাথ-হাবড়াবাজার-মাছুখালীবাজার-ছালিয়া, বিশ্বনাথ নতুন বাজার-মুফতিরগাঁও-হাবড়াবাজার, বিশ্বনাথ-পুরকায়স্থ বাজার-কুরুয়া বাজার, বিশ্বনাথ-চান্দশিরকাপন, উত্তর মিরেরচর-ইলামেরগাঁও-পুরানগাঁও-হাসনাজি, রশিদপুর-সিরাজপুর, হিমিদপুর-ধর্মদা, রামপাশা-রাজাগঞ্জ বাজার-তেলিকোনা-খাজাঞ্চী স্টেশন, রামপাশা-বৈরাগীবাজার-সিংগেরকাছ বাজার-টুকেরবাজার-রসুলগঞ্জ বাজার, গোয়াহরী-সোনালী বাংলাবাজার-ইসবপুর-মুন্সিরগাঁও-ভূরকিবাজার, বৈরাগীবাজার-আমতৈলবাজার, লামাকাজী-আকিলপুর-পরগনাবাজার-রাজাপুর, টুকেরকান্দি-টেংরা-লালাবাজার, পনাউলস্নাহ বাজার-মুন্সীর বাজার, লালাবাজার-বেতসান্দি-মুন্সীর বাজার, পঞ্চগ্রাম শাহী ঈদগাহ-ছোট খুরমা, দশঘর-সাড়ইল-একানারাইল, পীরেরবাজার-দশঘর-মাছুখালী বাজার, পীরেরবাজার-বাউসী-মান্দারুকা, নাজিরবাজার-শ্বাসরাম পর্যন্ত পাকা সড়কের উপর বিশালাকারের গর্ত হয়েছে। কিছুদিন আগে বিভিন্ন সিএনজি অটোরিকশা ও বাসের চালকরা মিলে সড়কের গর্ত ভরাটের কাজ করলেও তা বৃষ্টির পানিতে আবারো নষ্ট হয়ে যায়। বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশ্বনাথের সড়কগুলো দ্রম্নত সংস্কার ও সড়কের পাশে পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালুর দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হলেও কোনো কার্যকর কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়নি। বৈরাগী এলাকার প্রবীণ সাংবাদিক সাইদুর রহমান সাঈদ জানান, বৈরাগীবাজার-সিঙ্গেরকাছ সড়কে প্রায় সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে কোনো সংস্কার কাজ করা হয়নি। রহমাননগরে সড়কের পাশে পানি নিষ্কাশনের খাল অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় বর্ষাকালে পানি জমে থাকে। মানুষ ও যানচলাচলে নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। অটোরিকশা চালক কবির মিয়া জানান, জীবিকার তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। সড়কের অবস্থা খারাপ হওয়ায় সারাদিনের আয় বিকালে গাড়ি মেরামতের জন্য ব্যয় হয়ে যায়। উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা হারুনুর রুশীদ ভূঁইয়া জানান, চলতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তা পরিদর্শন করে সড়কের টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। সড়কের পাশে থাকা বাড়ির লোকজন সচেতন না হলে যতই সংস্কার কাজ করা হোক সড়কের ভোগান্তি থেকেই যাবে।