জুয়া খেলা নিয়ে দেশের আইনে কী আছে

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ প্রায়ই দাবি করে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর তখনকার সরকার দেশে মদ-জুয়া নিষিদ্ধ করেছিল। কারণ ১৯৭২ সালের সংবিধানে জুয়া বন্ধের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রাষ্ট্রকে নির্দেশনা দেয়া আছে। যদিও পরে এ বিষয়ে আর নতুন কোনো আইন হয়নি, তাই এখনো কার্যকর রয়ে গেছে দেড়শ' বছরের বেশি পুরনো একটি আইন। এদিকে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাংলাদেশে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স বা পারমিট নিয়ে মদ বিক্রি ও পানের সুযোগ আছে। বুধবার রাতে ঢাকায়র্ যাবের সমন্বিত অভিযানে চারটি কথিত 'ক্যাসিনো' সিলগালা ও বহু মানুষকে আটকের পর জুয়াখেলা এবং ক্যাসিনো ইত্যাদি নিয়ে এখন বাংলাদেশে বিস্তর আলোচনা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বরাতে জানা যায়, ঢাকায় অন্তত ৬০টি এমন ক্যাসিনোর অস্তিত্ব রয়েছে। পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোর পাশাপাশি বাংলাদেশের আশপাশের দেশ সিঙ্গাপুর, ম্যাকাও, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এমনকি নেপালেও জুয়া খেলার জায়গা হিসেবে ক্যাসিনোর জনপ্রিয়তা আছে। কিন্তু বিভিন্ন ক্লাব বা আড্ডায় গোপনে জুয়া খেলার অনেক আসর বসার কথা নানা সময়ে শোনা গেলেও একেবারে আধুনিক যন্ত্রপাতি ও উপকরণ সজ্জিত এ ক্যাসিনোগুলোর অস্তিত্ব থাকার খবর বাংলাদেশের মানুষের কাছে একেবারেই নতুন। অথচ মদ বিক্রি বা পানের মতো ক্যাসিনোর অনুমোদন বা লাইসেন্স দেয়ার কোনো ব্যবস্থা বা সুযোগই বাংলাদেশের কোনো আইনে নেই।- বলেছেন আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। জুয়ার বিষয়ে যে আইনটি কার্যকর আছে সেটি হলো- 'প্রকাশ্য জুয়া আইন ১৮৬৭', সেখানে অবশ্য ক্যাসিনো বিষয়ে কিছু বলা নেই। তবে ওই আইনে 'কেউ তার ঘর, তাঁবু, কক্ষ, প্রাঙ্গণ বা প্রাচীরবেষ্টিত স্থানের মালিক বা রক্ষণাবেক্ষণকারী অথবা ব্যবহারকারী হিসেবে যেকোনো ব্যক্তি জ্ঞাতসারে বা স্বেচ্ছায় অন্য লোককে, ওই স্থানকে সাধারণ জুয়ার স্থান হিসেবে ব্যবহৃত করিতে দিলে অর্থদন্ড ও কারাদন্ডের বিধান' রাখা হয়েছে। এমনকি 'তাস, পাশা, কাউন্টার অর্থ বা অন্য যেকোনো সরঞ্জামসহ যেকোনো ব্যক্তিকে ক্রীড়ারত বা উপস্থিত দেখিতে পাওয়া গেলেও' শাস্তি দেয়ার সুযোগ আছে এ আইনে। মি. বড়ুয়া বলেন, ঢাকায় বছরের পর বছর ধরে প্রকাশ্যে দিবালোকে সবার নাকের ডগায়ই এসব চলেছে; কিন্তু অন্য অনেক বিষয়ের মতো এখানেও আইনের প্রয়োগ ছিল না। তিনি বলেন, 'কিছু মানুষকে অভিযানে আটক করা হয়েছে ঘটনাস্থল থেকে। কিন্তু জুয়া খেলার মেশিনগুলো কারা আমদানির অনুমতি দিয়েছে? কোন আইনে দিয়েছে? রাজস্ব বোর্ড, কাস্টমস কোন আইনে এগুলো আনার অনুমতি বা ছাড়পত্র দিয়েছে? কীভাবে পরিবহন হলো? কারা সহযোগিতা করেছে আর কারা কোন আইনে লাভবান হয়েছে- এগুলোও খুঁজে বের করা উচিত।'