ঢাকার স্কুলছাত্রী রিশা হত্যায় একমাত্র আসামির মৃতু্যদন্ড

প্রকাশ | ১১ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
স্কুলছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশা হত্যা মামলার আসামি ওবায়দুল খানকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ফাঁসির আদেশ দেয়ার পর তাকে জেলহাজতে নিয়ে যায় পুলিশ -ফোকস বাংলা
রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার ওরফে রিশা হত্যা মামলায় একমাত্র আসামি ওবায়দুল খানকে মৃতু্যদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েস এই রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডও দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি ওবায়দুল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালত সূত্র জানায়, রায় ঘোষণা উপলক্ষে ওবায়দুলকে সকালে কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এ হত্যা মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক ইমরুল কায়েশ বলেন, ঘটনাটি একটি অসম প্রেম বলে মনে হয়েছে। ভালোবাসা যেন সহিংসহতায় রূপ নিতে না পারে সে জন্য আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃতু্যদন্ড দেওয়াই শ্রেয়। তিনি আরও বলেন, ওবায়দুল হচ্ছেন একজন টেইলার, রিশার বাবা একজন ব্যবসায়ী। সে ভালোবাসতে পারে। কিন্তু ভালোবাসা যেন এমন সহিংসতায় রূপ নিতে না পারে। এদিকে ঘাতক ওবায়দুলের মৃতু্যদন্ডের রায়ের খবরে আদালত চত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়েন রিশার মা। তিনি বলেন, 'রায়ে আমি খুশি। ফাঁসির রায় যেন দ্রম্নত কার্যকর করা হয়। আমার মতো যেন আর কোনো মায়ের কোল খালি না হয়।' অন্যদিকে রায় শোনার জন্য আদালতে উপস্থিত ছিল উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। রায় শুনে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং রায় দ্রম্নত বাস্তবায়নের দাবি জানান। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, পাঁচ-ছয় মাস আগে রিশা ও তার মা তানিয়া ইস্টার্ন মলিস্নকা মার্কেটে বৈশাখী টেইলার্সে কাপড় সেলাই করাতে যান। এ সময় তার মা ওই দোকানের রসিদের রিসিভ কপিতে ফোন নম্বর দিয়ে আসেন। ওই টেইলার্সের কর্মচারী ওবায়দুল রিসিভ কপি থেকে ফোন নম্বর নিয়ে রিশাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে বিরক্ত করত। রিশার মা এ বিষয়ে ওবায়দুলকে সতর্ক করেন। ২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট রিশা ও তার বন্ধু মুনতারিফ রহমান রাফি পরীক্ষা শেষে কাকরাইল ওভারব্রিজ পার হওয়ার সময় ওবায়দুল রিশাকে আবারও প্রেমের প্রস্তাব দেয়। রিশা তা প্রত্যাখ্যান করলে ওবায়দুল তাকে ছুরিকাঘাত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় রিশাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ আগস্ট মারা যায় রিশা। ছুরিকাঘাতের ঘটনায় ২৪ আগস্ট রিশার মা তানিয়া হোসেন বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেন। পরে মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর ওবায়দুলকে একমাত্র আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলী হোসেন। ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা মহানগর অষ্টম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবুল কাশেম আসামি ওবায়দুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। মামলায় ২৬ সাক্ষীর মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ২২ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে।