বিনা-১৭ ধান চাষে সফলতা

প্রকাশ | ১২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

ধামইরহাট (নওগাঁ) সংবাদদাতা
নওগাঁর ধামইরহাটে চলতি আমন মওসুমে বিনা-১৭ ধান চাষে ব্যাপক সফলতা পেয়েছে কৃষক। ধানের রোগবালাই না থাকায় এবং আগাম ধান পাকায় কৃষকরা সহজে এ ধান ঘরে তুলতে পারছে। আগাম ধান কাটার ফলে ওই জমিতে রবি শস্য চাষের প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ফলে একই জমিতে বছরে তিন ফসল চাষ করা সম্ভব হচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকে উপজেলা কৃষি বিভাগ দেশীয়ভাবে উদ্ভাবিত বিনা-১৭ ধান চাষে কৃষকদের বিভিন্নভাবে প্রণোদনা ও উৎসাহ প্রদান করছে। প্রথম বছর কৃষকগণ মাত্র ৭ হেক্টর, গত ২০১৮ সালে ২০ হেক্টর এবং এ বছর ৫০ হেক্টর জমিতে কৃষকগণ বিনা-১৭ জাতের ধান চাষ করেছে। এ ধান অনেকটা জিরাশাইলের মতো সরু। ভাত খেতে খুব সুস্বাদু। উচ্চ ফলনশীল ও খরা সহিষ্ণু এ জাতের ধান বরেন্দ্র অঞ্চলের জন্য বিশেষ উপযোগী। বিশেষ করে এ ধান চাষ করতে ২০-৩০ ভাগ সার এবং ৩০ ভাগ পানি খরচ কম হয়। এছাড়া ধান গাছ খাটো হয় এবং খুব শক্ত হওয়ার কারণে ঝড়ে ধানগাছ হেলে পড়ে না। উপজেলার আলমপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত শিববাটি গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন বলেন, দুই একর জমিতে তিনি বিনা-১৭ জাতের ধান তিনি চাষ করেছেন। গত বছরও তিনি এ ধান চাষ করেছিলেন। বর্তমানে ধান পাকতে শুরু করেছে। আশা করি ১ সপ্তাহের মধ্যে ধান কাটতে পারব। ধান কেটে ওই জমিতে রবি শস্য হিসেবে আলু চাষ করব। ফলে বছরে তিনি একই জমিতে তিনি ফসল চাষ করতে পারবেন। পশ্চিম শালুককুঁড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুস সামাদ বলেন, তিনিও ২ একর জমিতে বিনা-১৭ জাতের ধান চাষ করেছেন। এ ধানের রোগ বালাই কম। তাছাড়া সার ও পানি খরচ অনেক কম। কম সময়ে ধান ঘরে তোলা যায়। একরপ্রতি ৬৫-৭০ মণ হারে ফলন হবে বলে তিনি আশাবাদ করেন। ধান কাটার পর তিনি ওই জমিতে সরিষা চাষ করবেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সেলিম রেজা বলেন, বিনা-১৭ জাতের ধান একর প্রতি ৬৫ থেকে ৭০ মণ হারে ফলন হয়। এ এলাকার কৃষকগণ অধিকাংশ জমিতে ভারতের স্বর্ণা-৫, রঞ্জিত এবং মামুন স্বর্ণা ধান চাষ করে। এসব ধানের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম। বিনা-১৭ জাতের ধানের রোগ বালাই নেই বললেই চলে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। তাছাড়া মাত্র ১ শত ১২ দিন থেকে ১২০ দিনের মধ্যে ধান কাটা সম্ভব। \হকৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে উঠোন বৈঠক, হাট-বাজার সভা এবং গ্রম্নপভিত্তিক কৃষক সমাবেশ, গ্রাম কৃষক বন্ধু প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা, লিফলেট বিতরণ, কৃষি প্রদর্শনীসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের এ ধান চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। ফলে এলাকার কৃষকগণ এ ধানে চাষে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে।