এক বছরে দেশে ক্যানসারে আক্রান্ত দেড় কোটি মানুষ

প্রকাশ | ১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
গত এক বছরে বাংলাদেশে নতুন করে ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১ কোটি ৮ লাখ। এক্ষেত্রে পুরুষদের মধ্যে খাদ্যনালি, ফুসফুস, মুখমন্ডল এবং নারীদের মধ্যে স্তন ও জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্তের হার বেশি। বিশ্ব ক্যানসার পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র গেস্নাবকোন (জিসিও) এর- ২০১৮ সালের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রোববার দুপুরে ক্যানসার সচেতনতা মাস ২০১৯ উপলক্ষে রাজধানীর এক হোটেলে আয়োজিত আলোচনা সভায় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য জানান। এ সময় তারা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালে সারাবিশ্বে ১ কোটি ৮১ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৯৬ লাখ মানুষ মারা যায়। এমনকি প্রতি ৫ জনে ১ জন পুরুষ ও ১১ জনে ১ জন নারী মরণঘাতি এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্ত পুরুষদের মধ্যে প্রতি ৮ জনে ১ এবং নারীদের মধ্যে ১১ জনে ১ জন মারা যাচ্ছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশে শুধুমাত্র ফুসফুস ক্যানসারেই প্রতি বছর ১২ হাজার ৩৭৪ জন আক্রান্ত হন, মারা যান ১১ হাজার ৮৬১ জন। মূলত ক্যানসার সম্পর্কে মানুষের মধ্যে অজ্ঞতা, কুসংস্কার ছাড়াও পরিবেশ দূষণ, নিরাপদ সুষম খাদ্যের অভাব এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের ফলে ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এটি প্রতিরোধ করতে হলে ব্যাপক ভিত্তিতে গণ-সচেতনতার পাশাপাশি রোগটির চিকিৎসায় প্রাইমারি কেয়ার লেভেল ও প্রান্তিক পর্যায়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা জুরুরি। আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেলের অনকোলজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এ ক্যানসার সচেতনতা সভায় বক্তারা আরও বলেন, দেশে দিনদিন ক্যানসারের ব্যাপকতা বাড়লেও এর চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত ন্যাশনাল গাইড লাইন প্রণয়ন হয়নি। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য ছাড়া আক্রান্তদের কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। এই মুহূর্তে ১৭০টি ক্যানসার চিকিৎসাকেন্দ্র প্রয়োজন হলেও তা নেই। বর্তমানে ১৭ কোটি মানুষের জন্য মাত্র ১৫০ জনের মতো ক্যানসার চিকিৎসক রয়েছে। আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেলের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. এহতেশামুল হক খান বলেন, তাদের মেডিকেলে গত তিন বছরে ২ হাজার ৫০০ জনকে ক্যানসার চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালেই ৯৮২ জনকে স্ক্রিনিং করে ৮ শতাংশ রোগীর পজেটিভ ধরা পড়েছে। এ ধারাবাহিকতায় এবারও ক্যানসার সচেতনতা মাস উপলক্ষে আজ সোমবারর্ যালি, রোডশো ও স্ক্রিনিং কর্মসূচি, ১৪ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগে, ১৯ অক্টোবর কিশোরগঞ্জের ভৈরবে, ২৯ অক্টোবর গ্রামীণফোনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ও ৩০ অক্টোবর ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের বিনামূল্যে স্ক্রিনিং ও স্বল্পমূল্যে ক্যানসার চিকিৎসা দেওয়া হবে। উলেস্নখ্য, সভায় ক্যানসার সার্জারি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মোস্তাক হোসেন প্রিন্স, মেডিসিনি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আলী নূর, ডা. আলী নাফিস ফরিদ, ডা. নুরে আম্বিয়া ছাড়াও অন্যান্য চিকিৎসক ও মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।