বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় কী কাজ করছে?

প্রকাশ | ২০ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

বিবিসি বাংলা
বাংলাদেশের রাজশাহী সীমান্তে পদ্মা নদীতে বিজিবি এবং বিএসএফ-এর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় একজন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী নিহত হওয়ার একদিন পর শুক্রবার বিজিবি'র উচ্চ পর্যায় থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, পদ্মা নদীর তীরে সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের কাছে এ বার্তা দেয়া হয়েছে যে তাদের আতংকিত হবার কোনো কারণ নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিজিবির কর্মকর্তারা ঘটনাটিকে 'অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুর্ঘটনা' বলে বর্ণনা করেছেন। তবে প্রশ্ন উঠছে যে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের মধ্যে যৌথ টহলসহ সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত বিভিন্ন ব্যবস্থা থাকার পরও এ ধরনের ঘটনা কীভাবে ঘটতে পারল। এসব ব্যবস্থাপনা ব্যর্থ হয়েছে কিনা, এই প্রশ্নও তুলেছেন বিশ্লেষকরা। রাজশাহীর চারঘাট এলাকায় সেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবি'র উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত দল। বিজিবির তদন্তকারীরা পদ্মা নদীর তীরবর্তী সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী সাধারণ লোকজনের সাথেও কথা বলেন। ঘটনাটি কীভাবে ঘটল তা নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যেহেতু দুই ধরনের বর্ণনা দিচ্ছে সে কারণে দুই পক্ষ আলাদা আলাদাভাবে তদন্ত শুরু করেছে বলে বিজিবির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, তদন্ত শেষে সমস্যা চিহ্নিত হলে তা নিয়ে দু'পক্ষের উচ্চপর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে। সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করেন মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন। তিনি বলছিলেন, দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সমন্বিত পদক্ষেপগুলো ব্যর্থ হচ্ছে বলেই এ ধরনের ঘটনাগুলো ঘটছে। 'দু'পক্ষের ব্যবস্থায় ঘাটতি আছে। সে কারণে সীমান্তে গোলাগুলি বা নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। কখনও কম বা বেশি। কিন্তু একেবারে থেমে যাচ্ছে না।' বিজিবি এবং বিএসএফ-এর মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠক এখন নিয়মিত বছরে দু'বার হয়ে থাকে। কোনো সমস্যা হলে দু'পক্ষের মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তা সমাধান করা হয়। সীমান্তে যৌথ টহল এবং তথ্য আদান-প্রদানের ব্যবস্থাও কার্যকর রয়েছে। আগের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন দু'পক্ষের মধ্যে সম্পর্ক অনেক ভালো বলেও বলা হয়ে থাকে। এরপরও সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু বিজিবির রাজশাহীর কমান্ডার লে. কর্নেল ফেরদৗস মাহমুদ পদ্মা নদীতে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে গোলাগুলির ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে বর্ণনা করেছেন। এ কারণে দুই বাহিনীর পদক্ষেপগুলো ব্যর্থ হয়নি বলে তিনি দাবি করেছেন। 'এ ধরনের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে না। এটা একটা দুর্ঘটনা। আমার জানা মতে, গত এক যুগ বা দুই যুগে এমন ঘটনা ঘটেনি।' বিজিবি কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজশাহী সীমান্তে তারা সতর্ক রয়েছেন- তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তারা উলেস্নখ করেছেন, পদ্মা নদীর তীরে বসবাসকারীরা যাতে আতঙ্কিত না হয়, সেই বার্তা তাদের দেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঐ সীমান্তবর্তী মানুষের সাথে সাথে আলোচনা করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, রাজশাহীর ঘটনা দু'দেশের মধ্যে সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে না বলে বাংলাদেশ বিশ্বাস করে।