বন্ধ ক্যাম্পাসে ক্ষোভ বিক্ষোভ

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই জাবিতে প্রতিবাদী কনসার্ট

প্রকাশ | ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

জাবি প্রতিনিধি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের বাসভবনের সামনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রতিবাদী কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয় -স্টার মেইল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলার পর আন্দোলন দমনে কঠোর অবস্থানে যায় প্রশাসন। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে আবাসিক হল বন্ধ ও  ক্যাম্পাসে সভা-সামাবেশ নিষিদ্ধ করে। তবে এসব নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ অব্যাহত রেখেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রতিবাদী কনসার্ট। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর থেকে একে একে ক্যাম্পাসে গিয়ে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। এরপর বেলা ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্টার ভবনের সামনে থেকে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবনসহ কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। বিক্ষোভ মিছিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকশ শিক্ষক-শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন। মিছিলপরবর্তী সমাবেশে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের দুর্নীতি তদন্তের বিষয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের বক্তব্যের সমালোচনা করেন শিক্ষকরা। তারা বলেন, তারা যে অভিযোগ করছেন তা তদন্ত করার দায়িত্ব সরকারের। তারা গোয়েন্দা সংস্থার লোক নন। এই পরিস্থিতিতে সহিংসতাকে উসকে দিতে তৃতীয় পক্ষ সুযোগ নিতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন বক্তারা। সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী যে কথা বলেছেন সেই কথার সঙ্গে তারা দ্বিমত পোষণ করছেন। উনি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রমাণ সহকারে লিখিত অভিযোগ করতে বলেছেন। তারাতো বিষয়টি প্রমাণ করতে আসেনি। তদন্ত করে এই অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্টদের। এছাড়া প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী কনসার্ট করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সমানে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদী কনসার্টে সিনা হাসান, আহমেদ হাসান সানী, তুহিন কান্তি দাস, নাইম মাহমুদ, মূইজ মাহফুজ প্রমুখ সংগীতশিল্পী উপস্থিত ছিলেন। এদিকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রমাণসহ অভিযোগ করার কথা বলায় মুখ খুলেছে শাখা ছাত্রলীগের একাধিক নেতা। শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন। শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হামজা রহমান অন্তর বলেন, 'জাবি শাখা ছাত্রলীগ প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাসের সাথে খেলা করছে। আমরা বার বার বলে আসছি আর্থিক কেলেঙ্কারির সত্যতা রয়েছে। স্বয়ং উপাচার্য, তার স্বামী, ছেলে আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত।' এছাড়াও অভিযুক্তদের ৮, ৯ ও ১০ আগষ্টের কল লিস্ট চেক করলেই প্রমাণ পাওয়া যাবে বলে দাবি করেন এই নেতা। এর আগে শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সামনে একাধিক বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগাভাগির স্বীকারোক্তি দেন। একাধিক স্বীকারোক্তিতে তিনিও ওই আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে উপাচার্য, তার স্বামী ও সন্তানের সংশ্লিষ্টতার কথা দাবি করেন। এছাড়া শাখা ছাত্রলীগের কোন নেতা কত টাকা ভাগ পেয়েছেন তাও স্পষ্ট বক্তব্যে সাংবাদিকদের জানান তিনি।