জাতীয় শ্রমিক লীগেও নতুন নেতৃত্ব আসছে আজ সম্মেলন

প্রকাশ | ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

সোহেল হায়দার চৌধুরী
সদ্য শেষ হওয়া বাংলাদেশ কৃষক লীগের মতো জাতীয় শ্রমিক লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত সংগঠনটির শীর্ষ পদে কারা আসীন হবেন তা নিশ্চিত না হলেও স্বচ্ছ, অভিযোগহীন, ত্যাগী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের এই সহযোগী সংগঠনটি। শীর্ষ নেতৃত্বে থাকা ব্যক্তিবর্গ আবারো সংগঠনের একই পদে আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করলেও কেন্দ্রীয় ও তৃণমূল নেতারা পরিবর্তন চান। পরিবর্তনের ধারায় সংগঠনটির সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে কারা আসছেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে সবকিছু নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার উপর। সাংগঠনিক নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। প্রায় ৭ বছর পরে আজ জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় বা জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠেয় এই জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও শ্রমিক লীগের সাংগঠনিক নেতা শেখ হাসিনা। সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ৮ হাজার ৮০০ ডেলিগেটসহ ১৬ হাজার অতিথির জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। ২০১২ সালের ১৯ জুলাই শ্রমিক লীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সম্মেলনে শুক্কুর মাহামুদকে সভাপতি ও মো. সিরাজুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। তিন বছরের কমিটি দীর্ঘ সাত বছরেরও বেশি সময় পার করায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। এই ক্ষোভ ও হতাশাসহ কমিটিতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের আমলনামা পর্যালোচনা করে এবারের নেতৃত্ব ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শীর্ষ পদে শ্রমিকবান্ধব ও দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তিকে নেতা হিসেবে প্রাধান্য দেয়া হবে। একই সঙ্গে সংগঠনে প্রবীণ ও নবীনের মেলবন্ধন ঘটানোর ইচ্ছাও রয়েছে তার। সে লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা এবং নিজস্ব সোর্স দিয়ে ইতোমধ্যে তালিকা যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। আজ বিকালে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে নাম ঘোষণা করা হবে। এরপর নতুন কমিটি পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা তৈরি করে শেখ হাসিনার অনুমোদন নিয়ে তা প্রকাশ করবে। তবে কমিটির আকার ছোট হওয়ায় আজই পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে এমন আলোচনাও শোনা যাচ্ছে। এদিকে নেতৃত্বের লড়াইয়ে সংগঠনের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি শুক্কুর মাহামুদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম ছাড়াও প্রায় এক ডজন নেতা রয়েছেন। শুক্কুর মাহমুদ ও সিরাজুল ইসলাম আবারও দায়িত্ব পেতে আগ্রহী। এছাড়া সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ, মো. জহিরুল ইসলাম চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির, খান সিরাজুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আলম মিলকী, প্রচার সম্পাদক আলহাজ কে এম আযম খসরু, মহিলা সম্পাদিকা শামসুন্নাহার ভুইয়াসহ বেশ কয়েকজন। ধারণা করা হচ্ছে, সংগঠনের বর্তমান কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু বা সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ নতুন সভাপতি, অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বা খান সিরাজুল ইসলাম নতুন সাধারণ সম্পাদক হতে পারেন। মহিলা সম্পাদিকা শামসুন্নাহার ভূঁইয়া যুগ্ম সম্পাদক হবার সম্ভাবনা রয়েছে। গতকাল শুক্রবার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর শ্রমিক লীগ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মাঝে সাজ সাজ রব। বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে নানা হিসাব-নিকাশ করছেন। আলোচনা-সমালোচনা করছেন বিভিন্ন নেতার কর্মকান্ড নিয়ে। শীর্ষ নেতারা বিভিন্নভাবে অন্যান্য পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মন জয় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীরা শ্রমিক-বান্ধব, তরুণ প্রজন্মের শ্রমিক এবং নেতাকর্মীদের সাথে মানিয়ে নেয়ার মতো নতুন নেতৃত্ব উঠে আসার পক্ষে মত ব্যক্ত করেছেন। তবে সবাই ধারণা করছেন কৃষক লীগের মতো জাতীয় শ্রমিক লীগের শীর্ষ পর্যায়েও বড় ধরনের পরিবর্তন আনবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।