আবরারের মা অভিযুক্ত সবার ফাঁসি চান

প্রকাশ | ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আবরার ফাহাদ
যাযাদি ডেস্ক আবরারের মা রোকেয়া খাতুন ছেলের নৃশংস হত্যার ঘটনার পর টিভির সামনে যান না। ছেলের নিথর দেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখলে তিনি নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন না। তবু বুধবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাড়িতে ছেলে হত্যার মামলার অভিযোগপত্র দেওয়ার খবর দেখতে ছোট ছেলেকে নিয়ে টিভির সামনে বসেছিলেন তিনি। দুচোখ বেয়ে অশ্রম্ন গড়িয়ে পড়ছে রোকেয়া খাতুনের। থেমে থেমে বিলাপ করছিলেন। পাশেই বসে থাকা আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ স্তব্ধ। এ সময় আবরারের বাবা বরকতউলস্নাহ কর্মস্থলে ছিলেন। বেলা ১টার দিকে বেসরকারি একটি চ্যানেলে সংবাদের শুরুতেই যখন আবরার হত্যার সংবাদ প্রচার হতে থাকে, তখন মা রোকেয়া খাতুন দুহাতে বুকে চাপড়ে কাঁদতে থাকেন। কাছের দুজন স্বজন সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা পাচ্ছিলেন না। ১১ জন আসামি সরাসরি হত্যায় অংশ নেওয়ার বিষয়টি জানার পর মায়ের আকুতি, 'আহারে, আমি ভালো ছেলেকে নিজে হাতে বুয়েটে রেখে এসেছিলাম। ওরা এগারজন (হত্যায় অংশ নেওয়া আসামি) মিলে বাইড়ে (পিটানো) মারইলো। আমারে বললে ছেলেকে না পড়িয়ে বাড়িতে নিয়ে আসতাম। জমি চাষ, ব্যবসা করিয়ে ছেলেকে কাছে আগলে রাখতাম। ওরা কেন মাইরলো?' হত্যার ঘটনায় ২৫ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়ার বিষয়ে আবরারের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, যারা সরাসরি এবং বাইরে থেকে ছেলেকে মেরেছে তাদের প্রত্যেকের শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। দ্রম্নত অভিযোগপত্র দেওয়ায় পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে আবরারের ছোট ভাই আবরার ফায়াজ বলে, 'যে চারজন আসামি পলাতক, তাদের দ্রম্নত গ্রেপ্তার করা হোক। আর বুয়েট প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ যে মন্তব্য করেছে, সে ব্যাপারে আশা করব, ভবিষ্যতে যাতে বুয়েটে এ রকম ঘটনা না ঘটে, সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।' ফায়াজ বলে, 'যত দ্রম্নত সম্ভব বিচারকাজ শেষ করতে হবে এবং শাস্তি যেন দ্রম্নত কার্যকর হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কথামতো মামলাটি যেন দ্রম্নত বিচার ট্রাইবু্যনালে বিচার হয়।' মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে আবরারের বাবা বরকত উলস্নাহ বলেন, 'অভিযোগপত্র এখনো দেখিনি। আপনার কাছ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমার বিষয়টি জানলাম। এতে খুশি। তবে দ্রম্নত বিচার ট্রাইবু্যনালে বিচার এবং আসামি রায় ঘোষণার আগ পর্যন্ত কারাগারে থাকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।' বুধবার দুপুরে মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম ২৫ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে জানান।