পেঁয়াজের ডাবল সেঞ্চুরি

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
পেঁয়াজের বাজারে আগুন লেগেছে। আর এ কারণে মানুষের ভিড় বেড়েছে টিসিবির ট্রাকের সামনে। ছবিটি বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সচিবালয়ের পশ্চিম গেটের সামনে থেকে তোলা -যাযাদি
এক লাফে ডাবল সেঞ্চুরির মুখ দেখল পেঁয়াজ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে। সকালেও কোনো কোনো বাজারে দাম ছিল ১৮০ টাকা; কিন্তু বিকেলে কোনো কোনো খুচরা বাজারে দাম ২২০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। গত সেপ্টেম্বরের শেষ থেকে অস্থির হয়ে উঠে পেঁয়াজের বাজার। ২৯ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত। বাংলাদেশ আমদানির ক্ষেত্রে ভারতের ওপরই নির্ভরশীল। ফলে দেশের বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়তে থাকে। তখন দুই দিনের মধ্যে কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা ছাড়ায় দেশি পেঁয়াজের দাম। ভারতীয় পেঁয়াজও বিক্রি হতে থাকে ১০০ টাকার কাছাকাছি দরে। অবশ্য বাজার তদারকি ও হুজুগ শেষের পর দাম আবার কিছুটা কমে। তবে গত কয়েক দিন ধরে আবার লাগামহীন হয়ে পড়েছে পেঁয়াজের দাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, এক পালস্না (৫ কেজি) পেঁয়াজ ১০০০ টাকা দর হাঁকছেন বিক্রেতারা। বেশির ভাগ ক্রেতা মলিন মুখে এক কেজি পেঁয়াজ কিনে ফিরে যান। দাম কেন বেড়েছে জানতে চাইলে বেশির ভাগ বিক্রেতা জানান, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ নেই। দেশি পেঁয়াজের মজুতও প্রায় শেষ। তার ওপর ঘূর্ণিঝড়ে পেঁয়াজ পরিবহণে বিঘ্ন ঘটায় বাজারে সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম বেড়েছে। কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১ কেজি ২০০ টাকা দরে। অপেক্ষাকৃত খারাপ মানের ছোট পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজি দরে। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা ক্রেতা ফাতেমা জানান, বাড়িতে একটিও পেঁয়াজ নেই। সকালে পেঁয়াজ কিনতে বাসার পাশের দোকানে \হগিয়ে শোনেন এক কেজি পেঁয়াজ ১৯০ টাকা। পরে এক কেজি পেঁয়াজ কিনে বাড়ি ফিরেছেন তিনি। খিলগাঁওয়ের আরেক ক্রেতা বলেন, সকালে ১৭০ টাকা দিয়ে এক কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলেন। দাম বাড়বে শুনে আবার ওই দোকানে যান, দোকানি বলেন ১ কেজি এখন ১৯০ টাকা। এই হচ্ছে অবস্থা। রামপুরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানান ক্রেতারা। আমিন রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, বেলা ১টার দিকে ২২০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছেন তিনি। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহেও ছিল ১১৫ থেকে ১২৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজের দাম ছিল ১০৫ থেকে ১১৫ টাকা। শ্যামবাজারের আমদানিকারক ও পাইকারি বিক্রেতা আবদুল মাজেদ বলেন, চাহিদার বিপরীতে জোগান একদম কম। দেশি পেঁয়াজ এখনো উঠেনি। ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি নেই। সব মিলিয়ে অস্থির বাজার। গত মঙ্গলবার সংসদে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন বলেছিলেন, 'শিগগিরই পেঁয়াজের মূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসবে। উপজেলা পর্যায়ে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।' তিনি বলেন, 'এখন লিন সিজন (পেঁয়াজের মৌসুম শুরু হওয়ার আগমুহূর্ত) চলছে। এ সময় একটা সংকট থাকে। আমাদের নতুন পেঁয়াজ এখনো ওঠেনি। কিছুদিনের মধ্যে নতুন পেঁয়াজ উঠবে। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় মিয়ানমার ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজ আমদানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ভারত থেকেও আমদানি চালু হয়েছে। পেঁয়াজের বাজার যেটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল, সেটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালু আছে, কোথাও কেউ যেন বেশি দামে বিক্রি করতে না পারে।' তবে এ আশ্বাসের পরও ঝাঁঝ বেড়েছে পেঁয়াজের দামে। কেবল রাজধানী নয়, বাইরেও পেঁয়াজের বাজারে আগুন। জামালপুরের প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জামালপুর শহরের সকাল বাজার, শফি মিয়ার বাজার, বানিয়া বাজার, বউ বাজার ও বড় বাজার ঘুরে প্রকারভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। তবে ওইসব বাজারের বেশিরভাগ খুচরা দোকানে পেঁয়াজ পাওয়া যায়নি। কিছু দোকানে পেঁয়াজ থাকলেও ক্রেতারা দাম শুনে অনেকেই চলে যাচ্ছেন। রোজিনা খাতুন নামে জামালপুরের এক গৃহিণীর ভাষ্য, বাজারের বেশিরভাগ খুচরা দোকানেই পেঁয়াজ নেই। জামালপুর শহরের সকাল বাজার পুরোটা ঘুরেও পেঁয়াজ কিনতে পারছিলেন না তিনি। অবশেষে সকাল বাজারের খুচরা দোকানদার সাজু মিয়ার কাছ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনেন তিনি। রোজিনা খাতুন আক্ষেপ করে বলেন, 'মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ কেমনে কেনে পেঁয়াজ। দেখেন বাজারে ২০০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ নিলাম। ২০০ টাকায় পেঁয়াজ কিনলে অন্য সবজি কীভাবে কিনব। এক কেজিতে ৫০ থেকে ৬০টি পেঁয়াজ পাওয়া যায়। দেখেন, প্রতিটি পেঁয়াজ প্রায় তিন টাকা করে দাম পড়ছে। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের লোকজন কোথায় যাব! আগের চেয়ে রান্নায় পেঁয়াজ কম দিতে হচ্ছে।' জামালপুর শহরের সবজি বিক্রেতা সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, 'জামালপুর শহরে প্রতিদিন ৯০ থেকে ১০০ মণ পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে সরবরাহ কম থাকায় প্রতিদিন মাত্র ২০ থেকে ৩০ মণ পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। সরবরাহ কম থাকায় ক্রেতারা পেঁয়াজ পাচ্ছেন না। অনেক আড়তদার পেঁয়াজ এখন পাইকারি কিনে আনছেন না। পাবনা থেকে ১৭৫ টাকা কেজিতে এখন পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে। তারপর পরিবহণ খরচ রয়েছে। সব মিলিয়ে আমাদের আড়তে এসে পেঁয়াজের কেজি পড়ছে ১৮০ টাকা। তাহলে আমরা কত টাকা দরে বিক্রি করব। চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম থাকায় পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি।' চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী বাজারে পেঁয়াজের কেজি ১৮০ টাকা। গত বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাটহাজারীর খুচরা ও পাইকারি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি করা হয় ১১০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু গতকাল সকাল থেকে ওইসব দোকানে পেঁয়াজ বিক্রি করা হচ্ছে ১৮০ টাকায়। এক লাফে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৭০ টাকা। চট্টগ্রামে মোহাম্মদ রুবেল নামে এক দোকানদার বলেন, বুধবার দোকানে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ১১০ টাকায়। বিকেলে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাইকারি দোকানে পেঁয়াজ কিনতে ফোন করে জানতে পারেন দাম বেড়েছে। খাতুনগঞ্জে প্রতি কেজি পেঁয়াজ পাইকারি দরে কিনতে হয়েছে ১৬০ টাকায়। গাড়ি ভাড়াসহ প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে খুচরা বাজারে ১৮০ টাকা দরে। রুবেল বলেন, আগে প্রতিদিন দোকানে দুইশ থেকে আড়াইশ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হতো। এখন বিক্রি করছেন ২০ থেকে ৩০ কেজি পেঁয়াজ। পাইকাররা তাদের বলছেন মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আসছে না, তাই পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণ। অভয়নগর (যশোর) সংবাদদাতা জানান, যশোরের অভয়নগরে এক কেজি পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ২২০ টাকায়। গত মঙ্গলবার যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা, বুধবার তা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা। বৃহস্পতিবার সেই পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ২২০ টাকায়। হঠাৎ উপজেলার সব বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার এবং মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে উপজেলার প্রধান বাজার নওয়াপাড়াসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁয়াজ কিনতে আসা ক্রেতারা সরকারসহ স্থানীয় বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ ব্যাপারে উপজেলার বুইকরা গ্রামের তৌফিক ইসলাম বলেন, 'বুধবার ১৮০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছি, গতকাল বৃহস্পতিবার সেই পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়।' বাজারের অসংখ্য ক্রেতার অভিযোগ বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা না থাকায় খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদের খেয়ালখুশি মতো দাম হাঁকছেন। দ্রম্নত সময়ের মধ্যে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা কার্যকর করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা। \হ নওয়াপাড়া বাজারের খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী শেখ আবদুলস্নাহ জানান, পাইকারি দোকানে গিয়ে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ২০০ টাকা চাওয়ায় না কিনে ফিরে এসেছেন। তিনি স্বীকার করেন গত দুই দিন আগে ১২০ টাকা দরে পেঁয়াজ কিনে তা ১৪০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। নওয়াপাড়া বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী ফরিদ সরদার জানান, পাইকারি মোকামে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় পেঁয়াজ কেনা সম্ভব হয়নি। অপর আড়তদার বাচ্চু মিয়া বলেন, তার প্রতিষ্ঠানে পেঁয়াজ মজুত নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী বলেন, 'গতকাল সকালেই বাচ্চু মিয়ার আড়ত থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছি। তার গুদামে পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজ মজুত রয়েছে।' পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, পেঁয়াজ মসলাজাতীয় খবার হলেও পটুয়াখালীর বাজারে বর্তমানে বিদেশি ফলের থেকেও বেশি দামে পেঁযাজ বিক্রি হচ্ছে। কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। আর সাধারণ ক্রেতারা এ ক্ষেত্রে অনেকটাই অসহায়। পটুয়াখালীর বিভিন্ন মুদিদোকানে বৃহস্পতিবার প্রতিকেজি পেঁযাজ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে তদারকি চলছে বলে দাবি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের। পটুয়াখালী শহরের বিভিন্ন ফলের দোকান ঘুরে দেখা যায়, নাসপাতি প্রতিকেজি ২০০ টাকা, লাল আপেল প্রতিকেজি ১৪০ টাকা, সাদা অপেল প্রতিকেজি ১৮০ টাকা, কমলা আকারভেদে ১৪০ থেকে ১৫৭ টাকা, তরমুজ প্রতিকেজি ৮০ টাকা, এবং পেয়ারা প্রতিকেজি ৮০ টাকা দড়ে বিক্রি হলেও শহরের নতুন বাজার, পুরান বাজার এবং নিউ মার্কেটে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে প্রতিকেজি পেঁয়াজ ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বছরের অন্য সময়গুলোতে মুদি দোকানে বস্তায় বস্তায় করে ঁেপয়াজ প্রদর্শন করে রাখলেও এখন অল্প করে কিছু পেঁয়াজ সাজিতে প্রদর্শন করে রেখেছে। আর পেঁয়াজের দামদর নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে মুদি দোকানিরা অনেকটাই অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা জানান, বুধবার পেঁয়াজের বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান এবং ৫ ব্যববসায়ীকে জরিমানার পর বৃহস্পতিবার মির্জাপুরের বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে। একরাতের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৪০ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতারা দিশেহারা। সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজিতে মির্জাপুরের বিভিন্ন বাজারে গত দুই মাস যাবৎ পেঁয়াজের ঊর্ধ্বমূল্য চলে আসছে। নিয়ন্ত্রণহীনভাবে পেঁয়াজের বাজার চালু থাকায় ক্রেতারা হয়ে পড়ে দিশেহারা। এ নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিকবার সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য এবং সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজি ধরতে বুধবার মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি ) মো. মঈনুল হকের নেতৃত্বে মির্জাপুর, দেওহাটা, জামুর্কী ও পাকুল্যা বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। অভিযানকালে পাঁচ পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পলাশ (নরসিংদী) প্রতিনিধি জানান, সারাদিন ২০০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করলেও মোবাইল কোর্ট আসার পর এ চিত্র পাল্টে ১৩০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করা হয়। মাত্র একদিনের ব্যবধানে নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় লাগামহীনভাবে বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বৃহস্পতিবার সকালে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। লাগামহীন দাম বাড়ায় অনেক ক্রেতা রাগে-ক্ষোভে পেঁয়াজ না কিনেই বাজার থেকে ফিরে আসছেন। আবার অনেকটা বাধ্য হয়েই উচ্চ দামে এসব পেঁয়াজ কিনছেন। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির খবর পলাশ উপজেলা প্রশাসনের কাছে পৌঁছালে বৃহস্পতিবার বিকেলে পলাশের ঘোড়াশাল বাজার ও ঘোড়াশাল সাদ্দাম বাজারে পেঁয়াজের উপর মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে আসেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা আলী। তিনি বাজারে ঢোকার সাথে সাথেই দোকানদাররা পেঁয়াজের দাম ১৩০ টাকা কেজি করে ফেলেন। পরে উপস্থিত ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেই লোকজন পেঁয়াজের দোকানে ভিড় করতে থাকেন পেঁয়াজ কিনতে। পরে ১৩০ টাকা কেজি দরে ক্রেতারা লাইনে দাঁড়িয়ে পেয়াজ ক্রয় করেন। এদিকে এ সময় অধিক দামে বিক্রির অভিযোগে কয়েকটি দোকানকে জরিমানা করা হয়।