বিকট শব্দে চোখের সামনেই সব শেষ

প্রকাশ | ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
মঞ্জুর হোসেন
'জনতা ফার্মেসির পাশে আমার টং দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে চোখের সামনেই সব শেষ। আমি শোকেসের নিচে চাপা পড়েছি। লোকজন এসে টেনে বের করাতে বেঁচে গেলাম। পাশে রংমিস্ত্রির মরদেহ পড়ে আছে। যিনি কিছুক্ষণ আগে পান নিয়েছিল আমার কাছ থেকে!' চট্টগ্রাম নগরের পাথরঘাটার ব্রিক ফিল্ড রোডের 'বড়ুয়া ভবনে' রহস্যজনক বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত সামনের বাদশা মিঞা ভবনের টং দোকানি মঞ্জুর হোসেন (৪৫) এভাবেই ঘটনার বর্ণনা দেন। তিন ছেলের বাবা মঞ্জুর গলিরই স্থায়ী বাসিন্দা। তার শার্টে রক্তের ছাপ। পায়ে আঘাতের চিহ্ন। কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। বললেন, 'জীবনে চোখের সামনে এতগুলো মানুষের মৃতু্য, এমন ধ্বংসযজ্ঞ দেখিনি। প্রাণে বেঁচেছি এর জন্য আলস্নাহর কাছে হাজার শোকরিয়া।' বাদশা মিঞা ভবনের নিচতলার জনতা ফার্মেসির সামনেই রক্তের ছাপ। শোকেসের কাচ ভেঙে তছনছ। বড়ুয়া ভবনের ভাঙা দেয়ালের টুকরা ফার্মেসির ভেতরই। মালিক টিটু কুমার নাথ বলেন, 'ফার্মেসির স্টাফ অনুপম ঘোষ সকালে ঝাড়ু দিচ্ছিল। তখনই দুর্ঘটনা। ভাগ্য ভালো অনুপম দোকানের ডানপাশের গ্রিলের পেছনে ছিল। বামপাশে থাকলে বাঁচত না।' অনুপম বলেন, 'ঈশ্বরের কৃপায় এ যাত্রা বেঁচে গেলাম। এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হব কখনো ভাবনাতেই আসেনি। একটি শব্দ, তারপর ধুলোবালির ঝড়। চোখে কিছুই দেখতে পেলাম না।' বড়ুয়া ভবনের তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া রিপন নাগ (৪৮)। বললেন, 'প্রচন্ড শব্দে ভবনটি কেঁপে উঠল। আমরা কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। সবাই শকের মধ্যে ছিলাম। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন গিয়ে বের করে আনলেন।' তিনি বলেন, '৮ সদস্যের পরিবার নিয়ে ভাড়ায় থাকি ১৫ হাজার টাকায়। সমস্যা হচ্ছে আমার ভাতিজা পিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। আমরা ঘরে ঢুকতে পারছি না। আজ সকালে বিস্ফোরণের আগে সে পরীক্ষা দিতে বের হয়েছিল। ফিরে এসে কোথায় পড়বে কী জানি।'