করমেলা: ২৬১৩ কোটি টাকা আদায়, রিটার্ন বেড়েছে ৩৪%

প্রকাশ | ২১ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৯, ০০:২৮

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক উৎসাহ-উদ্দীপনায় শেষ হলো আয়কর মেলা। এক সপ্তাহ আগে ১৪ নভেম্বর সারাদেশে শুরু হয়েছিল এই মেলা। শেষ দিন বুধবার ঢাকায় রাত ৮টা পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিয়েছেন করদাতারা। এবারের মেলায় সবমিলিয়ে ৬ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫ জন করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন। কর আদায় হয়েছে ২ হাজার ৬১৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। হিসাব করে দেখা গেছে, গতবারের মেলার চেয়ে এবার কর আদায় বেড়েছে ৬ শতাংশ। আর রিটার্ন জমার পরিমাণ বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এবার ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৫৭৩ জন রিটার্ন জমা দিয়েছিলেন। কর আদায় হয়েছিল ২ হাজার ৪৬৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। শেষ দিন মেলায় মোট ৫৯৭ কোটি ১ লাখ ৬৪ হাজার ৫৪৮ টাকার কর আদায় হয়েছে। আয়কর বিবরণী জমা দিয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার ১৮৫ জন। কর সংক্রান্ত সেবা নিয়েছেন ৩ লাখ ৫০ হাজার ৭৯৫ জন। নতুন ইটিআইএন নিয়েছেন ৬ হাজার ১৩০ জন। সবমিলিয়ে এই সাত দিনে মোট কর আদায় হয়েছে ২ হাজার ৬১৩ কোটি ৪৬ লাখ ৮৫ হাজার ৬৬৮ টাকা। ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৯৫ জন করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন। কর সংক্রান্ত সেবা নিয়েছেন ১৮ লাখ ৬৩ হাজার ৩৮৭ জন। সপ্তাহব্যাপী মেলায় নতুন ইটিআইএন নিয়েছেন ৩২ হাজার ৯৬১ জন। মঙ্গলবারের মেলা শেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেষ দিনেও করদাতাদের পদচারণায় মুখর ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। সকাল ৯টায় মেলা শুরুর অনেক আগেই করদাতারা মেলা প্রাঙ্গণে হাজির হতে থাকেন। করদাতাদের সুবিধার্থে সকাল ৮টা থেকেই মেলার কার্যক্রম শুরু করা হয় এবং বিকাল ৫টার পরিবর্তে বিরতিহীনভাবে রাত ৮টা পর্যন্ত কর সেবা প্রদান করা হয়। মঙ্গলবার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল শেষ দিন মেলা রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে। বর্ধিত সময়ের পরও রিটার্ন বুথগুলোতে কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়। প্রচন্ড ভিড় থাকা সত্ত্বেও সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে রিটার্ন জমা দিতে পেরে করদাতাদের মুখে ছিল স্বস্তির ছাপ। আয়কর মেলার ইতিহাসে রেকর্ড সংখ্যক আয়কর রিটার্ন দাখিল, কর জমা এবং করদাতাদের ব্যাপক উপস্থিতির মধ্য দিয়ে আয়কর মেলার সফল পরিসমাপ্তি হলো বলে দাবি করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। ঢাকায় বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, করদাতা এবং সেবাগ্রহীতাসহ সকল পর্যায়ের মানুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল মেলা। সকাল থেকেই করদাতাদের সরব উপস্থিতি ছিল লক্ষ্যণীয়। এবার করদাতাদের ব্যাপক সাড়ার মধ্য দিয়ে দেশের ৮টি বিভাগ, ৫৬টি জেলা এবং ৫৬টি উপজেলাসহ মোট ১২০টি স্পটে আয়কর মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। \হদুপুরে মেলা প্রাঙ্গণে এক অনুষ্ঠানে বৃহৎ আয়কর ইউনিটের (এলটিইউ) আওতাধীন ২১টি ব্যাংক, বিমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ২৯৩ কোটি টাকার আয়করের পে-অর্ডার রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার হাতে হস্তান্তর করেন। এ সময় এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, মেলার মতো হয়রানিমুক্ত কর সেবা আয়কর অফিসেও পাওয়া যাবে। ঝামেলাবিহীনভাবে কর রিটার্ন জমা দেয়ার অনুকূল পরিবেশ পাওয়ার কারণে করদাতারা আয়কর মেলাকে নির্ভরযোগ্য মনে করেন বলে জানান তিনি। অনুষ্ঠানে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে এনবিআর চেয়্যারম্যান বলেন, 'আবুল হোসেন বৃহৎ আয়কর ইউনিটের ব্যক্তি পর্যায়ের সর্বোচ্চ করদাতা। তিনি এ বছর ৩০ কোটি টাকারও বেশি আয়কর দিয়েছেন।' কর-জিডিপির আনুপাতিক হার বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমাদের কর-জিডিপি ১০ থেকে ১১ শতাংশ। ২০২৫ সালে কর-জিডিপি ১৫ শতাংশ এবং ২০৩০ সালে ২০ শতাংশ নিয়ে যেতে চাই। মেলার সমন্বয়ক রাজস্ব বোর্ডের সদস্য কালিপদ হালদার মেলা সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য করদাতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে মেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন বাহিনীর র্(যাব, পুলিশ, আনসার, ফায়ার ব্রিগেড, রোভার স্কাউটস) সদস্যসহ কর বিভাগের সব স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিনন্দন জানান।