বরযাত্রা থেকে শেষযাত্রা

মুন্সীগঞ্জে বাস-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে একই পরিবারের ৭ জনসহ নিহত ৯

প্রকাশ | ২৩ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে শুক্রবার বরযাত্রীবাহী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। ছবিতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের উদ্ধার তৎপরতা -যাযাদি
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বরযাত্রীবাহী একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষে ৯ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ষোলঘর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে একই পরিবারের ৭ জনসহ ৯ জনই মাইক্রোবাসের যাত্রী। নিহতদের মধ্যে বর রুবেলের বাবা আ. রশিদ বেপারী (৭০), বোন লিজা (২৪), ভাগনি তাবাসসুম (৬) ও অপর ভাগনি রেনু (১২), ভাবি রুনা (২৫), ভাতিজা তাহসান (৫) ও ফুপা কেরামত বেপারী (৭১) একই পরিবারের সদস্য। বাকি ২ জন হলেন মাইক্রোবাসচালক বিলস্নাল (২৮), মফিজুল মোলস্না (৬০)। এ ঘটনায় অপর আহত ১০ জনকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় বর পিছনের গাড়িতে থাকায় তিনি অক্ষত রয়েছেন। জানা যায়, বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার কনকসার গ্রাম থেকে ১৩ জনকে নিয়ে ঢাকার কামরাঙ্গীচরে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিল। অপরদিকে স্বাধীন পরিবহণের যাত্রীবাহী বাসটি মাওয়ার দিকে যাচ্ছিল। সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ছয়জনের মৃতু্য হয়। পরে শ্রীনগর স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স হাসপাতালে নেওয়া হলে পথে মারা যান আরও দুজন। অপরদিকে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর মিডফোর্ট হাসপাতালে নেওয়া হলে মারা যায় একজন। শ্রীনগর নির্বাহী অফিসার রহিমা আক্তার বলেন, ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মাইক্রোবাসের ভেতরে আটকে পড়া নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে। জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালকসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬ জন দুর্ঘটনাস্থলে, দুইজন ষোলঘর স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ও একজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। গুরুতর আহত আছে আরও তিনজন। হাঁসাড়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আব্দুল বাসেদ জানান, মাওয়াগামী স্বাধীন পরিবহণের বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঢাকাগামী মাইক্রোবাসের উপরে গিয়ে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাইক্রোবাসের আরোহীরা সবাই আত্মীয়স্বজন ছিল। তারা লৌহজং উপজেলার কনকসার ইউনিয়নের বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ষোলঘর স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক শাহ আলম জানান, আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় চারজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আহত আরও ১০ জনকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মরদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সন্ধ্যায় জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম আরও বলেন, ঢাকায় নেওয়া আহত চারজনের মধ্যে দুজন নয়, একজন মারা গেছেন। তার নাম রুনা (২৪)। তিনি বরের বড় ভাই সোহেলের স্ত্রী। এছাড়া আহত জাহাঙ্গীর মারা যাননি। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদার জানান, নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দাফন ও যাতায়াত ভাড়া বাবদ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।