চট্টগ্রামের উপনির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি

আলোচনায় ৪ নেতা, সুফিয়ানের সম্ভাবনা বেশি

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

হাসান মোলস্না
সব ধরনের নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপনির্বাচনেও অংশ নিচ্ছে বিএনপি। এরই মধ্যে প্রার্থী হিসেবে বিএনপির ৪ নেতার নাম উঠে এসেছে। এদের মধ্যে বিগত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে অংশ নেওয়া প্রার্থী আবু সুফিয়ানের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। একাদশ সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ নেতা মঈন উদ্দীন খান বাদল চট্টগ্রাম ৮ আসন থকে এমপি নির্বাচিত হন। গত ৭ নভেম্বর ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যাওয়ায় আসনটি শূন্য হয়। রোববার নির্বাচন কমিশন আগামী ১৩ জানুয়ারি ভোটের তারিখ দিয়ে এই আসনে উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ১২ ডিসেম্বর। ১৫ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই। আর ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে। ১৩ জানুয়ারি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা ভোট চলবে ইভিএমে। তফসিল ঘোষণার পরই রাজনৈতিক মহলে একটি প্রশ্ন সামনে আসে বিএনপি কি এই এনির্বাচনে অংশ নেবে? এবিষয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সব ধরনের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম ৮ আসনের উপনির্বাচনেও দলটি অংশ নেবে। তবে দলের স্থায়ী কমিটি এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে এবং দলীয় প্রার্থী ঠিক করবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ৮ আসনের উপনির্বাচনের বিএনপি প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন ৪ নেতা। তারা হলেন, গত নির্বাচনে এই আসনে বিএনপির প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সফিয়ান, সদস্য সচিব মোস্তাক আহমেদ খান, নগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এরশাদ উলস্নাহ ও সম্প্রতি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করা সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোরশেদ খান। বিএনপি সূত্রমতে, গত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পাওয়াই ছিল মোরশেদ খানের দল থেকে পদত্যাগের অন্যতম কারণ। বর্ষীয়ান এই নেতা পদত্যাগ পত্র দিলেও দল তা গ্রহণ করেনি। আসন্ন নির্বাচনে এই আসনে নির্বাচনে লড়ার জন্য দল থেকে তাকে প্রস্তাব করা হতে পারে। তবে মোরশেদ খানের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি রাজনীতিতে তিনি আর সক্রিয় হতে চান না। তাই এ ধরনের প্রস্তাব পেলে তিনি সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করবেন। সূত্র মতে, আবু সফিয়ান, মোস্তাক আহমেদ খান ও এরশাদ উলস্নাহ দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তবে গত নির্বাচনে অংশ নেওয়া আবু সুফিয়ানের মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, সুফিয়ান এলাকায় সাংগঠনিকভাবে সক্রিয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে তার ছিল সরব উপস্থিতি। বিভিন্ন সময় দলের নেতাকর্মীরা মামলা-হামলার শিকার হয়ে ছুটে গেছেন তার কাছে। তাদের পাশে দাঁড়িয়ে তিনি যথাসাধ্য সহযোগিতা করেছেন। সাংগঠনিক দক্ষতার পুরস্কার হিসেবে বিগত নির্বাচনে দলের ভাইস-চেয়ারম্যান মোরশেদ খানকে বাদ দিয়ে সুফিয়ানকে মনোনয়ন দিয়েছিল বিএনপি। এছাড়া আবু সুফিয়ানকে নিয়ে স্থানীয় বিএনপিতে বিরোধ নেই। দলের সব শ্রেণির নেতাকর্মী তার সঙ্গে রয়েছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে আবু সুফিয়ান যায়যায়দিনকে বলেন, দল যদি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সেক্ষেত্রে তার লড়ার ইচ্ছা আছে। এছাড়া মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারেও তিনি শতভাগ আশাবাদী। তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের মতো আগের রাতেই ভোট হওয়ার মতো আশঙ্কাও রয়েছে তার। সে জন্য কারচুপি প্রতিরোধে দলীয় প্রস্তুতিও বৃদ্ধি করবেন বলে জানান সুফিয়ান। একই বিষয়ে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম যায়যায়দিনকে বলেন, সব ধরনের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত আছে দলের। সেই হিসেবে চট্টগ্রাম ৮ আসনের উপনির্বাচনেও অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া নিয়ে সংশয়ও রয়েছে। আগের রাতে নয় দিনের বেলা সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি যে কোনো নির্বাচনে জয়লাভ করবে বলে মনে করেন তিনি।