বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
খসড়া ড্যাপ

ঢাকায় ১০ তলার বেশি আবাসিক ভবন নয়

ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম জানান, জনঘনত্ব এবং মাটির ধারণক্ষমতা অনুযায়ী ঢাকা, গাজীপুরসহ ড্যাপের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ভবনের উচ্চতা কতটুকু হবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে
ফয়সাল খান
  ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ঢাকায় সর্বোচ্চ ১০ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ করা যাবে। খসড়া ড্যাপের বিভিন্ন জোনে ৮ তলা পর্যন্ত অনুমোদনের বিধান রাখা হলেও বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে আরও দুই তলা বেশি করা যাবে। এরচেয়ে বেশি উচ্চতার আবাসিক ভবন নির্মাণের অনুমোদন দেবে না রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)।

ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা বা ডিটেইল এরিয়া পস্ন্যানে (ড্যাপ) বিভিন্ন এলাকায় ৩ থেকে সর্বোচ্চ ৮ তলা পর্যন্ত আবাসিক ভবন নির্মাণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ঘনবসতিপূর্ণ (ডেনসিটি জোনিং) ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জন্য সর্বোচ্চ ৮ তলা উচ্চতার ভবন নির্মাণের বিধান রাখা হয়েছে। তাছাড়া গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও সাভার পৌরসভার জন্য ৬ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণের সুযোগ আছে।

এর মধ্যে কোনো ভবন মালিক যদি তার ভবনের একটি ফ্লোর স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য বরাদ্দ রাখেন তবে নির্দিষ্ট উচ্চতার চেয়ে আরও এক তলা বেশি নির্মাণের অনুমতি দেবে রাজউক। তাছাড়া ড্যাপের প্রস্তাবিত মানদন্ড অনুযায়ী কোনো এলাকায় বাড়তি স্কুল থাকলে সেখানে নির্ধারিত উচ্চতার চেয়ে এক তলা বেশি অনুমোদন দেওয়া হবে। অর্থাৎ পরিকল্পনার চেয়ে বেশি স্কুল আছে এমন এলাকার কোনো পস্নট মালিক তার ভবনের একটি ফ্লোর নিম্ন মধ্যবিত্তদের আবাসনের জন্য বরাদ্দ করলে অতিরিক্ত দুই তলা নির্মাণের অনুমতি পাবেন।

রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগরে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ কার্যকর হওয়ার পর থেকে রাজউক সীমানাধীন বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের জনঘনত্বের নাজুক পরিস্থিতি প্রকট আকার ধারণ করে। সর্বত্রই ফ্লোর এরিয়া অনুপাতের ধারণা দেওয়া হয়েছে। এলাকাভিত্তিক ভিন্নতার বিষয়টি বিবেচনায়ই নেওয়া হয়নি। একটি পস্নটে ভবনের উচ্চতা এবং আবাসের একককে শুধু বৃদ্ধিই করা হয়েছে।

অন্যদিকে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-২০০৮ অনুযায়ী, একই পস্নটে আটতলা উচ্চতাবিশিষ্ট ইমারত নির্মাণ করা সম্ভব। ফলে রাজউক সীমানার ভেতরে বহুতল বিশিষ্ট ভবনগুলো নির্মিত পরিবেশের ওপর, বিশেষ করে সরু রাস্তা বরাবর ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করে। যেমন বায়ু চলাচল ও সূর্যালোকের পরিমাণ কমে যাওয়া ইত্যাদি। অধিকন্তু উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যথাযথ পর্যবেক্ষণ ক্ষমতার অভাবেই এ পরিস্থিতিকে আরও নাজুক করে তুলছে এবং এ কলাকৌশলের যে উপকারিতা ধারণা করা হয়েছিল তা শহরটির বর্তমান অবস্থা বা পরিবেশের সঙ্গে কোনোভাবেই দৃশ্যমান নয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (২০১৬-২০৩৫) আওতায় ঢাকা কেন্দ্রীয় এলাকায় জনসংখ্যার অতিরিক্ত চাপ কমাতে, বিভিন্ন এলাকায় সুষম উন্নয়নে সহায়তা করতে এবং সামগ্রিকভাবে সমগ্র মেট্রো পলিটন এলাকাকে একটি বাসযোগ্য এবং পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে জনঘনত্ব জোনিং প্রণয়ন করা হয়েছে।

ড্যাপ সূত্রে জানা গেছে, সর্বোচ্চ আটতলা ভবন নির্মাণ করা যাবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পাঁচটি এলাকায়। এর মধ্যে ঢাকা উত্তরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের এক নম্বর বস্নক, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বস্নক এবং ঢাকা দক্ষিণের ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বস্নক, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বস্নক ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বস্নকে নির্দিষ্ট উচ্চতায় ভবন নির্মাণ করতে পারবে।

সর্বোচ্চ সাততলা ভবন নির্মাণ করা যাবে ডিএনসিসি ১ নম্বর ওয়ার্ডের ৭ নম্বর বস্নক, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ১, ২, ৪ নম্বর বস্নক, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের ১, ৩ নম্বর বস্নক। আর ডিএসসিসির ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১, ২, ৩ নম্বর বস্নক ও ১৮ ওয়ার্ডের এক নম্বর বস্নক। আর ছয়তলা ভবনের অনুমতি রয়েছে ডিএনসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ডের ১, ২, ৩, ৫, ৬, ৭ নম্বর বস্নক, ২ নম্বর ওয়ার্ডের ১, ২ নম্বর বস্নক, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ২, ৩ নম্বর বস্নক, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর বস্নক, ১৮ নম্বর ৬ নম্বর বস্নক, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৩, ৫ নম্বর বস্নক, ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বস্নক, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বস্নক, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বস্নক, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের ১, ২ নম্বর বস্নক, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বস্নক, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ১, ২ নম্বর বস্নক, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বস্নক, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বস্নক। আর ডিএসসিসির ১ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বস্নক, ১৫ নম্বর ওয়ার্ড ৪ নম্বর বস্নক, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের ১, ২ নম্বর বস্নক, ১৮ নম্বর ২, ৩ নম্বর বস্নক, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর বস্নক, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নম্বর বস্নক, ২১ নম্বর ১ নম্বর বস্নক, ১৩ নম্বর ৩ নম্বর বস্নক। এছাড়া দুই সিটি করপোরেশনের অধিকাংশ ওয়ার্ড ৪ ও পাঁচতলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, জনঘনত্ব এবং মাটির ধারণক্ষমতা অনুযায়ী ঢাকা, গাজীপুরসহ ড্যাপের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় ভবনের উচ্চতা কতটুকু হবে তা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট করা উচ্চতার বাইরে কেউ ভবন নির্মাণ করলে তা হবে অবৈধ। জনঘনত্ব ভেদে আর শর্তসাপেক্ষে ভবনের উচ্চতা সর্বোচ্চ দুই তলা পর্যন্ত বাড়ানো যাবে উলেস্নখ করে তিনি আরও বলেন, পুনঃউন্নয়ন (রি-ডেভেলপমেট) প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে শহর উন্নত করা হয়েছে। এ জন্য ভূমি মালিকদের বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কেউ যদি এ প্রকল্পের আওতায় না আসে তবে তাকে ৬ তলার বেশি ভবন বানানোর অনুমোদন দেওয়া হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<78239 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1