আইএস টুপির উৎস জানালেন রিগ্যান

প্রকাশ | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আইএস টুপি মাথায় রিগ্যান -ফাইল ছবি
যাযাদি রিপোর্ট আরেক মামলার শুনানিতে এসে বিচারকের প্রশ্নে জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান বলেছেন, গুলশান হামলা মামলার রায়ের দিন আদালতপাড়ায় 'অচেনা' এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি টুপিটি পেয়েছিলেন। গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় মৃতু্যদন্ডে দন্ডিত রিগ্যানকে মঙ্গলবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইবু্যনালে হাজির করা হয় কল্যাণপুরের জাহাজ বাড়ির জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের মামলায়। এই ট্রাইবু্যনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানই গত ২৭ নভেম্বর গুলশান হামলা মামলার রায় দিয়েছিলেন, সেদিন এজলাসে জঙ্গি রিগ্যানের মাথায় আইএস চিহ্ন-সংবলিত টুপি দেখার পর শুরু হয় সমালোচনা, টুপির উৎস সন্ধানে তদন্তও চলছে। ছয় দিন পর আদালতে আসামি রিগ্যানকে পেয়ে বিচারক মজিবুর রহমান জানতে চান, ওই টুপিটি কোথায় পেয়েছিলেন। কাঠগড়ায় থাকা রিগ্যান তখন বলেন, 'ভিড়ের মধ্যে একজন দিয়েছে।' কে দিয়েছে- বিচারক প্রশ্ন করলে রিগ্যান বলেন, 'আমি চিনি না।' আর কাউকে কি টুপি দিয়েছিল- প্রশ্নে রিগ্যান বলেন, আর কাউকে দেয়নি। প্রিজন ভ্যানে ওঠার পর আরেক আসামি জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী ওই টুপিটিই নিয়ে পরছিলেন। টুপিটি নিলেন কেন- জানতে চাইলে রিগ্যান বলেন, 'ভালো লাগায় টুপিটি নিয়েছি।' আইএস চিহ্ন সংবলিত ওই টুপি কীভাবে গুলশান হামলার বন্দি আসামিরা পেলেন তা খুঁজতে কারা কর্তৃপক্ষ ও ডিবি পুলিশ দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কারা কর্তৃপক্ষের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাগার থেকে ওই টুপি নিয়ে যাননি আসামিরা। ডিবি পুলিশের তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন না দিলেও বাহিনীর কর্মকর্তারা বলেন, আসামিরা কারাগার থেকেই ওই টুপি নিয়ে এসেছিলেন। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের মধ্যে রিগ্যান বলেন, টুপির উৎসের কথা, যা সেদিন তার পাহারায় থাকা পুলিশের ব্যর্থতার দিকে ইঙ্গিত করে। ২০১৬ সালের ১ জুলাই নজিরবিহীন গুলশান হামলার পর জঙ্গি দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়েছিল, তাতে ২৫ জুলাই কল্যাণপুরের জাহাজ বাড়িতে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান মেলে। সেখানে অভিযানে ৯ জন নিহত হন, আহত অবস্থায় ধরা পড়েন বগুড়ার রিগ্যান। ওই অভিযানের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, জঙ্গি তৎপরতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হয়, সেই মামলার বিচার চলছে মজিবুর রহমানের আদালতে। গুলশান হামলার রায়ের দিন টুপি বিতর্কের পর জাহাজবাড়ির মামলাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত?কে ঘি?রে নিরাপত্তা বলয় তৈ?রি ক?রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আদাল?তে আইনজীবী ও মামলা সং?শ্লিষ্ট ছাড়া কাউ?কেই প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। এমন?কি গণমাধ্যমকর্মী?দের ঢোকায়ও ছিল কড়াকড়ি। আইনজীবী?দের তলস্নাশি ক?রে আদালত ভবনে ঢুকতে দেওয়া হলেও অন্যান্য মামলায় বিচারপ্রার্থী? অনেকে আটকে যান, যা নিয়ে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী? উভয়ের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যায়। এই মামলার ১০ আসা?মির মধ্যে গ্রেপ্তার সাত জনকে কারাগা?র থেকে হেল?মেট ও বু?লেটপ্রম্নফ জ্যা?কেট পরিয়ে আনা হয় আদালতে। এ?দিন শুনানিতে মামলার পলাতক আসামি আজাদুল ক?বিরাজের সম্প?ত্তি ক্রো?কের নি?র্দেশ দেন বিচারক। রাষ্ট্রপ?ক্ষের আইনজীবী গোলাম ছা?রোয়ার খান জা?কির ব?লেন, 'আদালত পলাতক আসামির বিরু?দ্ধে ক্রোকি প?রোয়ানা জা?রি করে। এর ম?ধ্যে পলাতক আসা?মি?কে গ্রেপ্তার করা সম্ভব না হ?লে তাকে হা?জির হওয়ার জন্য প?ত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হ?বে। এ বিষয়ে আ?দে?শের জন্য ১৯ ডি?সেম্বর দিন রে?খে?ছেন।' এরপরও পলাতক আসা?মি?কে পাওয়া না গেলে তা?র অনুপস্থিতিতেই শুরু হবে বিচার কাজ। এ মামলায় রিগ্যান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- সালাহ উদ্দিন কামরান (৩০), আবদুর রউফ প্রধান (৬৩), আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা ওরফের্ যাশ (২০), শরীফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ওরফে সোলায়মান (২৫), মামুনুর রশিদ রিপন ওরফে মামুন (৩০), আজাদুল কবিরাজ ওরফে হার্টবিট (২৮), মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর (৬০), আবদুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ওরফে নাসরুলস্না হক ওরফে মুসাফির ওরফে জয় ওরফে কুলমেন (৩৩), হাদিসুর রহমান সাগর (৪০)। এর ম?ধ্যে আবুল কাশেম ওরফে বড় হুজুর এবং আবদুর রউফ প্রধান জা?মি?নে আ?ছেন। তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। ২০১৬ সালের ২৫ জুলাই কল্যাণপুরের জাহাজবাড়িতে রাতভর অভিযানে জঙ্গিদের নির্মূলের পর মিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. শাহ জালাল আলম সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলাটি করেন। ২০১৮ সা?লের ৫ ডি?সেম্বর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ১০ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন। চল?তি বছর ৯ মে মামলা?টি সন্ত্রাসবি?রোধী বি?শেষ ট্রাইবু্যনা?লে স্থানান্তর করা হয়।