খালেদার জামিন নিয়ে আশা নিরাশার দোলাচলে বিএনপি

বিক্ষোভ বা আনন্দ মিছিলের প্রস্তাব: কর্মসূচি প্রণয়নে সিনিয়র নেতাদের বৈঠক

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
খালেদা জিয়া
হাসান মোলস্না দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নিয়ে আজকের শুনানিকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা আশা নিরাশার দোলাচলে রয়েছেন বলে জানা গেছে। দলটির একটি অংশ মনে করছেন আজ বেগম জিয়ার জামিন হতে পারে। যদিও অন্য অংশের মতে, কোনো ধরনের 'চাপ' ছাড়া সরকার এত সহজে জামিন দেবেন না। এই পরিস্থিতিতে দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। এরমধ্যে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা চেয়ারপারসনের জামিনের বিষয়ে উচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে আছেন। যদি ন্যায় বিচার না পান তাহলে আইনি প্রক্রিয়া দেখে কর্মসূচি নির্ধারণ করবেন। প্রাথমিকভাবে আইনজীবীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল অথবা আনন্দ মিছিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সঙ্গে বিএনপি এবং দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো তাৎক্ষণিক মিছিলের সিদ্ধান্তে নিয়েছেন। তারা হাইকোর্টের চারপাশে নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে। এদিকে খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আদালতের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত আসার পর কি ধরনের কর্মসূচি দেয়া যায় তা নিয়েও বুধবার সন্ধ্যায় দলের সিনিয়র নেতারা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। ওই বৈঠকে হরতালসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ব্যাপারে মত আসলেও শেষপর্যন্ত পরিস্থিতি না দেখে সিদ্ধান্ত না নেওয়ার বিষয়ে নেতারা একমত হন। শেষ পর্যন্ত যদি জামিন না হয় তাহলে জনগণকে সম্পৃক্ত করার মতো কর্মসূচি কী দেওয়া যায় তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। \হবৈঠকে থাকা দলের সিনিয়র দু'জন সদস্য বলেন, সরকারবিরোধী 'অল আউট' কর্মসূচিতে যেতে হলে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। হঠাৎ করে কিংবা বিচ্ছিন্নভাবে কর্মসূচি দিয়ে অকারণে মামলায় জড়িয়ে পড়া ঠিক হবে না। অবশ্য খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে সরকার পতনের একদফা আন্দোলন ঘোষণা দেয়ার বিষয়ে নেতারা একমত হন। বৈঠকে বলা হয়, খালেদা জিয়ার কারামুক্তি না হলে সরকার পতন ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকবে না। বৈঠকে জামিন শুনানিতে কী হয় তা শেষ পর্যন্ত দেখার পক্ষে মত দেন নেতারা। এদিকে বিএনপির আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, তারা খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে যত সংখ্যক সম্ভব আদালতে জড়ো হবেন। এজন্য ঢাকা ও এর আশপাশের আইনজীবীদেরও আসতে বলা হয়েছে। নেতারা বলছেন, যদি বেগম জিয়া জামিন হয় তা হলে তারা আনন্দ মিছিল করবেন। আর না হলে আদালত চত্বরেই বিক্ষোভ দেখাবেন। এছাড়াও যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা আদালতের চারপাশে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করবেন বলে জানা গেছে। ওই নেতাদের বলা হয়েছে কর্মীদের নিয়ে নির্দেশনার অপেক্ষায় থাকতে। জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান বলেন, এটা সর্বোচ্চ আদালত। সারা জাতি প্রত্যাশা করে বেগম জিয়ার জামিন হবে। যারা আইনজীবী তারা অবশ্যই আদালতে থাকবেন। বিএনপির যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জামিন ম্যাডামের প্রাপ্য। পেলে তারা আনন্দ মিছিল করবেন, না দিলে উপস্থিত আইনজীবীরা সিদ্ধান্ত নেবেন। এদিকে বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জামিনের বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া দেখে কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যখন গণতন্ত্রের জায়গা বন্ধ হয়ে যায়, তখন রাজপথেই তার সমাধান করতে হবে। খালেদা জিয়ার জামিন না হলে বিএনপি কী ধরনের কর্মসূচি দেবে- এমন প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, আইন-আদালত, ন্যায়বিচার, সংবিধান, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার, বয়স, অসুস্থতাসহ সব বিবেচনায় তার জামিন পাওয়া আইনগত অধিকার। দেশ-বিদেশের আইনজ্ঞরা বলছেন, এই মামলায় জামিন না পাওয়া বিস্ময়কর। তিনি নিশ্চিতভাবেই জামিনের হকদার।