সব দাবি পূরণ

আন্দোলনের সমাপ্তি, ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা

উপাচার্যের উপস্থিতিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রেজিস্ট্রার এবং সব অনুষদের ডিনদের সঙ্গে বৈঠকে ২৮ ডিসেম্বর থেকে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে একমত সবাই

প্রকাশ | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বুধবার আন্দোলনকারীদের পক্ষে ব্রিফিং করেন বুয়েটের ২০১৫ ব্যাচের ছাত্র মাহবুবুর রহমান সায়েম -যাযাদি
যাযাদি রিপোর্ট আবরার ফাহাদ হত্যাকান্ডের প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রায় দুই মাস অচল থাকার পর শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়- বুয়েট। সব দাবি পূরণ হওয়ায় আন্দোলনের সমাপ্তি টানার ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনকারীরা বুয়েট কর্তৃক্ষকে ধন্যবাদও জানিয়েছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আন্দোলনকারীদের এক ব্রিফিংয়ে বুয়েটের ২০১৫ ব্যাচের ছাত্র মাহবুবুর রহমান সায়েম লিখিত বিবৃতি পড়ে শোনান। তিনি বলেন, 'প্রতিশ্রম্নত সময়ের মধ্যেই আমাদের দেওয়া তিনটি পয়েট মেনে নেওয়ায় আমরা বুয়েট প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং তাদের দেওয়া রায় মেনে নিয়ে আন্দোলনের সমাপ্তি টানছি। আমরা আশা করি, বুয়েট প্রশাসন আবরারের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের ব্যাপারেও সচেষ্ট হবে।' সায়েম জানান, উপাচার্যের উপস্থিতিতে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, রেজিস্ট্রার এবং সব অনুষদের ডিনদের সঙ্গে বৈঠকে ২৮ ডিসেম্বর থেকে টার্ম ফাইনাল পরীক্ষা শুরুর বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা। বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনে গত ৬ অক্টোবর তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরারের মৃতু্য হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অচল হয়ে পড়ে বুয়েট। তাদের দাবি মেনে বুয়েটে সাংগঠনিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়; পাশাপাশি নেওয়া হয় আরও কিছু উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের ১০ দফার কয়েকটি মেনে নেওয়ার পর গত ১৬ অক্টোবর মাঠের আন্দোলন থেকে সরে আসেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা; তবে মামলার অভিযোগপত্র ও অন্য দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার ঘোষণা দেন। পাঁচ সপ্তাহের তদন্ত শেষে গত ১৩ নভেম্বর পুলিশ ২৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দিলে ক্লাসে ফেরার জন্য বুয়েট কর্তৃপক্ষকে আরও তিনটি শর্ত দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার; আহসানউলস্নাহ, তিতুমীর ও সোহরাওয়ার্দী হলের আগেরর্ যাগের ঘটনায় অভিযুক্তদের অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া এবং সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি ওর্ যাগের জন্য সুস্পষ্টভাবে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করে শাস্তির নীতিমালা করে বুয়েটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে তা অন্তর্ভুক্ত করা ছিল তাদের তিনটি দাবি। এরপর গত ২১ নভেম্বর বুয়েট প্রশাসন আবরার হত্যার অভিযোগপত্রভুক্ত ২৫ জনসহ ২৬ জনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে। বিভিন্ন সময়র্ যাগিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও ২৬ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয় ২৭ নভেম্বর। শিক্ষার্থীদের সব শেষ দাবিও গত ৩ ডিসেম্বর পূর্ণ হয়র্ যাগিংয়ের নামে নিপীড়ন ও সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতির জন্য শাস্তির মাত্রা নির্ধারণ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মধ্য দিয়ে। সেখানে বলা হয়, ভবিষ্যতে বুয়েটের কেউর্ যাগিংয়ে জড়ালে কিংবা সাংগঠনিক রাজনীতির কার্যক্রমে জড়িত হলে মাত্রা অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরতরে বহিষ্কার। গত প্রায় দুই মাস বুয়েটের আন্দোলনে সহযোগিতা দিয়ে যাওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে মাহবুবুর রহমান সায়েম ব্রিফিংয়ে বলেন, 'আমরা চাই, আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে দ্রম্নততার সাথে সম্পন্ন হোক। আমাদের মতো সারা দেশবাসী এই বিচারের দিকে তাকিয়ে আছে।'