নড়াইলের মামলায় হাইকোটের্ জামিন খালেদা জিয়ার

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে ‘বিতকির্ত’ মন্তব্য করার অভিযোগে নড়াইলের একটি মানহানি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছে হাইকোটর্। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের হাইকোটর্ বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ দেয়। আদালতে খালেদার পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, কায়সার কামাল ও সগির হোসেন লিয়ন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটনির্ জেনারেল কামরুল ইসলাম খান। নড়াইলের জেলা ও দায়রা জজ আদালত গত ৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে তা আইনজীবীরা হাইকোটের্ আসেন। এতিমখানা ট্রাস্ট দুনীির্ত মামলায় পঁাচ বছরের সাজার রায়ের পর গত ৮ ফেব্রæয়ারি থেকে কারাগারে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। ওই মামলায় তিনি জামিন পেলেও আরও কয়েকটি মামলার কারণে তার মুক্তি হচ্ছে না। নড়াইলের আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মামলাটি দায়ের করা হয় ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর। নড়াইল জেলা পরিষদের ১ নম্বর ওয়াডের্র সদস্য ও নড়াগাতি থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রায়হান ফারুকী ওই মামলা দায়ের করেন। ওই বছর ২১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়াসর্ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় খালেদা মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, ‘আজকে বলা হয়, এতো লাখ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতকর্ আছে যে, আসলে কত লাখ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।’ একাত্তরে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা নয়, ক্ষমতা চেয়েছিল দাবি করে ওই সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, ‘তিনি (জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ চাননি।’ মামলার অভিযোগে বলা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা এবং জাতির জনকের গৌরবজনক ভ‚মিকা নিয়ে খালেদা জিয়া উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য দিয়ে মানহানি করেছেন।’ ওই বক্তব্যের কারণে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরও বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে। হাইকোটের্ খালেদার জামিন আবেদন মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান ও শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়ায় মামলায় হাইকোটের্ জামিন আবেদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের আদালতে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে। সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটনির্ জেনারেল এম এ কামরুল হাসান খান (আসলাম) বলেন, আবেদনটি পেয়েছি। মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) শুনানি হতে পারে। ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) মামলাটি করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। মামলায় বলা হয়, ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ওই বক্তব্য দেন। ‘খালেদা জিয়ার ওই বক্তব্য পরদিন বিভিন্ন জাতীয় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। যেহেতু ওই বক্তব্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে কটাক্ষ করে ও স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবদান এবং ভ‚মিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে, যা দÐবিধি ৫০০ ধারার অপরাধ’। এ মামলায় গত ৭ আগস্ট খালেদা জিয়ার আবেদন নামঞ্জুর করেছিলেন বিচারিক আদালত। আদেশে আদালত বলেছেন, আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পেন্ডিং আছে। তিনি এখনো এ মামলায় গ্রেপ্তার হননি। এমতাবস্থায় উল্লিখিত আসামির পক্ষ জামিন শুনানির আবেদনটি রক্ষণীয় নয় বিধায় নামঞ্জুর করা হলো। এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের জন্য ২৪ সেপ্টেম্বর দিনও রেখেছেন আদালত।