সুপারিশ চ‚ড়ান্ত

কোটা প্রায় উঠিয়ে দেয়ার পক্ষে সরকারি কমিটি

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও পযাের্লাচনা কমিটির সভাপতি মো. শফিউল আলম জানান মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে

প্রকাশ | ১৪ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
রাজধানীর শাহবাগে কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবিতে শিক্ষাথীের্দর সমাবেশের একাংশ Ñফাইল ছবি
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার, বাতিল ও পযাের্লাচনায় গঠিত সরকারি কমিটির সুপারিশ হলোÑ কোটা প্রায় পুরোটাই উঠিয়ে দেয়া। এর পাশাপাশি মেধাকে প্রাধান্য দেয়ারও সুপারিশ এসেছে। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে আদালতের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও ওই কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শফিউল আলম। মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘কমিটির সুপারিশ প্রায় চ‚ড়ান্ত করে ফেলেছেন তারা। কমিটির প্রাথমিক সুপারিশ হলো কোটা অলমোস্ট (প্রায় পুরোটাই) উঠিয়ে দেয়া, মেধাকে প্রাধান্য দেয়া। তবে সুপ্রিম কোটের্র একটি রায় আছে যে মুক্তিযোদ্ধা কোটা প্রতিপালন করতে হবে। সংরক্ষণ করতে হবে। যদি পদ খালি থাকে, তবে তা খালি রাখতে হবে।’ মোহাম্মদ শফিউল আলম আরও বলেন, ‘সরকার আদালতের কাছে মতামত চাইবে। যদি আদালত বাতিল করে দেয়, তবে কোটা থাকবে না। আর যদি আদালত বলে, ওই অংশটুকু (মুক্তিযোদ্ধা কোটা) সংরক্ষণ করতে হবে, তাহলে ওই অংশ বাদে বাকি সবটুকু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। এটা হলো প্রাথমিক তথ্য।’ আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তারা (কমিটি) নিজেরাও ওই রায় বিশ্লেষণ করেছেন। তবে পুরোপুরি বুঝতে পারছেন না। এ জন্য আদালতের মতামত চাওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের সময় এসেছে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতায় যাওয়া।’ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী সামনে আসবে কীভাবেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে শফিউল আলম বলেন, তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন, তারাও (পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী) অনেক অগ্রসর হয়েছে। শিক্ষাথীের্দর আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। প্রথমে কমিটিকে ১৫ কমির্দবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় দেয়া হয়েছিল। পরে সময় বাড়িয়ে আরও ৯০ কমির্দবস দেয়া হয়। বতর্মানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত; এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ। কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবিতে কয়েক মাস আগে জোরাল আন্দোলন গড়ে তোলে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’, যা ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের একপযাের্য় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল সংসদে বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতিই আর রাখা হবে না। তবে পরে সংসদে তিনি বলেন, কোটা পদ্ধতি থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ রাখতে হাইকোটের্র রায় আছে। এদিকে নতুন করে আন্দোলন দানা বঁাধার প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি পযাের্লাচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের নেতৃত্বে গত ২২ জুলাই একটি কমিটি করে সরকার। ওই কমিটিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়, সরকারি কমর্ কমিশন (পিএসসি), অথর্ বিভাগ এবং লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিবদের কমিটির সদস্য করা হয়। কোটা পযাের্লাচনা কমিটি গত ৮ জুলাই তাদের প্রথম সভা করে কমর্পন্থা নিধার্রণের পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে কোটা-সংক্রান্ত দেশি-বিদেশি সব ধরনের তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। শুরুতে কমিটিকে ১৫ কমির্দবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও গত ১৯ জুলাই এই কমিটির মেয়াদ আরও ৯০ কাযির্দবস বাড়ানো হয়।