আজ হানাদারমুক্ত হয় নরসিংদী

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট পাকিস্তানি হায়েনা ও তাদের এদেশীয় নরপশুদের কবল থেকে ১৯৭১ সালের ১২ ডিসেম্বর মুক্ত হয় নরসিংদী জেলা। ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়ের চার দিন আগে ওই জেলার পথে-প্রান্তরে ওড়ে বিজয়ের স্মারক ও শহীদের রক্তস্নাত স্বাধীন বাংলার পতাকা। পুরো বাংলাদেশ তখনো স্বাধীন হয়নি, এই উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বুকে নিয়েই সেদিন নরসিংদীর মানুষ যোগ দেন বিজয়ের মিছিলে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অনুযায়ী, একাত্তর সালে দীর্ঘ নয় মাসে নরসিংদীর বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশত গেরিলা যুদ্ধ, খন্ড যুদ্ধ এবং কয়েকটি মাঝারি আকারের সম্মুখযুদ্ধ হয়। ১২ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনীর সহযোগিতায় ভারতীয় মিত্রবাহিনীর জওয়ানরা আকাশ, জল ও স্থলপথে আক্রমণ চালিয়ে নরসিংদী থানা শহর (এখন জেলা শহর) হানাদারমুক্ত করেন। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত নরসিংদী জেলায় পরিচালিত বিভিন্ন যুদ্ধ ও একচেটিয়া আক্রমণে ১১৬ জন বীর সন্তান শহীদ হন। তাদের মধ্যে নরসিংদী সদরে ২৭ জন, পলাশে ১১ জন, শিবপুরে ১৩ জন, রায়পুরায় ৩৭ জন, বেলাবতে ১৬ জন ও মনোহরদীতে ১২ জন। বেসরকারি হিসাব মতে, শহীদের সংখ্যা আরও বেশি। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মোতালিব পাঠানের দেয়া তথ্যমতে, মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৩৭ জন একাত্তরে শহীদ হন। এর আগে একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চে স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে সারাদেশ। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েন পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে মুক্তির সংগ্রামে। শুরু হয় বাঙালির মুক্তির আন্দোলন। নরসিংদীতে তখন ১৫ থেকে ২০টি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প খুলে শত শত ছাত্র, যুবককে প্রাথমিক হাতিয়ার চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নরসিংদীতে তখনকার ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর (অব.) সামসুল হুদা বাচ্চুর নেতৃত্বে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাঁশের লাঠি নিয়ে দুর্বার প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম হিরু (বর্তমান সংসদ সদস্য), আবদুল আলী মৃধা, আলী আকবর, খন্দকার গোলজার হোসেন, মানিক লাল সাহা, আব্দুল মতিন ভূঞা, হারাধন সাহা, সুভাষ সাহা, নিবারণ রায়, হাসান মাহমুদ, খালেকুজ্জামান, হাবিবুলস্নাহ বাহার, অধ্যাপক শহীদুলাহ বাহার, আতাউর রহমান মাস্টার, আজিজ আহমেদ খান, ফজলুল কাদের সওদাগর, আপেল মাহমুদ, রতন সরকার, আব্দুস সাত্তার, গণেশ আচার্য (জগদীশ), ক্ষিতিশ ঘোষ, মেজবাহ উদ্দিন ইরান, ইফতেখার উদ্দিন ভুলু, বাদল কুমার সাহা, নারায়ণ ঘোষ, মুনসুর আহমেদ, মজিবুর রহমান, জসীম উদ্দিন, আবুল কাসেম, হারুন অর রশিদ, সুনীল দাস, সচিন্দ্র দাস, হাবিবুর রহমান হাবিব, আমিরুল ইসলাম ভুঁইয়া, মাহমুদ, রাজু প্রমুখ প্রতিরোধ আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।