মাটিতে পোঁতা চীনা ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গাঁও জিয়াং হুই
যাযাদি রিপোর্ট রাজধানীর বনানী থেকে গাঁও জিয়াং হুই নামে এক চীনা পাথর ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে বনানীর ২৩ নম্বর সড়কের ৮২ নম্বর বাসার পেছন থেকে মাটিচাপা অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে শ্বাস রোধে হত্যার পর লাশ গুম করতে মাটি চাপা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ওই ভবনের দারোয়ান, ড্রাইভার ও কেয়ারটেকারসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহত জিয়াং পদ্মা সেতুসহ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে পাথর সরবরাহের ব্যবসা করতেন। এদিকে চীনা ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যানর্ যাব-পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা। চীনা দূতাবাসের লোকজনও হাজির হন। তারা সার্বিক বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করতে খবর দেওয়া হয় সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের লোকজনকেও। তারা ফুট ও ফিঙ্গার প্রিন্টসহ আলামত সংগ্রহের পর গভীর রাতে দিকে ময়নাতদন্তের জন্য মরাদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠান। জানা গেছে, গতকাল সকালে বাসায় কাজের মহিলা আসেন। এ সময় অনেক ডাকাডাকি করেও জিয়াং-এর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি ফিরে যান। এরপর বাসার নিচে আসেন সুলতান নামে জিয়াংয়ের গাড়িচালক। তিনিও মনিবের সন্ধান না পেয়ে কাজের মেয়েকে ফোন করেন। এরপর তারা দুইজন একসঙ্গে জিয়াংয়ের সন্ধান শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা বাসার পেছনে মাটিচাপা অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। এ সময় মরদেহের কিছু অংশ বাইরে ছিল। খবর পেয়ে পুলিশ ও জিয়াংয়ের পরিচিতরা ঘটনাস্থলে আসেন। গুলশান জোনের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এসপি পদন্নোতিপ্রাপ্ত) আব্দুল আহাদ যায়যায়দিনকে বলেন, আশপাশের বাসিন্দারের খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ৮২ নং ১০ তলা ভবনের পেছন থেকে জিয়াংয়ের মাটিচাপা দেওয়া লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের একটি অংশ মাটির বাইরে থাকার কারণে সহজেই লোকজনের চোখে পড়ে। তিনি জানান, জিয়াং পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ২৩নং রোডের ৮২নং ভবনের ৫বি ও ৬বি ডুপেস্নক্স ফ্ল্যাটে থাকতেন। ২০ দিন আগে তার স্ত্রী ও সন্তানরা দেশে ফিরে যান। আজ বৃহস্পতিবার তাদের বাংলাদেশে ফেরার কথা। এর আগেই তিনি খুন হন। এ ঘটনায় কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। পাশাপাশি ব্যবসা নিয়ে কারো সঙ্গে জিয়াংয়ের বিরোধ ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান যায়যায়দিনকে জানান, খবর পেয়ে দ্রম্নত ঘটনাস্থলে ছুটে যান গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের দুটি টিম। এরপর তারা ওই বাসা ও আশপাশের এলাকা পর্যবেক্ষণ করেন। খুন বাসার ভেতরে না বাইরে হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট না। পাশাপাশি নিহত চীনা নাগরিক যে ভবনে বসবাস করতেন ওই ভবনের সিসি ক্যামেরা কার্যকর ছিল না। এ কারণে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ফুটেজ তারা হাতে পায়নি। বেশ কিছু স্থানে সিসি ক্যামেরা বসানো থাকলেও সেখানে কোনো সংযোগ ছিল না। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ ইতোমধ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রম্নতই ঘটনার রহস্যভেদ করা সম্ভব হবে। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ধারণা করা হচ্ছে খুনিরা পূর্বপরিচিত। লাশ গুমকরণের জন্য তাড়াহুড়োর কারণে দেহের কিছু অংশ বাইরে বেরিয়ে ছিল। ওই ভবনের ম্যানেজার বাপ্পি সিনহা সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার বিকালেও তার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। তিনি এক বছর ধরে এ বাসায় আছেন। তার সঙ্গে তার পরিবারও থাকত। সম্প্রতি তার পরিবার চীনে যায়।