স্যার ফজলে হাসান আবেদ আর নেই

প্রকাশ | ২১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০৭

যাযাদি রিপোর্ট
স্যার ফজলে হাসান আবেদ

ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ আর নেই। শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিলস্নাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। যেসব বাংলাদেশি তাদের কর্মগুণে বিশ্বজুড়ে পরিচিত, ফজলে হাসান আবেদ তাদের একজন। ১৯৭২ সালে তার হাত ধরে যাত্রা শুরু করা ব্র্যাক এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় এনজিওগুলোর একটি। ফজলে হাসান আবেদের মৃতু্যতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক জানিয়েছেন। গত ২৭ নভেম্বর ফজলে হাসান আবেদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার অসুস্থতা সম্পর্কে তখন কিছু জানাননি ব্র্যাক কর্মকর্তারা। মৃতু্যর পর ব্র্যাকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'তিনি ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত অবস্থায় রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।' মহান মুক্তিযুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের তৃণমূলের মানুষের সেবা করতে গিয়ে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন ফজলে হাসান আবেদ। মাত্র এক লাখ কর্মী নিয়ে শুধু বাংলাদেশেই নয়, পৃথিবীর ১১টি দেশে ১২০ মিলিয়ন মানুষকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে চলেছে ব্র্যাক। ১৯৩৬ সালে জন্মগ্রহণকারী ফজলে হাসান আবেদের উচ্চতর পড়াশোনা হয় লন্ডনে, হিসাব বিজ্ঞানে। ৩৬ বছর বয়সে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সংস্থার নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন ফজলে হাসান আবেদ। ৬৫ বছর বয়সে নির্বাহী পরিচালকের পদ ছেড়ে চেয়ারপারসন হন তিনি। কয়েক মাস আগে তিনি চেয়ারপারসনের পদ ছেড়ে অবসরে যান। ১৯৮০ সালে ম্যাগসেসে পুরস্কার পাওয়ার পর জীবনে অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন ফজলে হাসান আবেদ। তার মধ্যে রয়েছে বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার, স্পেনিশ অর্ডার অব সিভিল মেরিট, অফিসার ইন দ্য অর্ডার অফ অরেঞ্জ-নাসাউ, লিউ টলস্টয় ইন্টারন্যাশনাল গোল্ড মেডেল ইত্যাদি। ২০১৪ ও ২০১৭ সালে ফরচুন ম্যাগাজিনের নির্বাচিত ৫০ বিশ্বনেতার মধ্যে ফজলে হাসান আবেদের নাম স্থান পেয়েছিল। তার মৃতু্যতে শোক জানিয়ে ব্র্যাক গেস্নাবাল বোর্ডের চেয়ারপারসন আমিরা হক এক বিবৃতিতে বলেছেন, "ফজলে হাসান আবেদের আত্মনিবেদন, কর্মনিষ্ঠা এবং সুদৃঢ় নৈতিক অবস্থান তাকে ব্র্যাক পরিবারের সবার কাছে শ্রদ্ধেয় 'আবেদ ভাই' করে তুলেছে। মানুষকে মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি ছিল তার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি ব্র্যাকের পরিচিতি যখন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হয়েছে তখনও সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের উন্নয়নই তার অগ্রাধিকার ছিল।'' 'সততা, বিনয় এবং মানবিকতার এক বিরল দৃষ্টান্ত ছিলেন তিনি। তার এসব গুণাবলিই ব্র্যাকের প্রাতিষ্ঠানিক মূল্যবোধ গড়ে ওঠার ভিত্তি রচনা করেছে।'