ছুটির ফঁাদ, দুদিন মিললেই নয় দিন ছুটি

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
আসি আসি করছে কোরবানির ঈদ। এ ঈদে আনন্দ একটু অন্য রকম। হাটে গিয়ে গরু কেনা। কোরবানি দিয়ে মাংস বিতরণ। আর মায়ের হাতে মাংস রান্না। এই সুযোগ কি কেউ ছাড়তে চান। বেসরকারি একটি ব্যাংকের কমর্কতার্ সানোয়ার হোসেনও এমনই একজন। রোজার ঈদে গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরে যেতে পারেননি তিনি। পরিবার নিয়ে রাজধানীতেই থাকতে হয়েছে। তখনই পরিকল্পনা করেন, কোরবানির ঈদের সময় ঢাকায় বন্দি হবেন না। দিনপঞ্জি দেখে হিসাব কষতে থাকেন তিনি। একটি ধারণাও পেয়ে যান সানোয়ার। জানতে পারেন, ২২ আগস্ট বুধবার ঈদুল আজহার দিন হতে পারে। তাহলে ২৩ আগস্ট বৃহস্পতিবারও ঈদের তিন দিনের ছুটির শেষ দিন। এরপর ২৪ আগস্ট শুক্রবার এবং পরদিন ২৫ আগস্ট শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। তাই ২৬ আগস্টের আগে আর অফিসে আসতে হচ্ছে না সানোয়ার হোসেনকে। এ জন্য ১৯ ও ২০ আগস্ট ছুটি নিতে হবে। তাহলেই নয় দিনের ছুটি। কিন্তু তার সব ইচ্ছাই নিভর্র করছিল জিলহজ মাসের চঁাদ ওঠার ওপর। ১২ আগস্ট চঁাদ দেখার সংবাদ পেয়ে পরের দিন সোমবার ছুটির আবেদন করে ফেলেন তিনি। ঊধ্বর্তন কমর্কতার্র অনুমোদন মিলে যায়। বাসের টিকিট কেটে ফেলেন। তার এই অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় বৃহস্পতিবার। একটু আগেভাগে অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় যান। স্ত্রী আর মেয়েকে নিয়ে সোজা বিকালের বাস ধরতে চলে যান কল্যাণপুরে এসআর ট্রাভেলসের কাউন্টারে। সানোয়ার হোসেনের মতো এভাবে ঈদ উপলক্ষে অনেকে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন। এ কারণে গাবতলী, কল্যাণপুর ও সায়েদাবাদ বাস কাউন্টারে যাত্রীদের বেশ ভিড় ছিল। এসআর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক আমীন নবী বলেন, ঈদের লম্বা ছুটির রেশ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়ে গেছে। দুপুরের পর থেকে যাত্রীরা কাউন্টারে আসতে শুরু করে। আগামী রবি ও সোমবার যারা অফিস থেকে ছুটি নিতে পেরেছেন, তারাই ঢাকা ছাড়ছেন। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছুটি থাকায় অনেকে ১৪ আগস্ট পরিবারের সদস্যদের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষাথীর্ও ওই দিন গ্রামের বাড়ি ফিরে গেছেন। বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, টানা ছুটির হিসাব কষে পরিবহন বাস মালিকেরা ১৪ আগস্ট থেকে বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন। কিন্তু পরিবহন ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৪ আগস্ট থেকে বিআরটিএর নিধাির্রত ভাড়াতেই টিকিট বিক্রি করছেন। কারণ ফিরতি পথের বাসগুলোর আসন প্রায় ফঁাকাই থাকছে। বাসের মতো ট্রেনে চড়েও অসংখ্য যাত্রী গতকাল থেকে ফিরতে শুরু করেছেন আপন ঠিকানায়। কমলাপুরে ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কমর্কতার্ ইয়াসিন ফারুক বলেন, প্রত্যেক সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ট্রেনে এমনিতেই যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। তবে ঈদ সামনে থাকায় এই ভিড়ের মাত্রা অনেকটাই বেশি ছিল। গতকাল অতিরিক্ত কোনো বগি ট্রেনগুলোতে সংযোগ করেনি রেলওয়ে কতৃর্পক্ষ। ঈদ উপলক্ষে অগ্রিম টিকিট যারা কিনেছেন, তারা শুক্রবার থেকে ঢাকা ছাড়তে শুরু করবেন। কেমন থাকবে আবহাওয়া লম্বা ছুটিতে আনন্দের মাত্রা আরেকটু বাড়িয়ে দিতে পারে শরতের বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, শনিবারের পর থেকে দেশের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টি হতে পারে। এ বৃষ্টি হলে গরমের মাত্রা কমে যেতে পারে। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, রোববার থেকে বৃষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। দু’তিন দিন কিছুটা ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।