প্রায় ৫ হাজার মানুষ আক্রান্ত

উত্তরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ সূর্যের দেখা নেই

সারাদেশে ২৪ ঘণ্টায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৫ হাজার মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
শীতজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ছবিটি রোববার রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে তোলা -যাযাদি
উত্তরাঞ্চলে মৌসুমের চতুর্থ দফার শৈত্যপ্রবাহে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত; ঘনকুয়াশার কারণে আচ্ছন্ন তা অনুভূত হচ্ছে বেশ। রোববার সকাল ৯টায় রংপুরের রাজারহাটে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি এবং ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার মধ্যরাত থেকে দেশের বিভিন্ন স্থান মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশায় ঢাকা পড়ে। সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি বলে বেশি শীত অনুভূত হয়। আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। এটা কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘনকুয়াশা পড়তে পারে, তা দেশের কোথাও কোথাও বিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। অর্থাৎ বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। শনিবারও রাজধানীসহ দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছিল শীতের তীব্রতা। এ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঈশ্বরদীতে ছিল ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবারের শীত মৌসুমে ডিসেম্বরের শেষার্ধে দুটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেও ছিল এক দফা শৈত্যপ্রবাহ। রোববারের শৈত্যপ্রবাহ এ মৌসুমের চতুর্থ। ২৯ ডিসেম্বর পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় থার্মোমিটারের পারদ নেমেছিল ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। নতুন বছরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় ৬ জানুয়ারি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে সেটাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়, ৬-৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি ও ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। ৫ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত এদিকে সারা দেশে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের শনিবারের তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজারের বেশি মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এই রোগীদের মধ্যে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ নিয়ে এসেছে ৮৩৪ জন। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এসেছে ১ হাজার ৭৫৪ জন। বাকিরা এসেছে জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৭২৮। আর এই সময়ে মারা গেছে ৫৪ জন। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত ও মৃতু্যর ঝুঁকি বেশি শিশু ও বয়স্কদের। ঠান্ডাজনিত রোগের বিষয়ে কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক আয়শা আক্তার বলেন, জানুয়ারিতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু শৈত্যপ্রবাহ ও তাপমাত্রা কম থাকায় সেটা হচ্ছে না। মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি অধিদপ্তর থেকে হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগ মোকাবিলায় নির্দেশনা দেওয়া আছে। তবে শৈত্যপ্রবাহ ছাড়াই গতকাল শনিবার রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় ছিল কনকনে শীত।