বি.বাড়িয়ায় ফুটপাতে জমে উঠেছে পিঠার পসরা

প্রকাশ | ১৩ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
কনকনে এই শীতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের বিভিন্ন রাস্তার ফুটপাতে জমে উঠেছে হরেক রকমের পিঠার ব্যবসা। সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে পিঠা বিক্রি। প্রতিটি দোকানেই থাকে ক্রেতাদের ভিড়। শহরের নিম্নবিত্তের লোকজন ছাড়া উচ্চবিত্তের লোকেরাও ফুটপাত থেকে হরেক রকমের পিঠা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তাদের বাসা-বাড়িতে। পরিবার পরিজন নিয়ে খাচ্ছেন এসব পিঠা। সারা বছরই শহরের ২ থেকে ৩টি রাস্তার ফুটপাতে ভাসমান ব্যবসায়ীরা পিঠা বিক্রি করলেও শীতে বেড়ে যায় দোকানের সংখ্যা। বর্তমানে শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাত ছাড়াও বিভিন্ন পাড়া-মহলস্নার অলি-গলিতে ভাসমান বিক্রেতারা পিঠা বিক্রি করছেন। শহরের শ্রমজীবী মানুষই তাদের প্রধান ক্রেতা। পিঠার জন্য প্রচুর ক্রেতা থাকায় অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও পিঠা কিনতে হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহরের পৌর সুপার মার্কেট, সিটি সেন্টার, আধুনিক পৌর সুপার মার্কেট, কোর্ট রোড, মসজিদ রোড, হাসপাতাল রোড, কুমারশীল মোড়, সাবেরা সোবহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক, রেলওয়ে স্টেশন রোড, কান্দিপাড়া মাদ্রাসা রোড, কাজীপাড়া জেলা ঈদগাহ ময়দান, ডা. ফরিদুল হুদা রোড, কাউতলী জেলা পরিষদের মার্কেটের সামনেসহ শহরের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ের ফুটপাত ও শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহলস্নার রাস্তার মোড়ে পিঠা বিক্রি হচ্ছে। সকাল ১০টার পর থেকেই দোকানিরা ফুটপাতে মাটি, এলপি গ্যাস ও কোরোসিনের চুলা নিয়ে বসে যান। এসব দোকানে চিতই পিঠা, মেরা পিঠা (চোয়া পিঠা), ভাঁপা পিঠা, পোয়া পিঠা, পাটিসাপটা পিঠা বেশি বিক্রি হয়। গরম গরম পিঠা পেয়ে ক্রেতারাও দারুণ খুশি। প্রতিটি বড় ভাঁপা পিঠা ১০ টাকা ও প্রতিটি ছোট ভাঁপা পিঠা ৫ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিটি বড় সাইজের চিতই পিঠা ১০ টাকা এবং ছোট সাইজের চিতই পিঠা ৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। শহরের আধুনিক পৌর সুপার মার্কেটের সামনের পিঠা বিক্রেতা আকবর আলী জানান, প্রতিদিন তিনি আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার পিঠা বিক্রি করেন। এতে তার লাভ হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। তিনি বলেন, আগে তিনি প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ কেজির চালের গুঁড়ার পিঠা বিক্রি করলেও বর্তমানে ৭-৮ কেজি চালের গুঁড়ার পিঠা বিক্রি করতে পারেন। তার এখানে চিতই ও ভাঁপা পিঠাই বেশি বিক্রি হয়। ধনেপাতা ও কাঁচামরিচ দিয়ে তৈরি ভাঁপা পিঠা এবং নারকেল-খেজুরের গুড় দিয়ে তৈরি ভাঁপা পিঠার চাহিদাই বেশি। কাজীপাড়া জেলা ঈদগাহ মাঠ সংলগ্ন রাস্তার পাশে পিঠা বিক্রি করেন আসমা বেগম। তিনি মূলত চিতই পিঠা বিক্রি করেন। তিনি বলেন, আলস্নাহর রহমতে বেচা-বিক্রি ভালো হচ্ছে। চিতই পিঠার সঙ্গে ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী সরিষার ভর্তা ও শুটকির ভর্তা দেন। প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ কেজি চালের গুঁড়ার পিঠা বিক্রি করতে পারেন তিনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী তানিয়া আক্তার ও তোফা ইসলাম বলেন, তাদের বাড়ি আশুগঞ্জ উপজেলার ভবানীপুর গ্রামে। তারা দু'জনই কলেজের হোস্টেলে থাকেন। হোস্টেলে থাকায় মা-চাচীর হাতে তৈরি পিঠা খাওয়া থেকে বঞ্চিত। তারা বলেন, সুযোগ পেলেই তারা শহরের ফুটপাত থেকে চিতই পিঠা ও ভাঁপা পিঠা কিনে নিয়ে যান হোস্টেলে। কয়েকজন দোকানি জানান, ক্রেতাদের কাছে চিতই পিঠার চাহিদাই বেশি। চিতই পিঠার সাথে তারা নিয়ে যান সরিষা ভর্তা, ধনেপাতার ভর্তা অথবা শুটকির ভর্তা। কয়েকজন দোকানি আক্ষেপ করে বলেন, তারা ফুটপাতে প্রতিদিন বসতে পারেন না। পুলিশ ও পৌরসভার লোকেরা তাদের ফুটপাত থেকে তুলে দেয়। এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, শহরের যানজট নিরসনে মাঝে মাঝে ফুটপাতের দোকানিদের উচ্ছেদ করা হয়।