শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে বৃহত্তম জুমার নামাজ

গাজীপুর প্রতিনিধি/টঙ্গী সংবাদদাতা
  ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:১২
শুক্রবার টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় বৃহত্তম জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় -যাযাদি

ধর্মপ্রাণ লাখো মুসলমানদের 'আলস্নাহু আকবর' ধ্বনিতে মুখরিত টঙ্গীর তুরাগ নদের পূর্ব পাড়ের বিশ্ব ইজতেমা ময়দান। পবিত্র হজের পর মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জমায়েত বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুক্রবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। ইজতেমার প্রথম দিনেই জুমার নামাজকে ঘিরে সকাল থেকেই তুরাগ তীরে অগণিত মুসলিস্নদের ঢল নামে। সময় যতই এগিয়ে যাচ্ছিল ততই জনস্রোত বাড়ছিল। জুমার নামাজ শুরুর আগেই সমগ্র ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের রাস্তাঘাট কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে বিশাল জুমার নামাজের ইমামতি করেন বাংলাদেশের মাওলানা মোশারফ। জুমার নামাজ আদায় করার জন্য রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে ছুটে আসেন নানা বয়সি মানুষ। দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে এসেছেন অনেকেই। তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না প্রায় ১৬০ একর জমিতে তৈরি করা বিশাল ছাউনির নিচে। বহু মুসলিস্নকে স্থানাভাবে পাকা রাস্তায়, খবরের কাগজ, হুগলা ও পলিথিন বিছিয়ে নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। ফজরের নামাজের পর বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্বে শুক্রবার বয়ানে বিশিষ্ট আলেমগণ বলেন, পরকালের চিরস্থায়ী সুখ-শান্তির জন্য আমাদের প্রত্যককে দুনিয়াতে জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের দাওয়াতের কাজে কঠিন মেহনত করতে হবে। ঈমান আমলের মেহনত ছাড়া কেউ হাশরের ময়দানে কামিয়াব হতে পারবে না। দ্বিতীয় দিনের বয়ানে যা বলা হয় বয়ানে বলা হয়, জুমা'র নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে গোসল-অজু করে মসজিদের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর থেকে তার নেকী লেখা হয়। আমরা যা করবো আলস্নাহকে রাজি করার জন্য করবো। আলস্নাহ পাকের হুকুম মতো আমরা যেন সারা জীবন চলতে পারি সে চেষ্টা করতে হবে। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে দেশে ও সারা দুনিয়ায় মানুষের মাঝে দীন কায়েম করার জন্য ছড়িয়ে পড়তে হবে। বয়ানে আরও বলা হয়, জুম্মার দিন, একটি পবিত্র দিন সপ্তাহের সেরা দিন। সবচেয়ে উত্তম দিন হলো এদিন। এটি হলো সবচেয়ে বড় ও সম্মানের দিন। এটি দু' ঈদের চেয়েও ফজিলতপূর্ণ। এদিনে হযরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়। এদিনই দুনিয়া ধ্বংস হবে। এদিনে হারাম ছাড়া আলস্নাহ্‌র কাছে যা চাইবে, আলস্নাহ তা তাকে দেবেন। জু'মার নামাজে মুসলিস্নদের ঢল ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের শুরুর দিন জুমা'র দিন হওয়ায় সকাল থেকেই গাজীপুর এবং রাজধানী ঢাকার উত্তরা ছাড়াও টঙ্গীর আশপাশের এলাকার কয়েক লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ ইজতেমায় বৃহত্তর জুমার নামাজে অংশ নিতে পায়ে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে আসতে শুরু করেন। শুক্রবার বাদ ফজর থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসলিস্নদের জিকির-আসকার ইবাদত বন্দেগীতে টঙ্গী এক পবিত্র পুণ্যভূমিতে পরিণত হয়। জু'মার নামাজকে ঘিরে ভোর থেকেই তুরাগ তীরে জন স্রোতের ঢল নামে। ইজতেমার প্রথম দিনেই ইজতেমা মাঠে অনুষ্ঠিত হয় দেশের স্মরণকালের বৃহত্তম জুমার নামাজ। ময়দান ছাড়িয়ে রাস্তায় জু'মার নামাজ আদায় জুমার নামাজ আদায় করতে রাজধানীর আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুলসংখ্যক মুসলিস্ন ছুটে আসেন। ইজতেমার মাঠ উপচিয়ে জামাত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের পাশ ঘেঁষে ইজতেমা মাঠের উত্তর দিকের রাস্তায়ও জামাত দাঁড়ায়। মূল প্যান্ডেলে জায়গা না পেয়ে অগণিত মুসলিস্নদের রাস্তায় কিংবা মহাসড়ক ও খোলা জায়গার উপর খবরের কাগজ, জায়নামাজ, পলিথিন ও হোগলা বিছিয়ে নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে। বাদ ফজর হতে মাগরিব পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ ঈমান, আমল ও দাওয়াতের মেহনত সম্পর্কে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ সারগর্ভ বয়ান করেন। বিশ্বইজতেমায় এক মুসলিস্নর মৃতু্য টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্বইজতেমায় যোগ দিয়ে বার্ধক্যজনিত রোগে বৃহস্পতিবার রাতে এক মুসলিস্নর মৃতু্য হয়েছে। নিহত কাজী আলাউদ্দিন (৬৬), সুনামগঞ্জের লক্ষ্ণীপুর চাঁনপুর এলাকার হযরত আলীর ছেলে। এ নিয়ে বিশ্বইজতেমার দ্বিতীয় দফায় যোগ দিতে গিয়ে মোট তিনজনের মৃতু্য হয়েছে। বিশ্বইজতেমা ময়দানের পুলিশ কন্ট্রোল রুমে দায়িত্বরত গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার মো. মনজুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টার দিকে আলাউদ্দিন নিজ খিত্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে স্থানীয় শহীদ আহসান উলস্নাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে