সৌদি আরব থেকে ফিরলেন ১০৯ বাংলাদেশি

প্রকাশ | ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে আরও ১০৯ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইনসের এসভি ৮০৪ উড়োজাহাজে তারা দেশে ফেরেন। এ নিয়ে এ বছরের ১৬ দিনে এক হাজার ৬১০ জন বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে তাদের জরুরি সহায়তা দেওয়া হয়। প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক সূত্র জানায়, সিলেট জেলার তালেব (৩০) মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন না। রাতেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানে তাকে হস্তান্তর করা হয়। পাঁচ বছর আগে তালেব শ্রমিক হিসেবে সৌদি আরবে যান। দুই মাস আগে সেখানে গিয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাত্র দুই মাস আগে নোয়াখালীর আজিম হোসেন সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। আজিমের ভাষ্য, পাসপোর্টে তিন মাসের ভিসা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, বাজার করতে যাওয়ার পথে পুলিশ তাকে আটক করে। পুলিশের সঙ্গে আজিমের চাকরিদাতা কফিল কথা বলেছেন। তারপরেও তাকে দেশে পাঠানো হয়েছে। মুন্সীগঞ্জের রুহুল আমিন, কুমিলস্নার ফিরোজ হোসেন ও মানিক, শরীয়তপুরের মিলন, যশোরের মোসলেম উদ্দিন, বগুড়ার মেহেদি হাসান, গাজীপুরের রাজিবসহ ১০৯ বাংলাদেশিদের বেশির ভাগই এমন অবস্থার কথা জানিয়েছেন। দেশে ফেরা কর্মীদের অভিযোগ, আকামা তৈরির জন্য চাকরিতে নিয়োগদাতা কফিলকে তারা টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু কফিল আকামা তৈরি করে দেননি। গ্রেপ্তারের পর তাদের অনেকেই কফিলের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু কফিল সেভাবে কারও দায়িত্ব নেননি। ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ২০১৯ সালে ২৫ হাজার ৭৮৯ বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। নতুন বছরের শুরুর ১৬ দিনে এক হাজার ৬১০ জন বাংলাদেশি ফিরলেন দেশটি থেকে। যারা ফিরে এসেছেন তাদের অবস্থা প্রায় একরকম। সবাই খালি হাতে ফিরেছেন। কয়েকমাস আগে গিয়েছিলেন এমন লোকও আছেন। তারা সবাই ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়। শরিফুল হাসান গত বছরের পুরো পরিসংখ্যান দিয়ে জানান, প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে সৌদি আরব থেকে ২৫ হাজার ৭৮৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ১৫ হাজার ৩৮৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ছয় হাজার ১১৭ জন, ওমান থেকে সাত হাজার ৩৬৬ জন, মালদ্বীপ থেকে দুই হাজার ৫২৫ জন, কাতার থেকে দুই হাজার ১২ জন, বাহরাইন থেকে এক হাজার ৪৪৮ জন ও কুয়েত থেকে ৪৭৯ জন শূন্যহাতে ফিরেছেন। তাদের পরিচয় ডিপোর্টি। তিনি বলেন, এই মানুষগুলোর পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। ফেরত আসা প্রবাসীদের আমরা শুধু বিমানবন্দরে সহায়তা দিয়েই দায়িত্ব শেষ করছি না। তারা যেন ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে জন্য কাউন্সেলিং, দক্ষতা, প্রশিক্ষণ ও আর্থিকভাবেও পাশে থাকতে চাই। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে কাজটি করতে হবে। পাশাপাশি এভাবে যেন কাউকে শূন্যহাতে ফিরতে না হয় সে জন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে দায়িত্ব নিতে হবে। দূতাবাস ও সরকারকেও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।