যশোরে সড়কে ঝরল দুই বোনসহ তিনজনের প্রাণ

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
তিথী তনিমা ইয়াসমিন তানজিলা ইয়াসমিন
আগামী ২৩ জানুয়ারি শফিকুল ইসলাম জ্যোতি ও ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসার বউভাতের তারিখ নির্ধারিত ছিল। কিন্তু এর আগেই মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা কেড়ে নিল পিয়াসার প্রাণ। গাড়ি চালাচ্ছিলেন পিয়াসার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি। আহত হয়েছেন তিনি। আর দুর্ঘটনায় পিয়াসার সঙ্গে প্রাণ গেছে তার বড়বোন তানজিলা ইয়াসমিন ইয়াশা ও খালাতো ভাইয়ের স্ত্রী তিথীর। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম জ্যোতি অসুস্থ অবস্থায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে শহরের বিমান অফিস মোড়ে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদু্যতিক খুঁটিতে আঘাত করে একটি দেওয়াল ভেঙে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়ে এ ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন নিহত ও শিশুসহ চারজন আহত হন। নিহতরা হলেন, যশোর শহরের লোন অফিসপাড়ার শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশা (২৫), শহরের রবীন্দ্রনাথ সড়ক (আরএন) সুমন ইসলামের স্ত্রী তানজিলা ইয়াসমিন ইয়াশা (৩০), একই এলাকার মনজুর হোসেনের স্ত্রী তিথী (৩৫)। পিয়াশা ও ইয়াশা আপন দুই বোন। আর তিথি তাদের খালাতো ভাইয়ের স্ত্রী। আহতরা হলেন, পিয়াসার বর শফিকুল ইসলাম জ্যোতি (৩২), নিহত তিথীর মেয়ে মানিজুর মাশিয়াব (৪), তাদের আত্মীয় হৃদয় (২৫) ও শাহিন (৩৫)। নিহতদের স্বজন রোহান উদ্দিন জানান, বছর খানেক আগে ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াশার সঙ্গে শফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। আগামী ২৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন বধূকে ঘরে তুলে নেওয়ার জন্য তারিখ নির্ধারিত ছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে এর প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছিল। নিহতদের স্বজন ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, শুক্রবার রাতে বর শফিকুল ইসলাম জ্যোতি নিজেই গাড়ি চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আত্মীয়দের বাড়িতে দাওয়াত দিতে বের হন। রাত ১টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে শহরের বিমান অফিসমোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাইভেটকারটি রাস্তার পাশে বৈদু্যতিক খুঁটিতে ধাক্কা দেয়। এতে প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ সাতজনই আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তবে হাসপাতালে আনার আগেই ওই তিন নারী মারা যান। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. কাজল কান্তি মলিস্নক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই তিনজনের মৃতু্য হয়েছে। নিহত তিথির স্বামী মঞ্জুর হোসেন জানান, শুক্রবার রাতে শফিকুল ইসলাম জ্যোতি প্রাইভেটকার নিয়ে তাদের বাসায় যান। শহরে ঘুরতে বের হওয়ার কথা বলে গাড়িতে তার স্ত্রী (জ্যোতি) ও সন্তানকে (মানিজুর) গাড়িতে তুলে নেন। ওই গাড়িতে জ্যোতির খালাতো দুই বোনও ছিল। তারা শহরের পালবাড়ি, আরবপুর এলাকায় আলোকসজ্জা দেখতে ও বিয়ের দাওয়াত দিতে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনাটি ঘটে। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদু্যতিক খুঁটিতে ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ওই তিন নারী নিহত হন। আহত হন শিশুসহ আরও চারজন। তিনি আরও জানান, প্রাইভেটকারটি চালাচ্ছিলেন ডা. তনিমা ইয়াসমিন পিয়াসার স্বামী শফিকুল ইসলাম জ্যোতি। তিনি পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন। দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল তা জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।