তিন দশক আগের ঘটনা

চট্টগ্রাম গণহত্যায় ৫ জনের ফাঁসি

তিন দশক আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
লালদীঘিতে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় সোমবার চট্টগ্রাম বিশেষ জজ আদালতে রায় ঘোষণার পর আসামিদের পুলিশ কারাগারে ফিরিয়ে নেয় -ফোকাস বাংলা
তিন দশক আগে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার জনসভার আগে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় পাঁচ আসামিকে মৃতু্যদন্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার বিকালে চট্টগ্রামের বিশেষ জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ মো. ইসমাইল হোসেন চার আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডিতরা হলেন- চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কোতোয়ালি অঞ্চলের তৎকালীন পেট্রোল ইনসপেক্টর জে সি মন্ডল, কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, শাহ মো. আবদুলস্নাহ ও মমতাজ উদ্দিন। প্রথম জন পলাতক আছেন। এছাড়া 'বিপজ্জনক অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আঘাত সৃষ্টির' দায়ে দন্ডবিধির ৩২৬ ধারায় পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদন্ড দিয়েছেন বিচারক। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি বন্দরনগরীর লালদীঘি ময়দানে আওয়ামী লীগের জনসভার দিন বেলা ১টার দিকে শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রাক আদালত ভবনের দিকে এগোলে নির্বিচার গুলি ছোড়া শুরু হয়। আইনজীবীরা আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকে ঘিরে মানববেষ্টনী তৈরি করে তাকে নিরাপদে আইনজীবী সমিতি ভবনে নিয়ে যাওয়ায় তিনি রক্ষা পান। ওই ঘটনায় মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, স্বপন কুমার বিশ্বাস, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন চৌধুরী, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দ মিয়া, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া, মো. কাসেম, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ ও শাহাদাত হোসেন নিহত হন। নিহতদের কারও লাশ পরিবারকে নিতে দেয়নি স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সরকার; সবাইকে বলুয়ার দীঘি শ্মশানে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলাটি পুনরুজ্জীবিত হয়। দুই দফা তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর আট পুলিশ সদস্যকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিদের মধ্যে পাঁচজন এখন জীবিত আছেন। মৃত আসামিরা হলেন- সিএমপির কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা এবং কনস্টেবল আব্দুস সালাম ও বশির উদ্দিন। মামলায় ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, শেফালী সরকার, সাংবাদিক অঞ্জন কুমার সেন ও হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, সুভাষ চন্দ্র লালা, অশোক কুমার বিশ্বাস, হাসনা বানু, মাঈনুদ্দিন, আবু সৈয়দ এবং অশোক বিশ্বাস অন্যদের মধ্যে সাক্ষ্য দেন। গত ১৪ জানুয়ারি ৫৩তম সাক্ষী আইনজীবী শম্ভুনাথ নন্দীর সাক্ষ্য দেওয়ার মধ্য দিয়ে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ওই দিন আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য ১৯ জানুয়ারি দিন ঠিক করে। রোববার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী যুক্তি উপস্থাপন শেষে পাঁচ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। পরে আদালত আসামিপক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য সোমবার দিন রেখেছিল। কিন্তু আসামিপক্ষ যুক্তি উপস্থাপন না করায় এদিনই আদালত রায় ঘোষণা করে।