দেড় মাসে দ্বিগুণ বেড়েছে মসলার দাম

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
নানা অজুহাতে একের পর এক বেড়েই চলেছে নিত্য ভোগ্যপণ্যের দাম। গত কয়েক মাস ধরে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতা থাকলেও এখন কিছুটা কমেছে এর দাম। তবে এবার দাম বাড়ার তালিকায় যোগ হলো মসলা। গত দেড় মাস ধরে দফায় দফায় দাম বেড়েছে রান্নায় অতিপ্রয়োজনীয় এ পণ্যের। খুচরায় কোনো কোনো মসলার দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। ব্যবসায়ীরা বলেন, বিশ্ববাজারে মসলার দাম বাড়ায় এর প্রভাব পড়েছে দেশের বাজারগুলোতে। এদিকে ব্যবসায়ীদের কথার সঙ্গে একমত নন ক্রেতারা। তারা বলেন, দেশের বাজারে মসলার কোনো ঘাটতি না থাকলেও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছেন মসলার। সরকারিভাবে বাজার মনিটরিং না করলে লাগামহীন হয়ে যাবে মসলার বাজার। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব চিত্র উঠে এসেছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা, মালিবাগ রেলগেট বাজার এবং খিলগাঁও বাজারে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে চার হাজার ৬শ থেকে পাঁচ হাজার ৫শ টাকায়। অথচ এক থেকে দেড় মাস আগে এলাচ বিক্রি হয়েছিল দুই হাজার ৭শ থেকে তিন হাজার টাকা কেজি দরে। এখন জয়ত্রী বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার ৫শ থেকে তিন হাজার ৬শ টাকা কেজি দরে। এর আগে জয়ত্রী বিক্রি হয়েছিল এক হাজার ৭শ থেকে এক হাজার ৮শ টাকা দরে। জায়ফল গত দেড় মাসে দ্বিগুণ বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে আটশ টাকা কেজি দরে, এর আগে তা বিক্রি হয়েছিল চারশ থেকে ৪৬০ টাকা কেজি দরে। এ সময়ের মধ্যে খোলা গুড়া মরিচের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে ১৫০ টাকা, যা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৩৩০ টাকায়। একইভাবে শুকনা মরিচ কেজিতে ১৩০ টাকা বেড়ে এটি এখন বিক্রি হচ্ছে তিনশ টাকা কেজি দরে, কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে চারশ থেকে ৪২০ টাকা। কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ধনিয়া গুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে, কেজিপ্রতি ১শ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি কালো এলাচ বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকা দরে, কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি হলুদ গুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। তবে অন্যান্য মসলা জাতীয় পণ্য যেমন- আদা, রসুন, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। খুচরা বাজারে দেশি রসুন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, ইন্ডিয়ান ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, আদা ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা, পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, চায়না পেঁয়াজ ৬০ টাকা, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। মসলার দাম বাড়া নিয়ে মিতা রানি নামে কারওয়ান বাজারের এক ক্রেতা বলেন, এক মাস ধরে কয়েক দফায় মসলার বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অথচ বাজারে কোনো মনিটরিং নেই। এখনই ব্যবস্থা না নিলে মসলার বাজারে অস্থিরতা কাটবে না। তিনি আরও বলেন, বাজারে কোনো মসলার ঘাটতি নেই, অথচ ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় দাম বাড়াচ্ছেন। তাদের এ দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি নেই। মসলা আমদানিকারক সমিতির সভাপতি এনায়েত উলস্নাহ বলেন, বিশ্ববাজারে মসলার দাম অনেক বেশি, এ কারণে দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। তাছাড়া ভারত মসলার রপ্তানিকারক দেশ হলেও বৃষ্টি বা বন্যায় তাদের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারা নিজেরাই মসলা এখন আমদানি করছে। রমজানের আগে ভারত মসলা উৎপন্ন করবে। বাজারে ভালো মতো এলে তবেই মসলার দাম অনেক কমে আসবে।