ঝুঁকিতে খনি, জনগণ ও পরিবেশ

মধ্যপাড়া পাথরখনি যাচ্ছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হাতে

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) সংবাদদাতা
দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথরখনিটির বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুঞ্জন উঠেছে, বিনা দরপত্রে পাথর উত্তোলনের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লা উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা বিতর্কিত চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসিকে। চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইতঃপুর্বে পাথর উত্তোলন করার কোনো অভিজ্ঞতা না থাকায়, ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে খনি, খনি এলাকার পরিবেশ ও জনগণের। সেই সঙ্গে চাকরি হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে খনিতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের। তবে খনি কর্তৃপক্ষ বলছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সাময়িক দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খনি থেকে কয়লা ও পাথর উত্তোলন সম্পূর্ণ বিপরীত। দুটি কাজের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। খনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কয়লা নরম বস্তু যা কেটে কেটে তুলতে হয়। অপরদিকে পাথর কঠিন বস্তু হওয়ায় ড্রিলিং ও বস্নাস্টিংয়ের মাধ্যমে উত্তোলন করতে হয়। এই জন্য কোনো অনভিজ্ঞ কোম্পানিকে পাথর উত্তোলন করতে দেওয়ায় খনিটি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। খনি সূত্রে জানা গেছে, মধ্যপাড়া পাথর খনিতে বর্তমানে পাথর উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা বেলারুশভিত্তিক জার্মানিয়া টেস্ট কনসোডিয়াম (জিটিসি) সঙ্গে মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লি. গত ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৬ বছরের জন্য পাথর উত্তোলন ও রক্ষণাবেক্ষণের চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী ২০১৪ সালের ফেব্রম্নয়ারি মাস থেকে পাথর উত্তোলন শুরু করে জিটিসি। কিন্তু বিদেশ থেকে মেশিন আমদানি করা ও বিভিন্ন সময় যান্ত্রিক ত্রম্নটির কারণে প্রায় ৪৭ মাস পাথর উত্তোলন করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। জিটিসির মহাব্যবস্থাপক জাবেদ সিদ্দিকি যায়যায়দিনকে বলেন, চুক্তি অনুযায়ী ৬ বছর খনিতে কাজ করার কথা। কিন্তু মধ্যপাড়া খনি কর্তৃপক্ষ নানা প্রকার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায়, তারা ৪৭ মাস পাথর উত্তোলন করতে পারেনি। এই ৪৭ মাস সময় বৃদ্ধির জন্য জিটিসি আবেদন করলেও খনি কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি। এই জন্য তারা আরবিট্রেশন আদালতে মামলা করেছেন। মধ্যপাড়া খনি সূত্রে জানা গেছে, খনিটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জিটিসির চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে এলেও এখন পর্যন্ত নতুন কোনো দরপত্র আহ্বান করেননি খনিকর্তৃপক্ষ। অথচ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর পূর্বেই নতুন দরপত্র আহ্বান করার নিয়ম রয়েছে। মধ্যপাড়া গ্রানাইড মাইনিং কোম্পানি লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম কামরুজ্জামান যায়যায়দিনকে বলেন, নতুন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক সময়ের জন্য বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কর্মরত এক্সএমসিকে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে, তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।