কোটা আন্দোলনের নেতা রাশেদসহ ৩১ ছাত্রের জামিন

প্রকাশ | ২১ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
কোটা আন্দোলনের নেতা রাশেদ খান সোমবার ঢাকার সিএমএম আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর তার মা সালেহা বেগমসহ স্বজনেরা উচ্ছ¡াস প্রকাশ করেন Ñযাযাদি
সালেহা বেগম তার ছেলের বউ রাবেয়া খাতুনকে জড়িয়ে ধরে নিবার্ক রইলেন। তখন দুইজনের চোখ দিয়ে নোনা জল গড়িয়ে পড়ছিল। সালেহা দুইহাত ওপরে তুলে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বললেন, ‘আমার বাবা জামিন পেয়েছে...। এবার বাবাকে নিয়েই বাড়ি ফিরব।’ সালেহা বেগম কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানের মা। ছেলের গ্রেপ্তার হওয়ার পর ঝিনাইদহ থেকে ঢাকায় আসেন। এর মধ্যে এক দিনের জন্যও বাড়ি যাননি। রাশেদের মতো কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তার হওয়া আরও ১৮ জন ছাত্র সোমবার জামিন পেয়েছেন। অন্যদিকে, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তার হওয়া আরও ১২ ছাত্রের জামিন দিয়েছে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। এর আগে রোববার ঢাকার আদালত থেকে জামিন পান আরও ৩২ জন ছাত্রসহ ৩৯ জন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের এসব মামলা হয়েছিল রাজধানীর শাহবাগ ও রমনা থানায়। রাশেদের মায়ের মতো গতকাল সকালে আদালতে যান কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা মশিউর রহমানের বাবা শফিকুল ইসলাম। পেশায় তিনি একজন রিকশাচালক। ছেলে গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে এক মাস হলো বাড়ি ফেরেননি। বড় ছেলের কাছেই থেকেছেন। দুপুর ১২টার দিকে একবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতাদের মামলার শুনানি হয়। তখন আদালত আইনজীবীকে বলে, উচ্চ আদালতে যেহেতু জামিনের জন্য আবেদন করা হয়েছে, সে কারণে তিনি শুনানি নিতে পারেন না। উচ্চ আদালত থেকে ওই আবেদন প্রত্যাহার করা হলে তিনি জামিন শুনানি গ্রহণ করতে পারবেন। যখন রাশেদদের আইনজীবী আদালতের কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন, জানতে পারেন জামিন হয়নি তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন রাশেদের মা সালেহা বেগম। রাশেদের মায়ের মতো কোটা সংস্কার আন্দোলনের আরেক নেতা তারিকুলের বাবা শফিকুল ইসলামও কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি তখন বলেন, ‘আমার ছেলের মাকে এখন কী জানাব। সে খুব অসুস্থ। আমি বলে এসেছি, আজ তোমার ছেলের জামিন হবে।’ আর মশিউরের বাবা রিকশাচালক মজিবর মশিউরের মাকে ফোন করেন। বলেন, ‘তাসলিমা তোমার ছেলের জামিন হয়নি।...কেঁদে কোনো লাভ নেই।’ তবে এই দৃশ্যপট বিকাল ৪টার দিকে বদলে যায়। কারণ, এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে রাশেদদের আইনজীবী জ্যোতিমর্য় বড়ুয়া আদালতকে জানান, উচ্চ আদালতে করা জামিনের সেই আবেদন প্রত্যাহার করে এনেছেন। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা সবাই ছাত্র। এক মাসের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন তারা। আদালত শুনানি নিয়ে রাশেদদের জামিন দেন ঢাকার মহানগর হাকিম শরাফুজ্জামান আনসারী। জামিনের সংবাদ পাওয়ার পর রাশেদের মা সালেহা, সোহেলের মা জমিনা বেগম আনন্দে কঁাদতে থাকেন আদালতে। অন্য ছাত্রদের জামিন দিয়েছেন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরোসহ অন্য মহানগর হাকিমরা।