করোনা ছড়িয়ে পড়েছে চীনের দুই জেলখানায়

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দুদিন কমার পর চীনে আবার বেড়ে গেছে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা, সব মিলিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৪৭ জনে। প্রাণঘাতী এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে চীনের দুটি জেলখানায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় চাকরি গেছে কারা কর্মকর্তাদের। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার প্রথমবারের মতো চীনে এক দিনে দুই হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন ধরে নিয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া কয়েক জনের মধ্যে নতুন করে ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ায় সতর্ক করেছেন একজন চীনা বিশেষজ্ঞ। এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন কোরোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শ ছাড়িয়ে যাওয়ায় দুটি শহরকে 'স্পেশাল কেয়ার জোন' হিসেবে ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার দেশটির মূল ভূখন্ডে ৮৮৯ জনের শরীরে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ৩৯৪ জন। সব মিলিয়ে চীনে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৫ হাজার ৪৬৫ জনে। আর অন্তত ২৬টি দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৬ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। সোমবার চীনে মোট ১১৮ জনের মৃতু্য হয়েছে নতুন এ করোনাভাইরাসে, এর মধ্যে হুবেই প্রদেশেই মারা গেছেন ১১৫ জন। তাতে চীনের মূল ভূখন্ডে নতুন করোনাভাইরাসে মৃতু্যর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২২৩৬ জনে। চীনের মূল ভূখন্ডের বাইরে এ পর্যন্ত ১১ জনের মৃতু্য হয়েছে এ ভাইরাসে। তাদের মধ্যে জাপানে তিনজন, হংকং ও ইরানে দুজন করে এবং ফিলিপিন্স, ফ্রান্স, তাইওয়ান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় একজন করে আক্রান্তের মৃতু্য হয়েছে। মধ্য চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়। নিউমোনিয়ার মতো লক্ষণ নিয়ে নতুন এ রোগ ছড়াতে দেখে চীনা কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃতু্য হয়। ঠিক কীভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়েছিল- সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা। তবে ধারণা করা হচ্ছে, উহানের একটি সি ফুড মার্কেটে কোনো প্রাণী থেকে এ ভাইরাস প্রথম মানুষের দেহে আসে। তারপর মানুষ থেকে ছড়াতে থাকে মানুষে। সার্স ও মার্স পরিবারের সদস্য নতুন এ করোনাভাইরাসের নাম দেওয়া হয়েছে নভেল করোনাভাইরাস। আর এর সংক্রমণে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে, তাকে বলা হচ্ছে কভিড-১৯। আক্রান্ত রোগীদের লালা ও শ্লেষ্মা পরীক্ষা করে চীনা বিজ্ঞানীরা এখন বলছেন, নভেল করোনাভাইরাস যেভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে সার্সের চেয়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার সঙ্গেই এর মিল পাওয়া যাচ্ছে বেশি। আগে যেমনটা ভাবা হয়েছিল, তার চেয়েও সহজে এবং দ্রম্নত গতিতে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এপ্রিলের শেষভাগে নতুন করোনাভাইরাসের প্রতিষেধকের পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করছে চীন। দেশটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী শু নানপিং শুক্রবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই ঘোষণা দেন।