পাপিয়ার কললিস্টে ১১ মন্ত্রী ও ৩৩ জন এমপি

প্রকাশ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
শামিমা নূর পাপিয়া
বহুল আলোচিত নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়াকে গত শনিবারর্ যাব বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে। সোমবার তাকে আদালতে তোলা হলে তার ১৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের পর পাপিয়ার মোবাইল ফোনগুলো জব্দ করেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। এই মোবাইল ফোনগুলোতে পাপিয়ার অনেক ভিআইপির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের তথ্য পেয়েছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পাপিয়ার মোবাইলে ১১ মন্ত্রীর মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে। এই মোবাইল নম্বরে পাপিয়া গ্রেপ্তার হওয়ার আগের দিন পর্যন্ত বিভিন্ন প্রভাবশালী মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এছাড়া পাপিয়ার মোবাইলে ৩৩ এমপির তালিকা পাওয়া গেছে। এই ৩৩ এমপির সঙ্গে পাপিয়া নিয়মিত যোগাযোগ করতেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, শনিবার যখন তাকে বিমানবন্দরে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা র্(যাব) আটক করে তখনো পাপিয়া তাদের হুমকিধমকি দিয়েছিলেন, তাদের দেখে নেওয়ার জন্যও শাসিয়েছিলেন। তাদের এটাও বলেছিলেন, 'আমি কে তোরা জানিস?' সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে,র্ যাবের অমনমনীয় দৃঢ়তার মুখে শেষ পর্যন্ত পাপিয়া নমনীয় হন এবং তারপর তিনি তার অপরাধগুলো স্বীকার করতে থাকেন। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বলছে, এই কল লিস্ট মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে আনা হয়েছে। এই ১৫ দিনের রিমান্ডে যাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ, যাদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতেন, তাদের ব্যাপারে তথ্য বের করবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষ থেকে অপকর্ম শুরু পাপিয়ার : গত ২২ ফেব্রম্নয়ারি পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী, সাব্বির আহমেদ ও শেখ তায়ি্যবাকে অর্থপাচার ও জাল মুদ্রা রাখার অভিযোগে আটক করের্ যাব। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি মদ, পিস্তল, গুলি ও প্রায় ৬০ লাখ টাকা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর থানায় আলাদা তিনটি মামলা হয়। বিমানবন্দর থানার মামলায় পাপিয়াসহ চারজনকে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। ২০০৬ সালে নরসিংদী কলেজে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষে পড়ার সময় মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর সঙ্গে পাপিয়ার পরিচয় হয়। এরপর সেই সম্পর্ক প্রেমে রূপ নেয়। তখন থেকেই পাপিয়া অপকর্ম শুরু করে। এর তিন বছর পর ২০০৯ সালে তারা বিয়ে করেন। ২০১০ সালে বিবাহিত অবস্থায় নরসিংদী পৌর ছাত্রলীগের পদ পান। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়া তাদের। গড়ে তোলেন নিজস্ব ক্যাডারবাহিনী 'কিউ অ্যান্ড সি'। এই ক্যাডার বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের হাতে ও পিঠে ট্যাটু আঁকা আছে। বিয়ের সময় তেমন কিছু না থাকলেও গত ১০ বছরের ব্যবধানে গড়েছেন অঢেল সম্পদ। যার বেশির ভাগই ২০১৮ ও ২০১৯ সালে অবৈধভাবে অর্জন করেছেন।